মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করল বিজেপি পরিষদীয় দল। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ দাবি করল বিজেপি পরিষদীয় দল। মঙ্গলবার বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্ব চলাকালীন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। তখন প্রশ্নোত্তর পর্ব চলায় অপেক্ষা করতে বলেন স্পিকার। প্রতিবাদে বিধানসভা অধিবেশন এর মধ্যেই বীরভূমের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। কিন্তু স্পিকার প্রশ্নোত্তর পর্ব চালিয়ে যাওয়ায় বিক্ষোভ দেখিয়ে কক্ষত্যাগ করেন তারা।
বিজেপি পরিষদীয় দলের পক্ষে মনোজ টিগগা বলেন, ‘‘আবার প্রমাণ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গে আইনের শাসন নেই শাসকের আইন রয়েছে। সাধারণ মানুষ থেকে জনপ্রতিনিধি কারও জীবনের কোনও মূল্য নেই। এমন হত্যাকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রী তার পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তাই আমরা তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি।’’ বিজেপি পরিষদীয় দলের দাবি ১১ জনকে রামপুরহাটে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা।
ঘটনার পরেই জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ঘটনাটিকে শর্ট সার্কিটের ঘটনা বলে ব্যাখ্যা করেছেন। জবাবে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর বলেন, ‘‘যদি সত্যি সত্যি শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে থাকে, তাহলে কেন রাজ্যের এক মন্ত্রী ডেপুটি স্পিকার ও একজন বিধায়ককে তড়িঘড়ি বীরভূম যেতে হল? কেন পুলিশ আধিকারিকদের ক্লোজ করা হল?’’ চাকদহের বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ আবার রাজ্যের ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গে। তিনি বলেন,‘‘দিন দিন রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার এত অবনতি হচ্ছে যে তৃণমূল কাউন্সিলর থেকে শুরু করে বীরভূমের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর জীবন অচিরেই চলে গেল। ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে সারা দেশের মানুষের কাছে বাংলার মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছিল। এ বার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের প্রাণ একই অবস্থা এখানকার আইন-শৃঙ্খলার অবস্থার কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে রাজ্যে হস্তক্ষেপ করা ’’
সোমবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে বোমা হামলায় তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের মৃত্যু হয়। ভাদু রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন। তাঁর বাড়ি রামপুরহাট থানা এলাকার বগটুই গ্রামে। সেখানে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন ভাদু। সেই সময় তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে পালায় এক দল দুষ্কৃতী। ঘটনার পর স্থানীয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় ভাদুকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা ভাদুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তার পর থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ওই গ্রাম। পর পর বাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে। দমকল আধিকারিক জানিয়েছেন, সোমবার রাতে তিন জনের ঝলসানো মৃতদেহ উদ্ধার করার পর মঙ্গলবার সকালে আরও সাত জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই সাত জনই একটি বাড়িতে ছিলেন। দমকলের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত দশ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্তে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য। এই তদন্তকারী দলে রয়েছেন এডিজি সিআইডি জ্ঞানবন্ত সিংহ। এডিজি পশ্চিমাঞ্চল সঞ্জয় সিংহ এবং জিআইজি সিআইডি (অপারেশন) মিরাজ খালিদ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে রামপুরহাটের ওসি-কে ‘ক্লোজ’করা হয়েছে। আপসারিত করা হয়েছে এসডিপিও-কে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy