Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

নাক খুবলে ছ’মাস জেল শিক্ষকের

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত ২০০৪ সালের ৭ মার্চ সকালে। পূর্ব যাদবপুর থানার কবি সুকান্ত লেনের একটি বহুতলে ঢোকার রাস্তায় তালা লাগানো নিয়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৫৮
Share: Save:

কামড়ে নাকের ডগা খুবলে নেওয়ার দায়ে ছ’মাস জেল হল এক অধ্যাপকের। আলিপুর আদালতের বিচারক উত্তম দাস শুক্রবার অমিতেশ দাশগুপ্ত নামের ওই অধ্যাপকের এই সাজা দেন। তবে সাজার মেয়াদ দু’বছরের কম হওয়ায় ওই দিনই অধ্যাপক জামিনের আবেদন করেন এবং তা মঞ্জুর করে আদালত।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত ২০০৪ সালের ৭ মার্চ সকালে। পূর্ব যাদবপুর থানার কবি সুকান্ত লেনের একটি বহুতলে ঢোকার রাস্তায় তালা লাগানো নিয়ে। স্থানীয় প্রোমোটার সুশান্ত সরকার পুলিশকে জানান, অমিতেশবাবুর বাড়ি এবং বহুতলটি একই চত্বরে। তবে তাঁর বাড়িটি বহুতলের মেন গেটের বিপরীতে। ওই চত্বরের গেটে তিনি তালা লাগিয়ে দেওয়ায় বাসিন্দাদের বহুতলে ঢোকা বন্ধ হয়ে যায়। তা দেখে সেখানকার বাসিন্দা অমল রায় সুশান্তবাবুর ব্যবসার অংশীদার শান্তনু ভৌমিককে সেই খবর দেন। শান্তনুবাবু ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাঁর সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন অমিতেশবাবু। ওই প্রোমোটারের অভিযোগ, এক সময়ে তাঁর বন্ধু তথা অংশীদার শান্তনুর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন অমিতেশবাবু। শুধু তাই নয়, শান্তনুবাবুর নাক কামড়ে দেন তিনি। কামড়ের ফলে শান্তনুবাবুর নাকের কার্টিলেজ ছিঁড়ে মাংস খুবলে যায়।

পুলিশ জানায়, অরুণাংশু নামে স্থানীয় এক যুবককে সঙ্গে নিয়ে রক্তাক্ত শান্তনুবাবুকে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান সুশান্তবাবু। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে বাইপাসের ধারে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বেসরকারি হাসপাতালে শান্তনুবাবুর নাকে প্লাস্টিক সার্জারি করানো হয়।

পুলিশ জানায়, সুশান্তবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় অধ্যাপককে। দশ দিন জেলে কাটানোর পরে জামিন পান তিনি। ওই মামলার সরকারি কৌঁসুলি আজিজুর রহমান আদালতে জানান, শান্তনুবাবুর নাকের ক্ষত কত গভীর ছিল বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তার সাক্ষ্য দিয়েছেন। অমিতেশবাবু একটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত। সমাজের প্রতি তাঁর যথেষ্ট দায়িত্ব রয়েছে।

শাস্তি ঘোষণার আগে অধ্যাপকের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল বৃদ্ধা মাকে নিয়ে থাকেন। তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। ছেলের রোজগারের টাকাতেই সংসার চলে। তাঁকে যেন কম শাস্তি দেওয়া হয়।

বিচারক তাঁর রায়ে জানান, ঘটনার পরে ১৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে আগে দুষ্কর্মের কোনও অভিযোগ ওঠেনি। গত ১৫ বছরে তাঁকেও বিভিন্ন মানসিক চাপ ভোগ করতে হয়েছে। তিনি নিজেও ওই ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। পরে তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও অভিযোগ হয়নি। তিনি অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সব মাথায় রেখে তাঁকে ছ’মাস সাধারণ কারাবাস ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার সাজা দেওয়া হল। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস কারাবাস ধার্য হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Jail Professor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy