Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Private School

Paray Shikshalaya: পাড়ার শিক্ষালয়ে যেতে অনীহা বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের

মূলত সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলের পড়ুয়ারা এই সুযোগ পেলেও এমন ক্লাসে যেতে অবশ্য আগ্রহী নয় বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৪০
Share: Save:

অতিমারি আবহে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়। স্কুলের বদলে এলাকার কোনও খোলা জায়গায়, একই পাড়ার কয়েকটি স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের পাঠদান করা হবে। মূলত সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলের পড়ুয়ারা এই সুযোগ পেলেও এমন ক্লাসে যেতে অবশ্য আগ্রহী নয় বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়ারা।

করোনার কারণে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন এই বিকল্প ক্লাস চালু করা হচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গত সোমবার জানিয়েছিলেন, বেসরকারি স্কুলের প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই সুবিধা নিতে চাইলে তাঁরা সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু মঙ্গলবার বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের একাংশ অবশ্য স্কুল খোলার উপরেই জোর দিয়েছেন বেশি। তাঁদের যুক্তি, তাঁদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার মাধ্যম আলাদা, বোর্ডও আলাদা। সে ক্ষেত্রে পাড়ায় শিক্ষালয়ের সুবিধা তারা নেবে কী করে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

বেহালার বাসিন্দা সুকান্ত শিকদারের ছেলে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। সুকান্তের বক্তব্য, “আমার ছেলের সিলেবাস আলাদা। যত দূর জানি, পাড়ায় শিক্ষালয়ে সরকারি স্কুলের শিক্ষক, পার্শ্বশিক্ষকেরা পড়াবেন। ওর সিলেবাস অনুযায়ী কী ভাবে পড়াবেন তাঁরা? তা ছাড়া, মাধ্যমটাও তো ইংরেজি।” আগরপাড়ার এক পড়ুয়ার অভিভাবক স্বপন বিশ্বাসের মতে, “এত দিন ধরে স্কুল বন্ধ। স্কুল খোলার খুবই প্রয়োজন ছিল। কিন্তু পাড়ার শিক্ষালয়ে ছেলেকে পাঠালে কি আদৌ কোনও উপকার হবে? ছেলে তো ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে। তার থেকে করোনা-বিধি মেনে স্কুলটা দ্রুত খোলার ব্যবস্থা করা হোক। স্কুলের পরিকাঠামো কি আর পাড়ার শিক্ষালয়ে পাওয়া যাবে কখনও?”

অবিলম্বে স্কুল খোলার দাবিতে আগামী ২৯ জানুয়ারি অভিভাবকদের নিয়ে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে মানব-বন্ধনের ডাক দিয়েছে বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য মনে করেন, একটি স্কুলে পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা আসেন নানা জায়গা থেকে। প্রতিটি ক্লাসের নির্দিষ্ট সিলেবাস, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি আছে। একটা বিশেষ পরিবেশও আছে, যার মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষালাভ করে। তাই ক্লাসরুমের শিক্ষার বিকল্প কখনও পাড়ার মাঠ হতে পারে না। সুপ্রিয়ের কথায়, “শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, বেসরকারি স্কুল চাইলে পাড়ায় পাঠশালায় তাদের পড়ুয়াদের পাঠাতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন হল, সিবিএসই এবং সিআইএসসিই বোর্ডের পড়ুয়া ও বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের একই জায়গায় কী ভাবে পাঠদান সম্ভব? এর থেকে বরং বিধি মেনে ধাপে ধাপে স্কুল খুললে পড়ুয়ারা বেশি উপকৃত হত।”

অন্য দিকে, সিবিএসই এবং সিআইএসসিই বোর্ডের বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের মতে, ওই সব স্কুলে দু’বছর ধরে অনলাইনে নিয়মিত পড়াশোনা, পরীক্ষা চলছে। অধিকাংশ পড়ুয়ার বাড়িতে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন থাকায় পড়াশোনা চালাতে তেমন কোনও অসুবিধা হচ্ছে না। ফলে পাড়ার শিক্ষালয়ে গিয়ে পড়াশোনা করার প্রয়োজনও বোধহয় পড়বে না। ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতে, “এখন প্রয়োজন স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা শুরু করা। অথবা স্কুল খুলে কিছুটা অফলাইন ও কিছুটা অনলাইনে পড়াশোনা হবে, এমন ব্যবস্থা করা। নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছে। তাই পাড়ার শিক্ষালয় নয়, বরং স্কুল কবে খুলবে, সেই দিকেই তাকিয়ে আছি আমরা।”

অন্য বিষয়গুলি:

Private School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy