পায়েপায়ে: বরজ রোড ধরেই হাঁটছেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। রবিবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী
কারও মুখে মাস্ক। কারও হাতেও গ্লাভস। হনহন করে হাঁটার মাঝে দম নিতে কেউ আবার মুখ থেকে মাস্ক নামিয়ে শ্বাস টেনেই ফের শুরু করছেন। এ ছবি রাস্তার ধারের। করোনা সতর্কতায় লকডাউন ঘোষণা হতেই মার্চের শেষ থেকে বন্ধ রবীন্দ্র সরোবর। সেখানে নিয়মিত প্রাতর্ভ্রমণে আসা নাগরিকদেরও হাঁটায় ভাটা পড়েছিল। এ দিকে, হাঁটা বন্ধ থাকায় শারীরিক সমস্যা বাড়ছিল। তাই বিকল্প জায়গা হিসেবে তাঁদের অনেকেই বেছে নিয়েছেন সরোবর সংলগ্ন বরজ রোড এবং সাদার্ন অ্যাভিনিউ। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিকদের নজর পড়েছে সুভাষ সরোবর সংলগ্ন রাস্তাতেও।
আশপাশ এলাকা থেকে তো বটেই, এমনকি বালিগঞ্জ, নিউ আলিপুর থেকেও রবীন্দ্র সরোবরে সকালে-বিকেলে হাঁটতে আসেন অনেকে। গোলপার্কের বাসিন্দা, বছর সত্তরের সুজিত কর বলেন, “লকডাউনের প্রথম দেড়মাস বাড়ি থেকে বেরোতাম না। এখন বেরোচ্ছি। কারণ, ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাক্তার হাঁটতে বলেছেন।” সাদার্ন অ্যাভিনিউ ঘুরে বরজ রোডে হয়ে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে ফিরে যান তিনি। মাস্ক পরে হাঁটার ফাঁকেই গতি কমিয়ে টালিগঞ্জের বাসিন্দা বছর চল্লিশের সুচরিতা দাস বলেন, “লেকে ঢুকতে না পারলেও বাইরে তো হাঁটার জায়গা রয়েছে। এটা অন্য জায়গার তুলনায় নিরিবিলিও।”
প্রশ্ন উঠছে, ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা কি বাড়ছে? যদিও প্রাতর্ভ্রমণকারীদের মত, স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন তো সকলে। সুতরাং মাস্ক পরা এবং পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে হাঁটলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকার কথা নয়। স্বাস্থ্য-বিধি মেনে হাঁটায় আপত্তি নেই চিকিৎসকদেরও। তাঁদের বক্তব্য, শারীরচর্চা এবং হাঁটা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। এ বার তাই দূরত্ব-বিধি মেনে, মাস্ক-গ্লাভস পরে এবং অবশ্যই পকেটে স্যানিটাইজ়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের হিসেব বলছে, অন্য সময়ে রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে সারা সকালে প্রায় দশ হাজার প্রাতর্ভ্রমণকারী আসেন। বিকেলে আসেন প্রায় আট হাজার। সুভাষ সরোবরে সকালে সেই সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার, বিকেলে দু’হাজারের মতো। সরোবর প্রেমীদের সংগঠন ‘লেক লাভার্স ফোরাম’-এর সদস্য সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, দূর থেকে যাঁরা সরোবরে আসতেন, লকডাউনে তাঁদের আসা বন্ধ হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দারাও আসা বন্ধ করেছিলেন। এখন কিন্তু স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক কম সংখ্যক হলেও স্থানীয়দের একটি অংশ সংলগ্ন রাস্তা বেছে নিয়েছেন।
আপাতত দুই সরোবর খোলার প্রতীক্ষায় অসংখ্য মানুষ। কবে খুলবে? দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এবং আমপানের জেরে বিধ্বস্ত দুই চত্বর পরিষ্কার করার কাজ চলছে। সে সব যত ক্ষণ না হচ্ছে সরকারি নির্দেশ এলেও সাধারণ মানুষকে প্রবেশের অনুমতি দিতে আপত্তি রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy