অবহেলা: এখানেই পার্ক তৈরি হওয়ার কথা। নিজস্ব চিত্র
মখমলের মতো সবুজ মাঠ। বিভিন্ন বাহারি এবং ফল-ফুলের গাছে সাজানো সেই চত্বর। রয়েছে রঙিন ফোয়ারাও। গাছ আর ফোয়ারার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝেই নজরে পড়বে পাথর বা সিমেন্টে তৈরি সুসজ্জিত বসার জায়গা। এই বাগানবিলাসের মাঝেই শারীরচর্চা করতে পারেন জগার্স পার্কে কয়েক পাক ঘুরে। ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কানে আসবে পাখির বিবিধ কলতান। পুকুর ধারে কিছু ক্ষণ বসে জিরিয়ে নিয়ে এ বার শুরু করা যাবে দিনের ব্যস্ততা। ছোটদের খেলার জন্য থাকছে পার্কও।
বালিগঞ্জ স্টেশন থেকে কিছু দূরে কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের চার্লি চ্যাপলিন পার্ককে এ ভাবেই সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর।
দফতর সূত্রে খবর, কাজ করবে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট (কেআইটি)। এ মাস থেকেই শুরু হয়ে যাবে কাজ। দু’টি পর্যায়ে কাজ হবে। প্রথম পর্যায়ের জন্য তিন কোটি আটত্রিশ লক্ষ টাকা ধার্য হয়েছে। তার মধ্যে এক কোটি সত্তর লক্ষ কেআইটি হাতে পেয়ে গিয়েছে।
কেআইটি-র নথি অনুযায়ী প্রায় ৩০০ কাঠা জমিতে চ্যাপলিন পার্ক গড়ে তোলার কথা ছিল। এই পার্ক নিয়ে ১৯৬৬ সালেই একটি স্কিম তৈরি হয়েছিল। ১৯৭০ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার তা অনুমোদনও করে। কিন্তু দখলদারি নিয়ে কিছু জটিলতার কারণে আটকে গিয়েছিল সেই প্রকল্প।
এখন কী অবস্থায় রয়েছে চার্লি চ্যাপলিন পার্ক? নজরদারির অভাবে পার্কের অনেকটা অংশই দখল হয়ে গিয়েছে। বাকি অংশে ইতস্তত গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি দোকান। মাঠের অনেকটা অংশে ঘাস উঠে গিয়েছে। যত্রতত্র পড়ে আবর্জনা। পুকুর থাকলেও তা নামে মাত্র। যেটুকু অংশে ঘাস রয়েছে সেখানেও অযত্ন স্পষ্ট। মাঠেই গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। অভিযোগ, স্থানীয় একটি স্কুলের গাড়ি এখানে পার্ক করা থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় অন্ধকার এই পার্কে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কাজকর্মও চলে। তাঁদের আরও অভিযোগ, এই নিয়ে বারবার পুলিশকে জানিয়েও বিশেষ লাভ হত না। অবশেষে পার্ক তৈরির সিদ্ধান্তে তাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন বাসিন্দারা। পার্কের কাছেই বাড়ি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘শহরের উপর এতটা জায়গা জুড়ে ফাঁকা এলাকা কোনও ভাবেই গাড়ি রাখার জন্য নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। তা ছাড়া বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজের জায়গাও হয়ে উঠছিল দিনে দিনে। তাই রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিলাম এখনই কিছু করার। না হলে পুরো পার্কটাই হাতছাড়া হয়ে যাবে।’’
পার্কের তিনশো কাঠা জায়গা যে পুরো ফেরত পাওয়া সম্ভব নয় তা মানছেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেন, ‘‘পার্ক তৈরি করতে বেশির ভাগ অংশ নিয়ে নেওয়া হবে। আগামী ছ’মাসের মধ্যে কাজ শেষের পরিকল্পনা রয়েছে। কাজ করবে কেআইটি। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা শুরু হবে। এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বেও থাকবে কেআইটি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy