Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
B. B. D. Bagh Street Food

টক ডাল, পান্তাভাতে সুস্থ থাকার খোঁজ অফিসপাড়ার মেনুতেও

অফিসপাড়ার ফুটপাতে খাবারের দোকান চালানো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রাণান্তকর গরমে আশপাশের অফিস থেকে দুপুরে খেতে এলেও দূরের ক্রেতাদের দেখা নেই।

food.

ফুটপাতের দোকানে বিকোচ্ছে গরমের উপযোগী খাবার। ব্যাঙ্কশাল আদালতের কাছে।ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৪৭
Share: Save:

প্রবল দহনেও অফিসপাড়ায় ছেদ পড়েনি কাজে। ফলে দুপুরের খাওয়া সারতে অনেকেরই ভরসা ফুটপাতের খাবারের দোকানগুলি। তবে, শরীরের কথা ভেবে গরমের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে অফিসপাড়ার রান্নাতেও বদল আনছেন দোকানিরা। এমনকি, তাঁদের মেনুতে জুড়েছে গন্ধরাজ লেবু ও লেবুপাতা সহযোগে পান্তাভাতও!

প্রতি গ্রীষ্মেই সপ্তাহ দুয়েক এমন প্রবল গরম থাকে শহরে। কিন্তু এ বার যেন তা খানিক আগেই এসে হাজির। বি বা দী বাগের কয়লাঘাটে ভাতের দোকান চালানো নন্দিনী গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, দু’-এক দিনের মধ্যেই গন্ধরাজ লেবু ও লঙ্কা দিয়ে পান্তাভাতও মেনুতে যোগ করতে চলেছেন তিনি। নন্দিনীর কথায়, ‘‘এর মধ্যে এক দিন কলকাতার একটি রাজবাড়ি থেকে পান্তাভাতের বড় অর্ডার পেয়েছিলাম। রাজবাড়ির লোকজন পান্তা খেতে চাইছেন দেখে অবাকই হই। তবে মনে হয়, এই গরমে পান্তা খেয়ে স্বস্তিই পাবেন লোকজন। আমরা যারা দোকান চালাচ্ছি, তারা তো পান্তাই খাচ্ছি। তাই দু’-এক দিনেই চালু করব পান্তাভাত। লেবুর শরবত, কাঁচা আমের শরবতও থাকবে।’’

অফিসপাড়ার ফুটপাতে খাবারের দোকান চালানো বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রাণান্তকর গরমে আশপাশের অফিস থেকে দুপুরে খেতে এলেও দূরের ক্রেতাদের দেখা নেই। ফলে অফিসপাড়ার ‘ফুড স্ট্রিট’ এখন কিছুটা ফাঁকাই। কয়লাঘাটে ৪৫ বছর ধরে ভাতের দোকান চালানো, দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা এ এন টমাস বলছেন, ‘‘ক্রেতা কম হলেও উপকরণ তো আর কমানো যায় না। কারণ, ক্রেতার সংখ্যা কম-বেশি হতেই থাকে। তখন তাঁদের খাবার দিতে না পারলে তো তাঁরা আসাই বন্ধ করে দেবেন! ফলে না চাইতেও খাবার প্রচুর নষ্ট হচ্ছে।’’ অফিসপাড়ায় এখন গরমের উপযোগী খাবারই খুঁজছেন সকলে। তাই চাহিদা মেনে দোকানের মেনুতেও এসেছে পরিবর্তন। সেখানে এখন খোঁজ করলেই মিলছে কাঁচা আমের ডাল, আলু-ভাতে, শুক্তো, আলু-পোস্ত, এমনকি বিউলির ডালও। পেঁয়াজ-রসুনের কালিয়ার পাশাপাশি মিলছে আদা-জিরে বাটা ও পেঁপে দেওয়া চারা মাছের ঝোল। দেদার বিকোচ্ছে চিনি ও গুড়ের মুড়কি সহযোগে দই-চিঁড়ে মাখা, দইবড়া, কাঞ্জিবড়া এবং লস্যি।

ধর্মতলার ফুটপাতে অরুণ শাসমলের দোকানে এসে টক ডাল ও আলু-ভাতের খোঁজ করছিলেন এক বিমা এজেন্ট। অরুণের কথায়, ‘‘কয়েক দিন ধরে টক ডাল, আলু-ভাতে খেতে চাইছেন অনেকে। মাছের ঝোলের চেয়ে মাছভাজা বা মাছের ডিমের বড়া অনেকেই পছন্দ করছেন।’’

ব্যাঙ্কশাল আদালতের সামনে খদ্দের টানতে হাঁক পাড়ছিলেন বিরিয়ানি বিক্রেতা। দইবড়ার দোকানে দাঁড়ানো এক আইনজীবী সেই শুনে বললেন, ‘‘গরমে গায়ে জ্বালা ধরছে। এখন বিরিয়ানি খেলে বুক জ্বলবে। বৃষ্টি না পড়লে আর বিরিয়ানি নয়।’’ দইবড়া বিক্রেতা শ্যাম শর্মা বলছেন, ‘‘সব চেয়ে বেশি বিকোচ্ছে দইবড়া। গরমে দই শরীরের পক্ষে উপকারি। আমরা রাজস্থানের লোক। সেখানেও গরমে দই-ই খাই।’’ দুপুর ২টোর মধ্যেই তাঁর দইবড়ার বড় গামলা প্রায় শেষ।

তবে, গরমে হাসি চওড়া হয়েছে আখের রস, পুদিনা বা ছাতুর শরবত বিক্রেতাদের। ধর্মতলায় আখের রস বিক্রেতা রাম যাদব জানালেন, গরমে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আখ নিঙড়ে রস বার করা কষ্টসাধ্য হলেও পরিশ্রম গায়ে লাগছে না। রামের কথায়, ‘‘গলা ভিজিয়ে নিতে ক্রেতারা আসছেন। ব্যবসাও ভাল চলছে। তবে বৃষ্টি দ্রুত না হলে আমরাও বেশি দিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারব না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Food summer office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy