একে মা মনসা। তার উপরে ধুনোর গন্ধ।
পাঁচশো এবং হাজার টাকার নোট বাতিল। দু’হাজার ও একশো টাকার হাতে গোনা কিছু নোট নিয়ে নাজেহাল। ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার জোগাড়। কেনাবেচা মাথায় উঠেছে। পুরনো টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিতে হচ্ছে। অথচ, বেশি নগদ টাকাও তোলা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে মাথার চুল ছেঁড়ার অবস্থা। আর, গোদের উপরে বিষফোড়ার মতো আচমকাই হানা বাণিজ্য কর অফিসারদের! এ মাসে কত টাকার যুক্ত মূল্য কর (ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স বা ভ্যাট) জমা পড়েছে, তা দেখার জন্য!
দিন দুই আগে বৌবাজারের এক সোনার দোকানে এ ভাবে হানা দিতে গিয়ে নাকাল হতে হয়েছে বাণিজ্য কর অফিসারদের। সূত্রের খবর, শুধু হেনস্থা নয়, রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি করা হয় তাঁদের। তার পরেই বাণিজ্য কর অফিসারদের কাছে মৌখিক নির্দেশ এসেছে। বলা হয়েছে, আপাতত বন্ধ রাখতে হবে সমস্ত অভিযান।
শুক্রবার বড়বাজারে একটি সংস্থায় হানা দিতে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা হয়েছে আয়কর অফিসারদের। শেষে পুলিশের সাহায্য নিয়ে রাত পর্যন্ত সেই অভিযান চলে বলে আয়কর দফতর সূত্রে খবর। ওই সংস্থাটি দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের। আয়কর অফিসারদের কাছে খবর এসেছিল, সংস্থাটি কালো টাকা মজুত করে রেখেছে।
গত দু’দিনে একটি সোনার দোকানের বড়বাজার এবং ক্যামাক স্ট্রিট শাখায় অভিয়ান চালিয়ে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর দফতর। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনা এবং নগদ মিলিয়ে ওই পরিমাণ অর্থ হিসেব-বহির্ভূত। তবে, ওই সোনার দোকানে হানা দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়নি আয়কর অফিসারদের।
কিন্তু, বৌবাজারে বাণিজ্য কর অফিসারেরা বাধার সামনে পড়েছেন। এমনিতেই বৌবাজার এলাকার বেশ কিছু সোনার দোকানে কয়েক দিন ধরেই অভিযান চালাচ্ছেন আয়কর অফিসারেরা। তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাথাব্যথার শেষ নেই। তার উপরে এখন যোগ হয়েছে বাণিজ্য কর অফিসারদের অভিযান।
এই টাকা টানাটানির মাঝে পরিমাণ মতো বাণিজ্য কর জমা পড়ছে না বলেই ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। সাধারণত প্রতি মাসে রাজ্যের কোষাগারে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা বাণিজ্য কর জমা পড়ে। সেই টাকার ৮০ শতাংশই আবার জমা পড়ে অনলাইনে। তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বেশ কয়েক জন ব্যবসায়ী বাকি যে ২০ শতাংশ টাকা ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা দেন, সমস্যা দেখা দিয়েছে তা নিয়েই। সেই টাকা এখন জমা পড়ছে না।
প্রথমত, ব্যাঙ্কে বিশাল লাইন। টাকা নিয়ে এই টানাপড়েনের ফাঁকে অনেকেই ঠিক করে রেখেছেন, সেই কর পরে জমা দেবেন।
বাণিজ্য কর দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রতি মাসেই কিছু তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের অফিসারেরা রুটিন পরিদর্শনে যান। দেখা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী কত মাল মজুত করে রেখেছেন এবং সেই সংক্রান্ত হিসেবপত্র ঠিক আছে কি না। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই পরিদর্শনও আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy