প্রায় ঘণ্টা দেড়েক হাসপাতালে কার্নিশে বসেছিলেন সুজিত অধিকারী। ছবি: পিটিআই।
ঠিক কী ঘটেছিল কার্নিশ-কাণ্ডে? গোটা কাণ্ড নিয়ে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করল স্বাস্থ্যভবন। যদিও ঠিক কত দিনের মধ্যে এই রিপোর্ট দিতে হবে, সে নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা জানাননি স্বাস্থ্যকর্তারা।
শনিবার দুপুরে কার্নিশ থেকে পড়ে যাওয়ার পর সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টা সত্ত্বেও বাঁচানো যায়নি সুজিত অধিকারীকে। সন্ধ্যায় সুজিতের মৃত্যুর আগেই অবশ্য হাসপাতালের সুরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে অজস্র প্রশ্ন উঠেছে। এ বার কার্যত স্বাস্থ্যভবনের আতশকাচের নীচে পড়লেন ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, সুজিতের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁর পিসি বাসন্তী অধিকারী। বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সুজিতের দেহের ময়নাতদন্তের পাশাপাশি কার গাফিলতিতে এই ঘটনা ঘটল, সে সবই খতিয়ে দেখা হবে।বস্তুত, শনিবার ঘটনাস্থলে গিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।
এই কাণ্ডে মৃতের আত্মীয়দের প্রশ্ন, দিনেদুপুরে হাসপাতালের সুরক্ষাব্যবস্থার ফাঁক গলে কী ভাবে জানলা ভেঙে আটতলার কার্নিশে চড়ে বসলেন রোগী? নার্স-কর্মীদের নজর এড়িয়ে হাসপাতালের জানলাই বা কী ভাবে ভাঙলেন চিকিৎসাধীন? ঘণ্টা দেড়েক ধরে কার্নিশে বসে থেকে ঝাঁপ দেওয়ার হুমকি দেওয়া সত্ত্বেও তাঁকে নীচে পড়া থেকে রুখতে কেন ব্যর্থ হাসপাতাল বা দমকল কর্তৃপক্ষ?
শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ কলকাতার মল্লিকবাজারের ওই বেসরকারি হাসপাতালের আটতলা থেকে পড়ে গুরুতর আঘাত পান সুজিত। ঘটনার পর জরুরি বিভাগ থেকে আইটিইউ-এ চিকিৎসা চলে তাঁর। তবে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় সে সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘‘আটতলার কার্নিশে চড়ে বসার পর ঘণ্টা দুয়েক ধরে সব রকম চেষ্টা করেছে দমকল, যাতে রোগী নীচে ঝাঁপ না দেন। তিনি সে রকম হুমকিও দিচ্ছিলেন। তবে শেষমেশ সেটাই করলেন তিনি। নীচে পড়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালের এর্মাজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আইটিইউ-তে ট্রান্সফার করে সব রকম ভাবে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি।’’
হাসপাতালের জানলায় কেন গ্রিল লাগানো ছিল না, সে প্রশ্নও উঠেছে। তবে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক অভীক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘জানলার হাতলগুলো বড় বড় বোল্ট দিয়ে আটকানো ছিল। সেগুলি রোগী তো বটেই, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও খুলতে পারবেন না। আমাদের অনুমান, রোগীর বেডের পাশের জানলার একটি বোল্ট কাটা হয়েছে। সেই ভাঙা অংশটি নীচে পড়েছিল। মনে করা হচ্ছে, হাসপাতালের ‘বেড কি’ দিয়ে জানলার বোল্ট কেটেছেন তিনি। তবে কখন তিনি এ কাজ করলেন, আমরা তা অনুসন্ধান করে দেখব।’’
এ ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠালেও হাসপাতালের বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে যদি পদক্ষেপ করা হয় তবে যাবতীয় সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্যভবন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy