—প্রতীকী চিত্র।
শহরে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত একাধিক স্কুলে শৌচাগার সংস্কার সংক্রান্ত দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও চার্জশিটই পেশ করতে পারেনি পুর প্রশাসন। ২০১৭-২০২০ সালের মধ্যে পুরসভা পরিচালিত ৫০টি বিদ্যালয়ে শৌচাগার সংস্কারের নামে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা গরমিলের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এই ঘটনায় পুর শিক্ষা বিভাগের প্রাক্তন চার আধিকারিক ও কর্মীকে কারণ দর্শানোর (শো-কজ়) নোটিসও পাঠিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই জবাবে সন্তুষ্ট না হওয়ায় চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষে পুরসভার ‘ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস সেল’-এ অভিযুক্তদের শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল। অথচ শুনানি শুরু হওয়া তো দূর, ওই সংক্রান্ত ফাইল কোথায় আছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে পুরসভার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা একে অন্যের উপরে দায় চাপিয়ে ভারমুক্ত হতে চাইছেন।
শৌচাগার দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে ‘অভিযুক্ত’ এক মহিলা আধিকারিক নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ইমেল মারফত চিঠি লিখে এই অভিযোগ করেছিলেন যে, শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার কারণে তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি ওই অধিকারিকের চিঠির ফলেই পুর কর্তৃপক্ষ মোটা টাকার দুর্নীতির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছেন?
পুরসভা সূত্রের খবর, একাধিক পুর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা শৌচাগার-দুর্নীতির বিষয়টি পুর শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন কর্তাদের বিশদে জানিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কার না করেই খাতায়কলমে কাজ সম্পূর্ণ দেখিয়ে ঠিকাদারদের মোটা টাকার বিল ধরানো হয়েছিল। এমনকি, ওই বিলে প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে জোর করে সই করিয়ে টাকা বরাদ্দ করা হয় বলেও অভিযোগ।
বাম অনুমোদিত ‘কলকাতা পৌর শিক্ষক ও কর্মী সঙ্ঘ’-এর সাধারণ সম্পাদক অশোককুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শৌচাগার সংস্কারের নামে পুকুর চুরি হয়েছিল। আমরা বিষয়টি একাধিক বার তদানীন্তন যুগ্ম পুর কমিশনার (শিক্ষা)-র নজরে এনেছিলাম। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি।’’ জানা যাচ্ছে, এই দুর্নীতিতে পুরসভার শিক্ষা বিভাগ আগেই তদানীন্তন বিভাগীয় চিফ ম্যানেজার, তৎকালীন ম্যানেজার, এক আধিকারিক এবং এক কর্মীকে কারণ দর্শাতে বলেছিল। তাঁরা সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় পুর প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে। নিয়ম অনুযায়ী, এত দিনে চার্জশিট পেশ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু হওয়ার কথা।
কিন্তু অভিযোগ, গত তিন মাস ধরে এই সংক্রান্ত ফাইলটি পুরসভার এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে ঘুরছে। বিশেষ পুর কমিশনার, যুগ্ম পুর কমিশনার, চিফ ম্যানেজার (পার্সোনেল), পুরসভার মুখ্য আইন অধিকারিক থেকে শুরু করে মেয়র পারিষদ (শিক্ষা), মেয়র পারিষদ (আইন)— সকলকে ফাইলের গতিবিধি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর আসছে, ‘‘আমার কাছে এই সংক্রান্ত কোনও ফাইল নেই।’’
এ বিষয়ে রবিবার পুরসভার শিক্ষা বিভাগের বর্তমান মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা বলেন, ‘‘আমার কাছে যা ফাইল ছিল, সব ছেড়ে দিয়েছি। শৌচাগার দুর্নীতি কাণ্ডে চার্জশিট পেশ করতে দেরি হওয়ার অর্থ এই নয় যে, অভিযুক্তদের আড়াল করা হচ্ছে। আইন আইনের পথেই চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy