জামিয়া মিলিয়া-সহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে পথে নামলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তনী ও শিক্ষকেরা। সোমবার পার্ক স্ট্রিটে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের উপরে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরে পথে নামলেন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্রছাত্রী ও প্রাক্তনীরা। সোমবার তাঁরা মৌনী মিছিলে করেন। তাতে যোগ দেন ওই কলেজের বেশ কয়েক জন শিক্ষকও।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে মিছিল বেরিয়ে পার্ক স্ট্রিট, লাউডন স্ট্রিট, উড স্ট্রিট হয়ে কলেজ-চত্বরে ফিরে আসে। স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ঋষি বসু বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়ার ঘটনার পরেই আমরা ঠিক করি, এর প্রতিবাদে মিছিল করা হবে। আমরা বর্তমান পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মিছিলের তারিখ ঠিক করি।’’ ঋষি জানান, মুখে মুখে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁরা সকলকে মিছিলের কথা জানিয়ে দেন। প্রাক্তনী সংসদের প্রাক্তন সম্পাদক ফিরদৌসাল হাসান বলেন, ‘‘বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের কাছে এই প্রতিবাদ মিছিলের কথা শুনেই ঠিক করে ফেলি, আমরা ওদের পাশে দাঁড়াব এবং মিছিলে অংশ গ্রহণ করব।’’
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় পুলিশি অত্যাচারের ঘটনার এত দিন পরে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের পড়ুয়ারা প্রতিবাদে নামলেন কেন? এর উত্তরে মিছিলে অংশগ্রহণকারী এক ছাত্র জানান, কলেজে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা ছিল। ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন। সেই উৎসবের পরেই তাঁরা মিছিল করার দিন স্থির করে ফেলেন।
মৌনী মিছিলের প্রথমে ছিলেন বর্তমান পড়ুয়ারা। তাঁদের পিছনে ছিলেন শিক্ষক ও প্রাক্তনীরা। মিছিলে বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার হাতে দেখা যায় ভারতের পতাকা। তাঁদেরই এক জন মাল্টিমিডিয়া ও অ্যানিমেশনের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী মুনতাহা। তিনি বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়ায় অত্যাচারিত পড়ুয়াদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতেই এই মৌনী মিছিল। আর সারা দেশে সব ধর্মের মানুষের ঐক্য বোঝাতেই আমরা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে মিছিলে হাঁটছি।’’ সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনেরও বিরোধিতা করেন মুনতাহা।
এ দিন পড়ুয়াদের মৌনী মিছিলে ছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্সের শিক্ষকেরাও। ওই কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক রঞ্জন নাগ বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়া ও আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার বিরুদ্ধে জোট বেঁধে প্রতিবাদ জানানো দরকার। দেশে অর্থনীতি বেহাল। এই বেহাল অবস্থা থেকে সাধারণ মানুষের মুখ ঘোরাতেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এনেছে কেন্দ্র। তারও প্রতিবাদ দরকার।’’
সেন্ট জেভিয়ার্সের প্রাক্তনীদের মধ্যে ছিলেন চিত্রপরিচালক অরিন্দম শীল, সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র, তৃণমূল নেতা দীনেশ ত্রিবেদী প্রমুখ। দীনেশবাবু বলেন, ‘‘আমি রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এখানে আসিনি। এসেছি প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে। ছাত্রছাত্রীদের সমর্থন করতে ওদের পিছনে পিছনে হাঁটছি। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশের ছাত্রসমাজ জেগে উঠেছে। দেশে যখন ছাত্রসমাজ জেগে ওঠে, তখন যে-কোনও আন্দোলন অন্য মাত্রা পায়।’’ অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘জামিয়া মিলিয়ার ঘটনার প্রতিবাদে বড়রা নামার আগে ছোটরা মিছিলে নেমেছে। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy