Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অযত্নে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সবুজে ঘেরা বনাঞ্চল

স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ মানছেন, জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু কেন এত দিন সেটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে, তার উত্তর নেই কারও কাছে। যদিও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমরা আর্বান ফরেস্ট্রি (শহরে সবুজায়ন)-র উপরে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে শহর ঘেঁষা এমন একটি জায়গায় নিশ্চয় সৌন্দর্যায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির সঙ্গে কথা বলব।’

অবহেলায়: ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে বরাহনগর-কামারহাটি যৌথ জলপ্রকল্পের একাংশ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

অবহেলায়: ঝোপজঙ্গলে ভরে গিয়েছে বরাহনগর-কামারহাটি যৌথ জলপ্রকল্পের একাংশ। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০৫:০২
Share: Save:

শহরে সবুজ বাড়ানোর উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই শহর লাগোয়া এলাকায় কংক্রিটের জঙ্গলের মাঝেই কয়েক একর জায়গা জুড়ে রয়েছে জলাশয় ও বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি। অথচ, স্রেফ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই সবুজ পরিবেশ ও জীববৈচিত্র ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষ মানছেন, জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু কেন এত দিন সেটি অবহেলায় পড়ে রয়েছে, তার উত্তর নেই কারও কাছে। যদিও রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আমরা আর্বান ফরেস্ট্রি (শহরে সবুজায়ন)-র উপরে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে শহর ঘেঁষা এমন একটি জায়গায় নিশ্চয় সৌন্দর্যায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলির সঙ্গে কথা বলব।’’

দক্ষিণেশ্বরের আর এন টেগোর রোডের ধারে, বরাহনগর-কামারহাটি যৌথ জলপ্রকল্প ঘিরে রয়েছে ওই বনাঞ্চল। মোট জমির পরিমাণ ৩০ একর। যার মধ্যে একটি বড় ও একটি ছোট মিলিয়ে ২৫ একর জলাশয়। বাকি পাঁচ একরের মধ্যে রয়েছে জল শোধন কেন্দ্র, অফিস ও পিকনিকের জায়গা। আর গোটা জায়গা ঘিরে রয়েছে ৩৫ রকম প্রজাতির প্রায় দু’শো গাছ। সেখানকার কর্মীরা জানালেন, কয়েক বছর আগে জীববিজ্ঞানী রতনলাল ব্রহ্মচারী জায়গাটি পরিদর্শন করে জানিয়েছিলেন, সেখানে জীববৈচিত্রে ভরা রয়েছে।

কর্মীরা জানাচ্ছেন, শীতে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখি জলাশয়ে ভিড় করে। আম, বট, ছাতিম, নারকেল, রাধাচূড়া, কাঠবাদাম, সেগুন, আকাশমণি-সহ বিভিন্ন গাছে ঘেরা ওই বনাঞ্চলে সারা বছর দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও পোকামাকড়ের। রয়েছে বিষধর সাপ ও বিভিন্ন রকমের মাছ। ওই জলপ্রকল্পেই চড়াই সংরক্ষণের জন্য বানিয়ে দেওয়া হয়েছে কাঠের খুপরি ঘরও। বরাহনগর-কামারহাটি যৌথ জলপ্রকল্পের সভাপতি অঞ্জন পাল বলেন, ‘‘আমরা যতটা সম্ভব রক্ষণাবেক্ষণ করি। কিন্তু সেটা যথেষ্ট নয়। জায়গাটি পরিকল্পনামাফিক সাজালে দক্ষিণেশ্বর ও আদ্যাপীঠকে ঘিরে ভাল পর্যটনের জায়গা তৈরি হবে।’’

সম্প্রতি গিয়ে দেখা গেল, জলপ্রকল্পের পিছন থেকে শুরু হওয়া গোটা জায়গাটি ঝোপ-জঙ্গলে ভরা। জলাশয়ে মাথা তুলে রয়েছে কাঠের নৌকার খানিকটা। পাড় ধরে হাঁটার ও বসার বাঁধানো জায়গাগুলি আগাছায় ঢেকেছে। দু’টি জলাশয় যেখানে মিলেছে, সেখানে একটি কাঠের সাঁকো থাকলেও ঝোপে ঢাকা পড়ায় সেটি খুঁজে পাওয়া দায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, শীতে পিকনিকের সময়ে সমস্যা বাড়ে। চার দিকে অবর্জনা ফেলা হয়। মাইক-বক্সের শব্দে পরিযায়ী পাখিরাও উড়ে যায়।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন কামারহাটির পুর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা। তিনি জানান, মাঝেমধ্যেই জলাশয়গুলি কচুরিপানায় ভরে যায়। সেগুলি এবং ঝোপজঙ্গল সাফ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় পুরসভাকে। গোপালবাবুর কথায়, ‘‘জায়গাটি সাজিয়ে পর্যটনের জায়গা হিসেবে ব্যবহার করলে কিছু আয় হবে। তাতে আরও ভাল ভাবে জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব। বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানাব।’’ একই মত বরাহনগরের চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকেরও।

অন্য বিষয়গুলি:

Barahanagar Greenery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy