তরুণ মজুমদার।
প্রয়াত পরিচালক তরুণ মজুমদারের নশ্বর দেহ গবেষণার স্বার্থে দান করা হবে এসএসকেএম হাসপাতালে। পরিচালকের শেষ ইচ্ছে তা-ই ছিল। দেহদানকারী সংস্থার সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলে অঙ্গীকারবদ্ধও হয়েছিলেন তরুণ। তবে শেষপর্যন্ত চুক্তিপত্রে সই করা হয়নি। যদিও তাতে তরুণের শেষ ইচ্ছাপূরণে বাধা পড়েনি। পরিচালকের পরিবার তাঁর দেহদানে সম্মতি দিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। সোমবার দুপুরে পরিচালকের দেহ হাসপাতাল থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য এনটি ওয়ান স্টুডিয়োয় নিয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকেই আবার ফিরিয়ে আনা হবে হাসপাতালে। এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরিচালকের দেহ গ্রহণ করার জন্য তাঁরা প্রস্তুত।
বরাবর বামপন্থী মনোভাবাপন্ন পরিচালক অবশ্য তাঁর মরণোত্তর সামাজিকতা নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি ইচ্ছের কথা আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলেন। যেমন তাঁর নশ্বর দেহ নিয়ে কোনও সরকারি অনুষ্ঠান চাননি তিনি। এমনকি ফুল-মালা নিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনেও আপত্তি ছিল তাঁর। সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, পরিচালকের শেষ ইচ্ছের পূর্ণ মর্যাদা দেওয়ার চেষ্টা করবে তারা। সোমবার এসএসকেএম হাসপাতালে এসেছিলেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব, সুশান্ত ঘোষের মতো নেতা এমনকী তরুণ নেতা শতরূপ ঘোষও। তাঁরা পরিচালকের অনুরাগীদের, তাঁর শেষ ইচ্ছে মেনেই তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে অনুরোধ করেন।
সাধারণত বাংলার গুণীজনেদের মৃত্যুর পর তাঁদের মরদেহ রবীন্দ্র সদনে শায়িত রাখা হয়। সেখানেই শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন অনুরাগীরা। সরকারের তরফে গান স্যালুটে অভিবাদনও জানানো হয়। কিন্তু তরুণের ক্ষেত্রে তাঁর শেষ ইচ্ছে মেনেই এ ধরনের কোনও সরকারি অনুষ্ঠান হবে না। পরিচালককে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে হাসপাতালে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘উনি নিভৃতে যেতে চেয়েছিলেন। আমরা ওঁর সেই ইচ্ছেকেই সম্মান জানাব।’’
শিল্পীর শেষ ইচ্ছে মেনেই অনুরাগীদের ফুল-মালা ছাড়া দূর থেকে শ্রদ্ধা জানানোর অনুরোধ করেছেন শতরূপ। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পরিচালকের নশ্বর দেহ হাসপাতাল থেকে এনটিওয়ান স্টুডিয়োয় নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে আবার তুলে দেওয়া হবে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের হাতে। সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষ এসেছিলেন হাসপাতালে। তিনি বলেছেন, পরিচালকের শেষ ইচ্ছে মেনে তাঁর দেহের পাশে দলের লাল পতাকা রাখা হবে।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল ১১টা ১৭ মিনিটে এসএসকেএম হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার বিভাগে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পরিচালক। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে। পরে অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। পরিচালকের শেষ ইচ্ছার কথা জানা যায় তার পরই। দেহদান সংস্থা ‘গণদর্পণ’ জানায়, তাঁদের কাছে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন পরিচালক। যে প্রতিশ্রুতি রাখতে রাজি হয়েছে তাঁর পরিবার। বরাবর বামপন্থী মনোভাবাপন্ন পরিচালকের দলও একই কথা জানায়। সোমবার দুপুরেই সম্পন্ন হয় দেহদানে পরিবারের সম্মতি দানের প্রক্রিয়াটি। পরিচালকের কোনও নিকটাত্মীয়কেই তাঁর দেহদানের ইচ্ছাপত্রে স্বাক্ষর করতে হত। বামনেতা রবীন দেব জানান, সেই কাজ সম্পন্ন করেছেন পরিচালকের বোন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy