ফাইল চিত্র।
বন্ধ স্কুল। দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে স্কুলগাড়িও। এই মুহূর্তে তাই বড় প্রশ্ন, পুজোর পরে স্কুল খুললে ওই গাড়িগুলি কি আদৌ পথে নামার যোগ্য থাকবে?
স্কুলগাড়ির মালিকেরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘ সময় ধরে না চলায় কোনও গাড়ির ব্যাটারি বসে গিয়েছে, কোনও গাড়ির আবার টায়ার খারাপ হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় নামাতে গেলে ফের মোবিল ভরাও দরকার। তাঁদের আশঙ্কা, ফের চাকা গড়ানোর প্রস্তুতিতে গাড়ি-পিছু ন্যূনতম আট থেকে দশ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। চালক ও মালিকেরা নিজেরাই জানাচ্ছেন, স্কুল বন্ধ থাকায় বহু গাড়িরই বেহাল দশা। রোজগার বন্ধ বলে তাঁদের আর্থিক সঙ্কটও প্রবল। এমন পরিস্থিতিতে গাড়ি সারিয়ে ফের পথে নামানোর কাজ যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্র্যাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কলকাতা এবং বৃহত্তর কলকাতা মিলিয়ে আমাদের প্রায় চার হাজার স্কুলগাড়ি চলে। সব গাড়িই দেড় বছর ধরে বসে। ফলে গাড়ির মালিক এবং চালকদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। স্কুল কবে খুলবে, কবে তাঁদের গাড়ি পথে নামবে, সেই দিকে চেয়ে আছেন তাঁরা।” হিমাদ্রিবাবু জানান, অনেক স্কুলগাড়ির চালক অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন। কেউ আবার চালক হিসেবে বিভিন্ন সংস্থায় নাম লিখিয়েছেন। স্কুল খোলা এখন করোনা আবহে অনিশ্চিত। ফলে আদৌ কত জন স্কুলগাড়ি চালানোর কাজে ফিরে আসবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
‘বেঙ্গল পুলকার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্য তপন ঘোষ জানাচ্ছেন, স্কুলগাড়ি কোনও বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের অনুমতি নেই। যার ফলে সেই সব গাড়ি অন্য কোনও কাজেও ব্যবহার করতে পারছেন না তাঁরা। এ দিকে, ছ’মাসের জন্য স্কুলগাড়ির পথকর মকুব করেছে সরকার। তাঁর প্রশ্ন, “ছ’মাস পরেও কি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে?”
স্কুলগাড়ি মালিকদের মতে, গাড়ির বিমার নবীকরণ করার টাকা অনেকের হাতেই নেই। যাঁরা নতুন গাড়ি কিনেছিলেন, তাঁদের ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতেই হিমশিম অবস্থা। সোমনাথ মজুমদার নামে এক চালক বলেন, “যে বাচ্চাদের সারা বছর স্কুলে নিয়ে যাই, গাড়ি না চলায় তাদের অভিভাবকেরা টাকা দেবেন না, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানবিক সাহায্য করতেও কেউ রাজি নন। তাই আমরা শুধুই অপেক্ষায়, কবে স্কুল খুলবে।”
স্কুলগাড়ির অবস্থা নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকেরাও। বৌবাজারের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রের অভিভাবক কৌশিক রায় বললেন, “ছেলের জন্য স্কুলগাড়িই ভরসা। ফলে গাড়িগুলো কী অবস্থায় আছে, তা এখন থেকেই খতিয়ে দেখা দরকার। গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি সারানো এবং জীবাণুনাশের ব্যবস্থা থাকাও জরুরি।”
তবে এই চিন্তা থেকে তুলনায় কিছুটা মুক্ত নিজস্ব গাড়ি রয়েছে, এমন স্কুল কর্তৃপক্ষ, তাঁদের চালক এবং অভিভাবকেরা। কারণ, অধিকাংশ স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, গাড়ির অবস্থা কেমন রয়েছে, তা পরীক্ষা হচ্ছে নিয়মিত। সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “স্কুল বন্ধ থাকলেও চালকদের নিয়মিত বেতন দিচ্ছি। ওঁরা মাঝেমধ্যেই স্কুলে এসে বাস স্টার্ট দিয়ে যান। স্কুলের আশপাশে বাস চালিয়েও আসেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy