মোবাইল গেমে মগ্ন কৈশোর। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
মধ্যরাতে ভাইয়ের পকেট থেকে মোবাইল খুঁজে পেয়েছিলেন দিদি। কোথা থেকে ফোন এল, তার জবাবে কিশোর বলেছিল, রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছে সে। ঘটনার কথা জানতে পেরে ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে নেন তার বাবা। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই উধাও হয়ে গিয়েছে ওই কিশোর। ঘটনাটি বাইপাস লাগোয়া মুকুন্দপুরের। থানায় নিখোঁজ-ডায়েরি করেছে পরিবার। যোগাযোগ করেছে রেল পুলিশের সঙ্গেও।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোর একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। রবিবার সন্ধ্যায় ভূগোলের কোচিংয়ে যাওয়ার নাম করে বেরোয় সে। আর ফেরেনি। তার দিদি জানান, শনিবার রাতে তিনি ফোনটি দেখেন। রবিবার রাখি উপলক্ষে আত্মীয়েরা এসেছিলেন। ভাইয়ের আচরণও স্বাভাবিক ছিল। সন্ধ্যায় পড়তে যাওয়ার জন্য সাইকেল নিয়ে বেরোয় ভাই। রাত ১০টার পরেও না ফেরায় ওই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান, ওই কিশোর সে দিন পড়তেই যায়নি।
সম্প্রতি ইন্টারনেটে ‘মোমো’ গেমের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অনেকেই তার ফাঁদে প়ড়েছেন। কিশোরের দিদি জানান, ভাইয়ের মোবাইলে গেম খেলার নেশা ছিল। তবে তার কাছে পাওয়া ফোনে ‘মোমো’র প্রমাণ মেলেনি। অন্য কয়েকটি গেম রয়েছে তাতে। ‘‘মোমো বা ব্লু হোয়েল মূলত হোয়্যাটসঅ্যাপ বা ফেসবুকে আসে। কিন্তু ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া মোবাইলে মোমো বা ব্লু হোয়েলের কোনও লিঙ্ক মেলেনি,’’ বলছেন দিদি।
সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় অল্পবয়সীদের মধ্যে মোবাইল গেমে আসক্তির কথা উঠে এসেছে। এই কিশোরের নিখোঁজ হওয়া এবং ফোন-রহস্যের পিছনেও সেই আসক্তির কথাই উঠে এসেছে। মনোবিদ ও সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মোবাইলে গেম খেলতে খেলতে বাস্তবের সঙ্গে ভার্চুয়াল জগতের ফারাক বুঝতে পারছে না কিশোর-কিশোরীরা। তার ফলে ক্রমশ বাস্তব জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে তারা।
কিন্তু মুকুন্দপুরের ওই কিশোরের কাছ থেকে মেলা ফোনটি রহস্য আরও বাড়িয়েছে। ফোনটির আসল মালিক কে, তা জানতে পারেননি অভিভাবকেরা। দিদি বলছেন, ফোনে দু’টি সিম ছিল। সেগুলি তাঁদের কারও নামে নয়। তার ভাইয়ের একটি ই-মেল অ্যাকাউন্ট ছাড়াও ফোনে আরও এক ব্যক্তির ই-মেল অ্যাকাউন্ট এবং একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মিলেছে। ফেসবুক অ্যাকাউন্টে কোনও তথ্য মেলেনি। পুলিশের ধারণা, কিশোরের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে ওই ফোনের মালিকের সম্পর্ক থাকতে পারে। কার সিম সে ব্যবহার করছিল, সেটাও জানা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy