অব্যবস্থা: হিন্দু হস্টেলের একটি ঘরে জমে থাকা পুরনো আসবাব। নিজস্ব চিত্র
লম্বা টানা নির্মীয়মাণ বারান্দা দিয়ে হেঁটে গেলে দেখা যায় দেওয়ালে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। ওয়্যারিংয়ের কাজ মাঝ পথে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। বারান্দা পেরিয়ে বড় নির্মীয়মাণ হলঘরে ঢুকে দেখা গেল জড়ো করে রাখা টেবিল, চেয়ার, ভাঙা, আলমারি।
হিন্দু হস্টেলের তিনটি ওয়ার্ড দ্রুত সংস্কার করে চালু করতে হবে এই দাবি নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনের জেরে পঠনপাঠনেও বিঘ্ন ঘটছে। যে হস্টেলের তিনটি ওয়ার্ডের সংস্কারের দাবি নিয়ে এই লাগাতার আন্দোলন চলছে, সেখানকার নির্মীয়মাণ বারান্দা ও হলঘর ঘুরে দেখা গেল কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে টুকু সংস্কার হয়েছে, সেই ঘরেও জমছে ধুলো, জমছে জঞ্জাল। সূত্রের খবর, হিন্দু হস্টেল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৫ সালে। ২০১৮-র নভেম্বরে তা বন্ধ হয়ে যায়।
আবাসিকদের অভিযোগ, বর্ষাকালে ওই তিনটি ওয়ার্ডের পিছন দিকে জঞ্জাল ও জল জমে ডেঙ্গি আতঙ্কও তৈরি হয়েছিল। কয়েক জন আবাসিকের ডেঙ্গিও হয়েছিল। এক আবাসিক বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে কয়েক বার শুধু ব্লিচিং পাউডার দিয়ে গিয়েছে।’’
নতুন ভবনের একতলা থেকে দোতলায় উঠতে গিয়ে দেখা গেল সিঁড়ির অবস্থা খারাপ। দোতলায় একটি হলঘর অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আবাসিকের প্রশ্ন, ‘‘এই ভাবে প্রায় তৈরি অবস্থায় থাকা হলঘরগুলি দিনের পর দিন এই ভাবে পড়ে থেকে ফের ভেঙেচুরে যাবে না তো?’’
একতলার একটি হলঘরে দেখা গেল ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে টেবিল, চেয়ার, আলমারি ও আবাসিকদের অব্যবহৃত পুরনো খাট। আবাসিকদের একাংশের অভিযোগ, কয়েকটি আলমারিতে রয়েছে দুষ্প্রাপ্য কিছু বইও। সেই সব বইও পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে।
আবাসিকেরা জানান, তিনটি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্তত একটি ওয়ার্ডের কাজও শেষ করে তাঁদের হাতে তুলে দিলে তাঁদের থাকার সমস্যার কিছুটা সুরাহা হত। তাঁদের অভিযোগ, হিন্দু হস্টেলে এখন এক ও দু’নম্বর ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। দূরে বাড়ি এমন অনেক পড়ুয়া হস্টেলে জায়গা পাচ্ছেন না।
এক দিকে এই অর্ধ সমাপ্ত তিনটি ওয়ার্ড পড়ে আছে, অন্য দিকে হস্টেলের রান্না ঘরেও তালা ঝুলছে। মেসের কর্মীরা তালা খুলে দিতে রান্না ঘরে গিয়ে দেখা গেল বড় বড় হাঁড়ি, কড়াই-সহ রান্নার সামগ্রী পড়ে রয়েছে গ্যাসের উপরে।
আবাসিকেরা জানান, হস্টেলের মেসকর্মীদের বদলি করে দেওয়া হয়েছে। রান্না হচ্ছে না গত চার দিন ধরে। এত দিনের পুরনো মেসকর্মীদের কোনও কারণ না দেখিয়ে বদলি করা হল কেন, তা তাঁরা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছেন। দিনের পর দিন হোটেলে বেশি দাম দিয়ে খাবার খেতে তাঁরা বাধ্য হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন। বন্ধুর বাড়িতে গিয়েও কেউ খাওয়া-দাওয়া সারছেন।
হস্টেলের সংস্কার কবে ফের শুরু হবে এই নিয়ে প্রেসিডেন্সির ডিন অব স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতি জানিয়েছেন, এই বিষয়ে যা বলার উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া বলবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া বলেন, ‘‘সরকার থেকে টাকা এলেই সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy