প্রতীকী ছবি।
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বদলে দিল এক বৃদ্ধের মৃত্যুর কারণ। যার ভিত্তিতে ঘটনার প্রায় এক মাস পরে মৃত্যুর আসল কারণ জানা গেল।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১ মে ভোরে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার উচ্ছেপোতায় রাস্তার পাশ থেকে মাথা ও মুখ থেঁতলানো অবস্থায় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের অনুমান ছিল, কোনও গাড়ির ধাক্কায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার দিন সাতেক পরে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, শ্বাসরোধ করে খুন করে মৃতের মাথা ও মুখে আঘাত করা হয়েছিল। দেহের পাশ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়েছিল। যার সূত্র ধরে জানা গিয়েছিল, নারায়ণ হালদার (৬২) নামে ওই ব্যক্তি কসবা থানার রাজডাঙা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর দেহ শনাক্ত করেছিলেন পরিজনেরা।
ময়না-তদন্তের রিপোর্ট আসার পরে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে নরেন্দ্রপুর থানা ও বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপের অফিসারেরা। এক তদন্তকারী জানান, ৩০ মে ওই ব্যক্তির মোবাইলে আসা সমস্ত নম্বর যাচাই করা শুরু হয়। তাতেই উঠে আসে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার খেয়াদার বাসিন্দা মনোহর দাসের নাম।
তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, মনোহর নারায়ণের বেয়াই। আরও জানা যায়, দেহ উদ্ধারের আগের দিন নারায়ণ মনোহরের কাছে এসেছিলেন। প্রাথমিক জেরায় মনোহর জানান, নারায়ণ ওই রাতে তাঁর বাড়ি গিয়ে মদ্যপান করেছিলেন। তার পরে নিজের বাড়ি ফিরে যান তিনি। এর বেশি বলেননি মনোহর। কিন্তু তাঁর কথায় বিস্তর অসঙ্গতি পান স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপের অফিসারেরা। মনোহরের উপরে নজরদারি শুরু করেন তাঁরা। তদন্তকারীদের দাবি, কয়েক দফা জেরা করার পরে নারায়ণকে খুনের ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন মনোহর।
কিন্তু কেন নারায়ণকে খুন করলেন মনোহর? তদন্তে জানা যায়, বছর কয়েক আগে মনোহরের ছেলে নেপালের সঙ্গে নারায়ণের মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। এর পর থেকেই নেপালকে ঘরজামাই করে রেখে দেন নারায়ণ। নেপাল বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। নারায়ণকে মনোহর একাধিক বার অনুরোধ করেছিলেন, ছেলেকে তাঁদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাতে নারায়ণ আমল দেননি বলে অভিযোগ।
এর পরেই নারায়ণকে খুন করার মতলব আঁটেন মনোহর। মদের নেশা ছিল নারায়ণের। নানা জায়গায় বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করতেন তিনি। তদন্তকারীদের দাবি, সেই মদের টোপ দিয়ে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন মনোহর। খুন করার জন্য ৫০ হাজার টাকায় দু'জন ভাড়াটে খুনি জোগাড় করেন তিনি। আরও জানা যায়, ঘটনার দিন নারায়ণ, মনোহর ও দুই ভাড়াটে খুনি একসঙ্গে মদ্যপান করেন। বেশি মদ খাইয়ে বেহুঁশ করে দেওয়া হয় নারায়ণকে। ভাড়াটে খুনিরা প্রথমে গলা টিপে তাঁকে খুন করে। পরে দেহ রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ইট দিয়ে মাথা ও মুখ থেঁতলে দেয়। গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে, এমন প্রমাণ করতে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় দেহ।
খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার গভীর রাতে মনোহর এবং চিত্ত হালদার নামে এক ভাড়াটে খুনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য ভাড়াটে খুনির খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নিয়ে আরও জেরা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy