বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ জিতু কামাল। ছবি সৌজন্য: ফেসবুক।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বাহিনীকে বার বার সতর্ক করছেন। সচেতন করার চেষ্টা করছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তা বা গাফিলতির অভিযোগ কোনও মতেই বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মার সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না।
ফের তার প্রমাণ মিলল বৃহস্পতিবার রাতে। এ বার রাতের কলকাতায় নিগৃহীত হওয়ার পর পুলিশি সাহায্য মেলেনি বলে সরব হলেন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ জিতু কামাল। ফেসবুক লাইভ করে এ নিয়ে জিতু পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁর অভিযোগ, রাতের কলকাতায় চলাফেরা করার মতো পরিস্থিতি আর নেই। প্রশ্ন তুলেছেন, কাজ সেরে যাঁরা রাতে ফেরেন, তাঁদের নিরাপত্তা কে দেবে?
জিতুর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা নাগাদ শুটিংয়ের কাজ সেরে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। পাটুলির ঝিলের রাস্তা ধরে বাইপাসের দিকে এগোচ্ছিল তাঁর গাড়ি। সেই সময় তাঁর গাড়িতে ধাক্কা মেরে এগিয়ে যায় আর একটি গাড়ি। এর পর জিতু ওই গাড়ির পিছনে ধাওয়া করেন। কিছুটা এগিয়ে আগের গাড়িটি দাঁড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয় বলে জানান জিতু। শুক্রবার তিনি বলেন, “আমি ওঁদের স্যর সম্বোধন করেই কথা বলছিলাম। কিন্তু ধাক্কার মারার জন্য ক্ষমা চাওয়া তো দূর অস্ত্, ভুল স্বীকার করতেও রাজি হননি। উল্টে অকথ্য গালিগালাজ করে গাড়িক দুই আরোহী। আমাকে বলা হয়, ‘চল ফোট্ এখান থেকে। যা করার করে নিবি।’ আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, ওরা মত্ত অবস্থায় ছিল। গাড়ি থেকে নামলে, হয়তো আমাকে মেরেও ফেলতে পারত। গাড়ির পিছনের সিট থেকে কিছু একটা বার করার চেষ্টাও করেন ওঁরা।”
গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে লালবাজারে পুলিশকে ফোন করেছিলেন জিতু। তাঁর দাবি, সেখান থেকে প্রথমে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়। সেখানে ফোন করলে ওই থানার পুলিশ কর্মীরা জানান, ওটা তাদের এলাকা নয়। পাটুলি থানায় যেতে বলা হয়। পাটুলিতে ফোন করলে বলা হয়, ওই এলাকা পঞ্চসায়র থানায় পড়ে। জিতু এ দিন বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি বাইপাসের কাছে যে আবাসনে গাড়ি নিয়ে ঢোকেন, সেটার কথাও পুলিশকে জানাই। এ থানা, ও থানায় ফোন করতে গিয়ে তত ক্ষণে প্রায় ৪৫ মিনিট কেটে গিয়েছে। অবশেষে পঞ্চসায়র থানার পুলিশ ওই আবাসনের সামনে আসে।’’
শুক্রবার থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন জিতু।
জিতু জানিয়েছেন, পুলিশ এসে তাঁকে বলে, ওই আবাসনে নিরাপত্তারক্ষী আছে, তাই তারা ঢুকতে পারবে না। জিতুকে ওই সময় বাড়ি চলে যেতে বলা হয়। পরামর্শ দেওয়া হয়, শুক্রবার থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে। এর পরেই শহরের নিরাপত্তা নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দেন জিতু। সেখানে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘দিনের পর দিন রাতের রাজপথ যদি এতটাই অসুরক্ষিত হতে থাকে, পুলিশ যদি অভিযোগ নিতে না চায়, তবে তো সবাইকে কাজকর্ম শিকেয় তুলে সন্ধে হলেই ঘরে ঢুকে পড়তে হবে!’’ ফেসবুকে নিজের ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ছবি পোস্ট করেন জীতু। সঙ্গে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন, যেখানে অভিযুক্তদের পাশাপাশি ওই গাড়িটিকেও দেখা যাচ্ছে।
জিতুর দাবি, এ দিন সকালে তাঁকে পঞ্চসায়র থানা থেকে ফোন করে বলা হয়, তারা এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জিতুর দেওয়া ছবি-ভিডিয়ো দেখে ওই গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে। তবে, যাঁরা এই ঘটনায় জড়িত, তাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পঞ্চসায়র থানায় যোগাযোগ করা হলে এ দিন বলা হয়, তারা স্বতপ্রণোদিত হয়ে এ বিষয়ে একটি মামলা রুজু করেছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (পূর্ব) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘অভিযোগ করা সহজ। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। ওই অভিনেতার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই স্বতপ্রণোদিত ভাবে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy