নবমীতে যান চলাচল অব্যাহতই থাকল ভিআইপি রোডে। ফাইল চিত্র।
গতি কিছুটা ধীর হলেও, নবমীতে যান চলাচল অব্যাহতই থাকল ভিআইপি রোডে। দিন যত গড়িয়েছে, রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো দেখতে শেষবেলায় ভিড় বেড়েছে। যার জেরে রাতের দিকে ভিআইপি রোডের উপর কিছুটা চাপ পড়লেও যান চলাচল সচলই থেকেছে। যা দেখে অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া বার্তাতেই আসলে ‘কাজ’ হয়েছে। কারণ, পুজোর বাকি দিনগুলিতেও মোটের উপর মসৃণই ছিল যান চলাচল। পুজোর সময় ভিআইপি রোডে যা ‘বিরল’।
পুজোর দিন যত এগিয়েছে, ততই ভিড় বেড়েছে শ্রীভূমির ‘ভ্যাটিকান সিটি’-তে। ভিড়ের নিরিখে নবমীর সন্ধ্যা টেক্কা দিয়েছে অষ্টমীকে। সুজিতের পুজোয় ভিড় বাড়তেই চাপ বেড়েছে ভিআইপি রোডের উপর। যানজট তৈরি হয়েছে উল্টোডাঙা থেকে দক্ষিণদাঁড়ি পর্যন্ত। এই রাস্তায় অনেক ক্ষণ ছাড়া ছাড়া সিগন্যাল দেওয়া হচ্ছে। ট্র্যাফিক পুলিশ জানাচ্ছে, গোলাঘাটা থেকে বাঙুর পর্যন্ত কোনও গাড়িকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। গাড়ি ধরতে দর্শনার্থীরা গোলঘাটার কাছে ভিড় করছেন। ফলে ওই এলাকায় কিছুটা যানজট তৈরি হয়েছে। বাকি রাস্তায় ধীর গতিতে চলছে গাড়ি।
এ বছর শ্রীভূমির পুজো উদ্বোধনে গিয়ে সুজিতকে রাস্তা বন্ধ না-করার ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, ‘‘বিমান ধরতে লোকে রাস্তায় বেরোতে পারল না এমন যেন না হয়। সাধারণ মানুষ যাতে সব ক’টি পুজো দেখতে পান সেই ব্যবস্থা করতে হবে। ও যদি রাস্তা বন্ধ করে, পুলিশ আমাকে জানাবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এই বার্তা নজরে রেখে এ বছর ভিআইপি রোডে যান চলাচলের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল পুলিশের তরফে। রাস্তা যাতে অবরুদ্ধ না হয়, তার জন্য লেকটাউন এলাকায় পঞ্চমী থেকে নেওয়া হয় বিশেষ ব্যবস্থা। মণ্ডপ-দর্শনার্থীদের প্রবেশের জন্য অনেক দূর থেকেই পথ নির্দিষ্ট করে দেয় পুলিশ। যান চলাচলের রাস্তায় ভিড় যাতে উপচে না-পড়ে তার জন্য আলাদা রাস্তা করা হয়। ফলে যে কোনও জায়গা দিয়ে দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করতে পারছেন না। মণ্ডপ সংলগ্ন মূল রাস্তা বরাবর উঁচু টিনের দেওয়াল তুলে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ফলে পুলিশের নির্দিষ্ট করা পথ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই এলাকা সচল রাখতে উল্টোডাঙা থেকে বাগুইআটি পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গোলাঘাটা থেকে দক্ষিণ দমদম পর্যন্ত মাঝখানের দু’টি যাত্রী প্রতীক্ষালয়। এই পুরো ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ভিড়ের সঙ্গে যানবাহন চলাচলকে। অর্থাৎ, দর্শনার্থীদের ভিড় এক পাশে, আর অন্য পাশের রাস্তা দিয়ে চলছে যানবাহন।
কলকাতা উত্তর ও দক্ষিণের পুজোর প্রতি বছরই ভিড় হয়। তবে যানজটের কারণে কখনওই রাস্তাঘাট পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়ে যেতে দেখা যায় না সেই ভাবে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে পুজোর সময় ভিআইপি রোডে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। রাস্তায় বাস-অটোর মতো গণপরিবহণের দেখা নেই। সার্ভিস রোড বন্ধ। বাস-অটো না পেয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে গিয়ে নাস্তানাবুদ মানুষজন। দুর্গাপুজোর সঙ্গে ভোগান্তির প্রতি বছরের এই চিত্র যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছিল ভিআইপি রোড এবং তার সঙ্গে সংযোগকারী লেক টাউন, বাঙুরের একাধিক রাস্তায়। চলতি বছরে ভিআইপির ট্র্যাফিকের হাল দেখার পর অনেকেই মনে করছেন, পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেকটাই স্বাভাবিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy