প্রতীকী চিত্র।
সরকার-পোষিত স্কুলগুলিতে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফি কত হবে, তা নিয়ে প্রশাসনের সুনির্দিষ্ট কোনও নির্দেশিকা না থাকায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এমনই অভিযোগ করেছেন শহরের বেশ কিছু উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি শহরের কয়েকটি সরকার-পোষিত স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফি অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে কিছু স্কুলে বিক্ষোভও হয়। অভিভাবকদের অনেকেরই দাবি, সরকার-নির্ধারিত ভর্তির ফি ২৪০ টাকার (বার্ষিক) বেশি নেওয়া যাবে না। যদিও বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের বক্তব্য, ২৪০ টাকা ভর্তির ফি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। একাদশে ভর্তির জন্য কত ফি নেওয়া হবে, তার উল্লেখ নেই। অন্য কয়েকটি স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ২৪০ টাকা ফি নিলে তাদের পক্ষে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা চালানো সম্ভব হবে না।
শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, একাদশে ভর্তির ফি নিয়ে প্রতি বছরই এই সমস্যা হয়। এ বার করোনা পরিস্থিতিতে তা আরও বেড়েছে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানালেন, উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞানের বেশির ভাগ বিষয়ই ল্যাবরেটরি-নির্ভর। তাঁদের স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেক। তাই ল্যাবরেটরি চালানোর ধারাবাহিক খরচ আছে। ২৪০ টাকায় সেই খরচ উঠবে না। পরিমলবাবু জানান, তাঁদের স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ২০টি বিষয় পড়ানো হয়। ওই সমস্ত বিষয় পড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। তাই বেশ কিছু শিক্ষককে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ করতে হয়েছে। ওই শিক্ষকদের বেতনের টাকা স্কুলকেই জোগাড় করতে হয়। তিনি বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিকের পড়াশোনা সুষ্ঠু ভাবে চালাতে যেটুকু ফি দরকার, সেটুকুই নিই আমরা। কিন্তু ২৪০ টাকায় চালানো কার্যত অসম্ভব।”
শিয়ালদহের টাকি বয়েজ়ের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাকও জানালেন, তাঁদের স্কুলেও উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্র-সংখ্যা প্রচুর। বাংলা ও ইংরেজি, দুই মাধ্যমেই পড়ানো হয়। বর্তমানে অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। অস্থায়ী শিক্ষকেরাও রয়েছেন স্কুলে। তাঁদের স্কুলেও ল্যাবরেটরির খরচ অনেক। স্বাগতাদেবীর কথায়, “অতিরিক্ত ফি নিচ্ছি না। তবে ২৪০ টাকায় চালানো কার্যত অসম্ভব। তা ছাড়া, শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তিতে ২৪০ টাকা ফি তো অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত নেওয়ার কথা বলা রয়েছে। সরকার-পোষিত স্কুলগুলি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে কত ফি নেবে, তা কিন্তু বলা নেই।”
সম্প্রতি জেলা স্কুল পরিদর্শকেরা একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে কিছু স্কুল একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছে। একাদশে ভর্তি হতে ইচ্ছুক কোনও পড়ুয়াকেই ফি দিতে না-পারার কারণে ফেরানো যাবে না। তাদের থেকে অতিরিক্ত ফি-ও নেওয়া যাবে না। কেউ যদি অভিযোগ জানান, তা হলে স্কুলের নেওয়া অতিরিক্ত ফি ফেরত দিতে হবে।
‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের মতে, “একাদশে ভর্তির ফি নিয়ে এই বিতর্ক তৈরি হয়েছে সরকারের কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশিকা না থাকায়। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত যেমন ভর্তির ফি বাবদ ২৪০ টাকা নেওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু একাদশ শ্রেণির ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশিকা নেই। এ ব্যাপারে সরকার অবিলম্বে নির্দেশিকা জারি করুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy