অবহেলা: জোড়াবাগান থানা এলাকায় ভগ্নপ্রায় বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে পরিত্যক্ত গাড়ি। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
ডেঙ্গি দমনে এ বার কলকাতার গোটা চল্লিশেক থানা এবং পুলিশ-ফাঁড়ির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা পুর প্রশাসন। পুলিশের এক অতিরিক্ত কমিশনারকে চিঠি দিয়ে পুরসভা জানিয়েছে, ওই সমস্ত থানা ও ফাঁড়ির সামনে জঞ্জাল জমে থাকে। তা ছাড়া, পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা গাড়িতে অনেক সময়েই জমে থাকে জল। এই জঞ্জাল ও জলে ডেঙ্গির মশারা বংশবিস্তার করছে। এমন চলতে থাকলে পরিস্থিতি যে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে, তা-ও জানানো হয়েছে।
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ বার বৃষ্টি দেরিতে শুরু হলেও এখন যে ভাবে তা চলছে, তাতে ডেঙ্গির মশার প্রজননের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই শহরের ২৮টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে বেহালায় প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডও। ডেঙ্গি মোকাবিলায় সেখানে পুরসভাকে ১৪টি র্যাপিড অ্যাকশন টিম নামাতে হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর প্রতি সপ্তাহেই শহরের কোথায় কোথায় মশার আঁতুড়ঘর গড়ে উঠেছে, তা নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। তাতেই ধরা পড়েছে, বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে মশা দমনের কাজ হচ্ছে না। সেই সব সংস্থার প্রতিনিধিদের পুর ভবনে ডেকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। সেই সমীক্ষায় আরও জানা গিয়েছে, থানা ও ফাঁড়ি মিলিয়ে শহরের ৪২টি জায়গায় মশার বংশবিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ওই তালিকায় রয়েছে কাশীপুর, শ্যামপুকুর, জোড়াবাগান, উল্টোডাঙা, নারকেলডাঙা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, এন্টালি, বেনিয়াপুকুর, পার্ক স্ট্রিট, কড়েয়া, গরফা, নিউ আলিপুর, তারাতলা, বাঁশদ্রোণী, টালিগঞ্জ ও তপসিয়ার মতো থানাও। রয়েছে আলিপুর বডিগার্ড লাইন্সও। থানার পাশাপাশি পুলিশ আবাসন, পুলিশ ব্যারাক, পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা গাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল জমে রয়েছে। পুরসভার অভিযোগ, পুলিশের বাজেয়াপ্ত করা গাড়িতে জল জমে থাকার কারণেই বছরখানেক আগে টালিগঞ্জ ও বেলেঘাটা থানা এলাকায় বেশ কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য এ বার পুলিশকে চিঠি দিয়ে আগেই সতর্ক করতে চান পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। তিনি জানান, যেখানেই মশার আঁতুড়ঘরের মতো পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, সেখানেই লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে।
বেকবাগান থানা চত্বরে আটক গাড়ির সামনে স্তূপীকৃত শোলায় জমেছে জল। নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্দেশ অনুযায়ী, ডেঙ্গি প্রতিরোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। একা পুরসভার পক্ষে তা সম্ভব নয়। তাই যে সব সংস্থায় মশার বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা প্রবল, তাদের সজাগ করার কাজ চলছে। পুর কমিশনারের দেওয়া চিঠিতে পুলিশকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন থানা ও পুলিশ আবাসনের দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন, অবিলম্বে তাঁদের ওই সমস্ত এলাকা পরিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হোক। সেই কাজ তাঁরা করতে না পারলে পুরসভাকে জানান। পুরকর্মীরা তা করে দেবেন। এর জন্য যা খরচ হবে, তা বহন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দফতরকে। অন্যথায় পুরসভাকে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুর আইনের ৪৯৬এ ধারায় নোটিস দিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy