শিক্ষকের ভূমিকা পালন করবে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। প্রতীকী ছবি।
শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন নয়, বরং ওই বিশেষ দিনে শিক্ষকদের পড়ানোর কাজটাও নিজেদের কাঁধে তুলে নেবে পড়ুয়ারা। শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলে আগামী কাল, এ বারের শিক্ষক দিবসে এ ভাবেই শিক্ষকের ভূমিকা পালন করবে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। ওই দিন শিক্ষকেরা নন, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেবে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির দাদা-দিদিরাই।
শ্যামবাজারের পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা জানালেন, ওই স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশের পড়ুয়ারা সে দিন দু’টি পিরিয়ডে ক্লাস নেবে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির। এমনকি, এক জন করে প্রধান শিক্ষক ও সহ-প্রধান শিক্ষকের ভূমিকাও পালন করবে একাদশ ও দ্বাদশের পড়ুয়াদের মধ্যেই বাছাই করা দুই পড়ুয়া। তারাই ঠিক করবে, কোন ‘শিক্ষক’ পড়ুয়া সে দিন কোন ক্লাস নেবে। সুপ্রিয় বললেন, ‘‘শিক্ষক দিবসের দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তো আছেই, তবে তার সঙ্গে এটাই মুখ্য আকর্ষণ।’’
কিন্তু এমন ভাবনা কেন? ক্লাসে শিক্ষকের ভূমিকা পালনে এত উৎসাহী কেন পড়ুয়ারা? ওই কয়েক জন পড়ুয়া জানাচ্ছে, শিক্ষক দিবসে কয়েক ঘণ্টার জন্য শিক্ষক হয়ে তারা অন্য রকম অভিজ্ঞতা লাভ করতে চায়। যা ভবিষ্যতে শিক্ষক হওয়ার পথে অনুপ্রেরণাও জোগাবে তাদের। তাদের কারও কারও কথায়, ‘‘আমরা স্যরদের দেখে সব সময়ে শিখি। অনেক সময়ে মনে হয়, এই শিক্ষকতার পেশায় আসতে পারলে আমরাও ছোটদের কত কিছু শেখাতে পারব। তাই ওই বিশেষ দিনে কিছু সময়ের জন্য শিক্ষকের ভূমিকা পালন করে সেই অভিজ্ঞতাই লাভ করতে চাই আমরা। আর আমাদের সেই ইচ্ছায় স্যরেরাও সায় দিয়েছেন।’’ সুপ্রিয় জানান, যে হেতু ক্লাসে রীতিমতো পড়াতে হবে এবং কে কোন ক্লাসে যাবে, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও পড়ুয়াদেরই নিতে হবে, তাই এর মাধ্যমে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও তৈরি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
উত্তর কলকাতার সরস্বতী বালিকা বিদ্যালয়ে সে দিন আবার পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাস নেবে দশম শ্রেণির দিদিরা। আর দ্বাদশের ছাত্রীরা পড়াতে যাবে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাসে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জয়তী মজুমদার মিত্রের কথায়, ‘‘আমরা চাই, ওদের মধ্যেই কেউ কেউ ভবিষ্যতে শিক্ষকতার পেশায় আসুক। তাই ওরাও দেখুক, শিক্ষিকা হয়ে আমরা কী কী কর্তব্য পালন করি। এক দিনের জন্য শিক্ষিকা হয়ে তাই ওদের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি হবে। শিক্ষক হওয়ার শিক্ষাই ওদের দেওয়া হবে ওই দিন।’’ আর কয়েক জন ছাত্রী জানাচ্ছে, স্কুলের পোশাকে নয়, বরং শিক্ষক দিবসে ছোটদের ক্লাস নিতে রীতিমতো ‘দিদিমণিদের’ মতো শাড়ি পরেই ক্লাসে যাবে তারা। একাদশ ও দ্বাদশের কয়েক জন ছাত্রী বলল, ‘‘আমাদের স্কুলপোশাক তো সালোয়ার কামিজ। কিন্তু সে দিন আমরা দিদিমণিদের মতো শাড়ি পরে আসব।’’ তবে জয়তী বলেন, ‘‘ওদের বলেছি, শাড়িতে ক্লাসে যেতেই পারো। কিন্তু সেই সাজ যেন সরস্বতী পুজোর সাজ না হয়ে যায়!’’
একই পথে হাঁটছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠও। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলে ইতিমধ্যেই দ্বাদশ শ্রেণির ২১ জন পড়ুয়াকে নির্বাচন করা হয়েছে, যারা পঞ্চম থেকে একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেবে। তিনি বলেন, ‘‘ওদের মধ্যে কে কোন ক্লাসে যাবে, তা আমরা ঠিক করে দিয়েছি। কিন্তু কোন বিষয়ে ক্লাস নেবে, সেটা ওদেরই ঠিক করতে হবে। ওই ২১ জন ছাত্রকেই পুরস্কার দেওয়া হবে। তবে তাদের মধ্যে তিন জনকে সেরা শিক্ষক হিসাবে বেছে নেওয়া হবে বলে ঠিক হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy