প্রতিবাদ: রেলনাইনের দু’পাশে লাগানো রেলিং ভেঙে ফেলা হচ্ছে। রবিবার, ঢাকুরিয়ায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
রেললাইন পারাপার করার রাস্তা রেলিং দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রেল কর্তৃপক্ষ। অবরোধ করা হল ট্রেনও। রবিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার জেরে আটকে পড়ে একাধিক ট্রেন। ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় যাত্রীদের। শেষ পর্যন্ত ঢাকুরিয়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপে রাতে সেই রেলিং ভেঙে ফেলতেও হয় রেল কর্তৃপক্ষকে।
ঢাকুরিয়া এলাকার রেললাইনের এক দিকে পঞ্চাননতলা, অন্য দিকে রয়েছে আশুতোষ চ্যাটার্জি রোড বা চ্যাটার্জিপাড়া। দুই দিকের স্থানীয় বাসিন্দাদের একটা বড় অংশই রেললাইন পারাপার করেন হেঁটে। রেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বালিগঞ্জ থেকে বজবজগামী ওই ব্যস্ত রেললাইন এমন ভাবে পারাপার করা যেমন এক দিকে স্থানীয় মানুষদের পক্ষে বিপজ্জনক, তেমনই লাইনের উপর দিয়ে মানুষ পারাপার করার জন্য ট্রেন চলাচলও বিলম্বিত হয়। তাই ওই অংশের দুই দিকেই লোহার রেলিং দিয়ে ঘিরে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই মতো শনিবার সকালের মধ্যে রেলিং লাগিয়ে দেওয়া হয়।
এ দিকে, রেলিং দিয়ে রাস্তা বন্ধ করতে দেখেই এলাকার বাসিন্দারা আপত্তি তোলেন। রবিবার বিকেল থেকে শুরু হয় রেল অবরোধ। সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ওই অবরোধের জেরে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বজবজগামী এবং শিয়ালদহগামী বেশ কিছু ট্রেন অবরোধের জেরে আটকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি তোলেন, ওই রেলিং কেটে ফেলতে হবে। তবেই তাঁরা অবরোধ তুলবেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই পথ বন্ধ করে দিলে দু’দিকের মানুষই সমস্যার মধ্যে পড়বেন। চ্যাটার্জিপাড়া থেকে প্রচুর লোকজন আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ঢাকুরিয়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান ওই পথ দিয়ে। সেটি বন্ধ করে দিলে তাঁদের হাসপাতালে যেতে গেলে অনেক ঘুরে যেতে হবে। এ ছাড়া, রেললাইনের দু’দিকে রয়েছে লেক ভিউ হাইস্কুল এবং রামচন্দ্র স্কুল। বহু পড়ুয়াই রেললাইন পেরোয় ওই পথে। পথটি বন্ধ করে দিলে ঢাকুরিয়া স্টেশন যেতে গেলেও অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হবে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও দাবি, চ্যাটার্জিপাড়ার দিকে পানীয় জলের অসুবিধা রয়েছে। বাসিন্দারা বালতি করে রেললাইনের অন্য দিক থেকে জল নিয়ে আসেন। পঞ্চাননতলার এক বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘আমার অফিস ও পারে। রেলিং দিয়ে এই রাস্তা বন্ধ করে দিলে আমার পাঁচ মিনিটের পথ যেতে কুড়ি মিনিট লাগবে। প্রচুর মানুষ সাইকেল নিয়ে রেললাইন পারাপার করেন। ভোর সাড়ে চারটে থেকে চলাচল শুরু হয়।’’
কিন্তু ওই রেললাইন দিয়ে যে ভাবে ঘন ঘন ট্রেন চলে, তাতে তা পেরোনো বিপজ্জনক বলে রেলের দাবি। দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও রয়েছে। যদিও স্থানীয় মানুষদের যুক্তি, এখনও পর্যন্ত সেখানে দুর্ঘটনা ঘটেনি। বরং তাঁদের দাবি, রেলিং দিয়ে ঘিরলে ওই রাস্তা আরও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে। ওই রেলিং টপকে যেতে গিয়ে আচমকা ট্রেন চলে এলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়বে।
এ দিন রাত ৮টা নাগাদ রেল কর্তৃপক্ষ ওই রেলিং কেটে ফেলতে শুরু করলে অবরোধ উঠে যায়। রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন, দেশ জুড়েই রেললাইন দিয়ে এই ধরনের পারাপার আটকাতে রেলিং বসানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং সময়ে ট্রেন চলাচল, এই দু’টি নিশ্চিত করার জন্য রেলিং জরুরি ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy