প্রতীকী ছবি।
হাসপাতালের কার্নিশ থেকে পড়ে যাওয়ার প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে মারা গেলেন সুজিত অধিকারী। শনিবার দুপুরে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের কার্নিশে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বসেছিলেন তিনি। তার পর কার্নিশের ঝুলতে ঝুলতে হঠাৎই তাঁর হাত ফস্কে যায়। আটতলা থেকে নীচে পড়ে মাথায়, বুকে গুরুতর চোটআঘাত পান সুজিত। শরীরের বহু জায়গায়ও আঘাত লেগেছিল। আইটিইউ-তে নিয়ে যাওয়া হলেও শনিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৬টা নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৩৩ বছরের সুজিতের ‘এপিলেপ্টিক ফিট’ ছিল। ২৩ জুন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর দিন দুয়েকের মধ্যে সে সবের লক্ষণ দেখা যায়নি। ফলে শনিবার সকালে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়ার কথা ছিল। তবে সাড়ে ১১টা নাগাদ হাসপাতালের জানলা ভেঙে তিনি আটতলার কার্নিশে চড়ে বসেন। ঘণ্টা দেড়েক ধরে সেখানেই বসে থাকার পর এক সময় কার্নিশ ধরে ঝুলতে থাকেন। তাঁর কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাত ফস্কে নীচে পড়ে যান। দমকলের চেষ্টা সত্ত্বেও নীচে পড়া থেকে আটকানো যায়নি।
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। তবে শনিবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে হাসপাতালের চিকিৎসক অভীক রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘণ্টা দুয়েক ধরে দমকল সব রকম চেষ্টা করেছে, রোগী যাতে ঝাঁপ না দেন। তিনি সে রকম হুমকিও দিচ্ছিলেন। তবে শেষমেশ সেটাই করেন তিনি। পড়ে যাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালের এর্মাজেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর তাঁকে আইটিইউ-তে ট্রান্সফার করানো হয়েছিল। আমরা সব রকম ভাবে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি।’’
খাস কলকাতা শহরের এই বেসরকারি হাসপাতালের সুরক্ষার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। চিকিৎসকদের দাবি, ‘‘হাসপাতালের জানলার হাতলগুলো বড় বড় বোল্ট দিয়ে আটকানো ছিল। সেগুলি রোগী তো বটেই, কোনও সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষও খুলতে পারবেন না। আমাদের অনুমান যে রোগীর বেডের পাশে যে জানলা ছিল, তার একটি বোল্ট কাটা হয়েছে। সেই ভাঙা অংশটি নীচে পড়েছিল। মনে করা হচ্ছে যে তিনি বোল্ট কেটে জানলার খুলেছিলেন। মনে করা হচ্ছে যে হাসপাতালের ‘বেড কি’ দিয়ে জানলার বোল্ট কেটেছেন তিনি। তবে কখন তিনি এ কাজ করলেন, তা আমরা অনুসন্ধান করে দেখব। এই ঘটনার অভিঘাত এতটাই ছিল যে আমাদের হাসপাতালের তিন জন নার্স অজ্ঞান হয়ে যান।’’
সুজিত কী ভাবে হাসপাতালের জানলা ভেঙে কার্নিশে চড়ে বসলেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন সুজিতের পিসি বাসন্তী অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘জানলা ভেঙে পেশেন্ট যখন একলা বেরোচ্ছিল, তখন হাসপাতালে সবাই কোথায় ছিল? কেউ ওর খেয়াল রাখেনি কেন? জানলা দিয়ে ও বেরিয়ে গেল কী করে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy