Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

‘শাসক কি ভূতের ভোট পেল? ভোট তো দিতেই পারিনি’

১২টি বুথের সিংহভাগেই ৭৯ শতাংশের কম ভোট পড়েনি তৃণমূলের পক্ষে। অথচ, গত শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে নিউ টাউন শহরের সিংহভাগ বাসিন্দাই ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

An image of Vote

সরব: পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না পারায় প্রতিবাদ বাসিন্দাদের। শনিবার, নিউ টাউনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ০৭:১২
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট দিতে না পেরে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে রাস্তায় নামলেন নিউ টাউনের আকাশছোঁয়া আবাসনের বাসিন্দারা। মিছিলে হাঁটলেন সাধারণ চাকরিজীবী, প্রাক্তন আমলা, ব্যবসায়ী-সহ সব ধরনের মানুষ। এমনকি, শহরের সব চেয়ে বড় দুর্গাপুজো, যেটি গত বছর থেকে শুরু হয়েছে, যেখানে সরকারি কর্তা-ব্যক্তিদের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে, সেটিও বয়কট করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

১২টি বুথের সিংহভাগেই ৭৯ শতাংশের কম ভোট পড়েনি তৃণমূলের পক্ষে। অথচ, গত শনিবার পঞ্চায়েত ভোটে নিউ টাউন শহরের সিংহভাগ বাসিন্দাই ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। সকাল থেকে পুলিশের গার্ডরেল রাস্তায় ফেলে ভোটারদের ফিরিয়ে দিতে দেখা যায় শাসক দলের সমর্থকদের। তা হলে এই বিপুল ভোট দিলেন কারা?

এ দিন সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাসিন্দারা। তোলেন পুনর্নির্বাচনের দাবিও। গণতন্ত্রকে ‘হত্যা করা হয়েছে’ বলে শাসক দলকে দায়ী করা হয়। এমনকি, নিউ টাউনে সব চেয়ে বড় যেদুর্গাপুজো গত বছর থেকে চালু হয়েছে, সেটিও বয়কট করা হবে কি না, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা জানান, ওই পুজোর সঙ্গে জড়িত বাসিন্দাদের একটি বড় অংশ ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সেই বয়কটের হোর্ডিং দেখিয়ে শাসক দলের সমর্থকেরা মানুষকে শাসানি দিয়ে, মারধর করে, ফোন ভেঙে দিয়ে বুথের আশপাশে ঘেঁষতে দেননি।

জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতের অধীন ২৩ থেকে ৩০ নম্বর আসনের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল শহর নিউ টাউন। এ পি জে আব্দুল কালাম কলেজে ১২টি বুথের সিংহভাগ ছিল। অভিযোগ, সেই কলেজের চার দিকের তিন-চার কিলোমিটার জুড়ে পুলিশের গার্ডরেল ফেলে আটকে দেওয়া হয়েছিল। বিক্ষোভকারীরা জানান, ফলাফলে দেখা গিয়েছে, শাসক দলের প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় বিরোধীদের ভোট হাতে গোনা। বিক্ষোভে যোগ দেওয়া বেসরকারি সংস্থার কর্মী রুদ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ভোটের দিন বুথে গিয়ে বয়স্করাও নিগৃহীত হয়েছেন। জনে জনে অভিযোগ করেছেন ভোট দিতে না পেরে। তা হলে এত বিপুল ভোট শাসক দলকে কি ভূতে দিল? তৃণমূলের সমর্থকেরাও অনেকেই ভোট না দিয়ে ফিরে এসেছেন।’’

আর এক বাসিন্দা রণজিৎ সাহা বলেন, ‘‘নিউ টাউনে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার শুনানি।’’ ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’র সম্পাদক সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘এখানে পুনর্নির্বাচন চাই। বাসিন্দাদের ভোট দিতে দেওয়া হোক। যা ফল হবে, মেনে নেব। এই ফলাফল প্রকৃত ভোটারদের ভোটে হয়নি। লুটের জন্য হয়েছে।’’ আবাসিকদের এই সমবেত বিক্ষোভের পরে সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেব বলেন, ‘‘শেষ বিধানসভা নির্বাচনে এখানে তৃণমূল তৃতীয় স্থানে ছিল। এ বারে লুট করে বিপুল ভোট পেয়েছে।’’ বিজেপির তরফে ভাস্কর রায় বলেন, ‘‘আমরা বিধানসভা নির্বাচনে নিউ টাউন শহরে প্রতিটি বুথে প্রথম স্থানে ছিলাম। এ বার তিনে নেমে গিয়েছি। তৃণমূল ছাপ্পা দেওয়ার সময়ে নিজেদের মুখ বাঁচাতে বিরোধীদের কিছু ভোট দিয়েছে। বাসিন্দারাই ভোট দিতে পারেননি।’’

যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সিপিএম এবং বিজেপি ওখানে নাগরিকদের উত্তেজিত করছে। সাধারণ মানুষের ভোটেই তৃণমূল জিতেছে। রাস্তায় গার্ডরেল ফেলে ভোটারদের কোথাও আটকানো হয়নি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy