Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Theft

বনেটে কী? দেখতে গেলেই উধাও হচ্ছে ব্যাগ-ফোন

তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জোগাড় করে।

—প্রতীকী ছবি

—প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০১:৫৮
Share: Save:

ট্র্যাফিক সিগন্যাল বা পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে আছে গাড়ি। হঠাৎ কানে যেতে পারে, কেউ হিন্দিতে বলছেন, ‘‘দাদা, গাড়ির মোবিল লিক করছে, দেখুন!’’ বনেটে লাগানো তৈলাক্ত পদার্থের দিকে নজর গেলেই বিপদ। কী হয়েছে দেখতে নামলে চোখের নিমেষে লুট হয়ে যেতে পারে গাড়ির ভিতরে রাখা ব্যাগ বা মোবাইল ফোন!

গত ২৪ ডিসেম্বর দুপুরে এমনই একটি লুটের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কলকাতা পুলিশের কাছে। এক ব্যক্তি অভিযোগে জানান, তাঁর গাড়িচালক মহম্মদ করিম গাড়ি নিয়ে মধ্য কলকাতার একটি সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎই এক যুবক তাঁকে বলেন, ‘‘গাড়ি থেকে মোবিল লিক করছে।’’ চালক গাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন, বনেটের উপরে এক ধরনের তৈলাক্ত পদার্থ লেগে রয়েছে। কিন্তু মোবিল লিক করার কোনও ব্যাপার নেই। এর পরে গাড়িতে ফিরে এসে চালকের নজর পড়ে, সামনের সিটে রাখা ধূসর রঙের ব্যাগটি উধাও।

অভিযোগকারীর দাবি, ওই ব্যাগেই ছিল চার লক্ষ টাকা দামের একটি হিরের নেকলেস সেট। এ ছাড়াও ছিল নগদ ৩৭৫ টাকা এবং কিছু জরুরি নথি।

তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জোগাড় করে। ফুটেজে দেখা যায়, তিন যুবক গাড়ি থেকে কিছু একটা নিয়ে পালাচ্ছে। তবে পুলিশের খাতায় তাদের সম্পর্কে কোনও পুরনো রেকর্ড পাওয়া যায়নি। এর পরে ওই যুবকদের ছবি দিয়ে সূত্র মারফত খোঁজখবর শুরু করেন তদন্তকারীরা। বর্ষবরণের রাতে ওই তিন যুবকের মধ্যে এক জনকে দেখা যায় কালীঘাট চত্বরে। দু’দিন গোপনে নজরদারি চালিয়ে তাকে আটক করেন কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার আধিকারিকেরা। তাকে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদের পরে আরও দু’জনকে আটক করে পুলিশ।

লালবাজার জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে দু’জন দক্ষিণ দিল্লির অম্বেডকর নগর থানার বাসিন্দা। নাম আকাশ এবং সাহিল। আকাশের বয়স চব্বিশ এবং সাহিলের আঠারো। অন্য জন উত্তর দিল্লির ইন্দ্রপুরী থানা এলাকার বাসিন্দা, বছর পঁয়ত্রিশের মারিয়াপ্পা। ধৃতদের জেরা করে ধূসর রঙের ব্যাগটি উদ্ধার হয়। তাতেই ছিল চুরি যাওয়া হিরের নেকলেসটি। জেরায় জানা যায়, ধৃতেরা একটি আন্তঃরাজ্য কেপমার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের সিগন্যালে বা পার্কিংয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িকেই নিশানা করে তারা। আকাশ গাড়ির কোনও একটি অংশে তৈলাক্ত পদার্থ লাগিয়ে দেওয়ার কাজ করে। মারিয়াপ্পা চালককে ডেকে বলে, গাড়ি থেকে মোবিল লিক করছে। চালক তড়িঘড়ি নেমে বিষয়টি দেখতে গেলেই গাড়িতে থাকা ফোন বা ব্যাগ তুলে নেয় বছর আঠারোর সাহিল।

ধৃতদের বুধবার আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী জানান, এই চক্রের সঙ্গে আর কারা জড়িত, সে বিষয়ে খোঁজ পেতে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সওয়াল-জবাব শেষে ধৃতদের আগামী রবিবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

অন্য বিষয়গুলি:

Theft car driver Mobile Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy