সরেজমিন: টিকিয়াপাড়া রেল ইয়ার্ড পরিদর্শনে হাওড়া পুরসভা ও রেলের কর্তারা। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
এই গরমেও রাস্তায় জমে রয়েছে দুর্গন্ধময় পাঁক-জল। কোথাও নর্দমা উপচে সেই জল ঢুকে পড়েছে বাড়িতে। বছরের পর বছর পাঁক না তোলায় মূল নিকাশি নালার গভীরতা কমে গিয়েছে। কোথাও আবার রেল লাইনের কয়েক ফুট দূর দিয়ে যাওয়া নিকাশি নালা তৈরি করা হয়েছে স্রেফ মাটি খুঁড়ে। ইট-সিমেন্ট দিয়ে না বাঁধানোয় চারপাশে মাটি পড়ে প্রায় বুজে গিয়েছে সেই নালা।
হাওড়ার টিকিয়াপাড়া রেল ইয়ার্ডের নিকাশি ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সোমবার যৌথ পরিদর্শন করেন রেলের আধিকারিক ও হাওড়ার পুরকর্তারা। সেখানেই উঠে এসেছে এই ছবি। টিকিয়াপাড়া রেল ইয়ার্ড ও আশপাশের পুরসভার ওয়ার্ডগুলিতে ফি বর্ষায় জমা জলের সমস্যা নিয়ে গত শুক্রবারই পুরকর্তারা বৈঠকে বসেছিলেন হাওড়ার ডিআরএম আর বদ্রীনারায়ণের সঙ্গে। ওই বৈঠকেই পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সোমবার সকাল ১১টা থেকে টিকিয়াপাড়া কারশেডের কাছে দশরথ ঘোষ লেন ও নোনাপাড়ার পরিস্থিতি সরেজমিন খতিয়ে দেখেন রেল ও পুরসভার কর্তা এবং ইঞ্জিনিয়ারেরা।
পরিদর্শনের সময়ে দেখা যায়, পাঁক না তোলায় রেল লাইনের নীচ দিয়ে যাওয়া মূল নিকাশি নালার গভীরতা ৬ ফুট থেকে কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ২ ফুটে। পুরসভার আনা স্কেল দিয়ে তা মাপাও হয়। একই অবস্থা রেল লাইনের পাশ দিয়ে তৈরি করা আর একটি নালারও।
রেলের অবশ্য দাবি, প্রতি বছরই নর্দমা থেকে পলি তোলা হয়। সেই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে পুরসভা ও রেলের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানান, পাঁক না তোলায় ওই দু’টি নালার জলবহন ক্ষমতা কমে গিয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জল উপচে ভাসছে ইয়ার্ড। পুরসভার ১৯, ২০, ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডেরও একই অবস্থা। রেলের অভিযোগ, এই দু’টি নালা হাওড়া পুরসভার যে নালাটির সঙ্গে যুক্ত, সেটিও সাফাই না হওয়ায় স্থানীয় ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডও ভাসছে।
পুরসভার তরফে এ দিনের পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন মেয়র পারিষদ বিভাস হাজরা, ২ ও ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান গৌতম দত্ত ও মনোজিৎ র্যাফেল সহ কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ার। রেলের পক্ষে ছিলেন সিনিয়ার ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার এস কে বর্মণ, ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার এস নন্দী ও সহকারী ইঞ্জিনিয়ার এ কে দাস। বিভাসবাবু বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি, তাতে টিকিয়াপাড়া ও দশরথ ঘোষ লেনে অবিলম্বে পাম্পিং স্টেশন করা প্রয়োজন। রেল ও পুরসভা দু’পক্ষকেই উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি বর্ষার আগেই নর্দমার পাঁক তোলার কাজও শুরু করতে হবে।’’
ডিআরএম আর বদ্রীনারায়ণ বলেন, ‘‘জমা জলের সমস্যা দেখতে সবে পরিদর্শন শুরু হয়েছে। আমরা পরবর্তী বৈঠকে বসে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ঠিক করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy