Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Stagnant Water

Heavy rainfall: বন্ধ লিফট, বহুতলে ‘বন্দি’ সুখবৃষ্টির আবাসিকেরা

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানে ৬৪টি টাওয়ারের সব ক’টিতেই লিফট বন্ধ। এলাকার দোকান-বাজার বন্ধ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৪
Share: Save:

তাঁরা যেন মহাশূন্যে বন্দি! দশ, বারো বা চোদ্দোতলায় তাঁদের বসবাস। লিফট তাঁদের কাছে জরুরি পরিষেবার মতো। কিন্তু আবাসন চত্বরের জমা জল তাঁদের যেন আকাশের কাছাকাছি বন্দি করে রেখেছে। এমনই পরিস্থিতি নিউ টাউনের ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনের বাসিন্দাদের। ভুক্তভোগী প্রায় এক লক্ষ মানুষ।

গত রবি ও সোমবারের বৃষ্টির পরে নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া-৩ থেকে জমা জল পুরোপুরি নামেনি। সাপুরজি ও নিউ টাউন হাইটসের মতো বহুতলগুলির সামনে এখনও হাঁটুজল। চরম সমস্যায় ‘সুখবৃষ্টি’র বাসিন্দারা। প্রতিটি টাওয়ারই পনেরোতলা। লিফট ছাড়া ওঠানামা কার্যত অসম্ভব। জমা জলের কারণে লিফট বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে নীচে নামলেও সিঁড়ি ভেঙে ফিরতে গিয়ে প্রাণান্তকর অবস্থা হচ্ছে উপরের দিকের ফ্ল্যাটগুলির বাসিন্দাদের।

তাঁরা জানিয়েছেন, ওই আবাসনের একটিমাত্র টাওয়ারেই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বাসিন্দাদের হাতে রয়েছে। বাকি টাওয়ারগুলিতে সেই দায়িত্ব পালন করে নির্মাণ সংস্থা। তাই জল বার করে লিফট চালু করার দায়িত্ব সাপুরজি গোষ্ঠীর না এনকেডিএ-র— তা নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি।
এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘সুখবৃষ্টির ভিতরের জল ফেলার কথা সাপুরজি কর্তৃপক্ষেরই। তবে ওঁরা চাইলে আমরা সাহায্য করব।’’

‘সুখবৃষ্টি’র বাসিন্দা সুশান্তকুমার সেন জানালেন, প্রতিটি বহুতলেরই লিফটের ঘরে জল জমে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শর্ট সার্কিটের আশঙ্কায় লিফট বন্ধ। ১২-১৪ তলায় সিঁড়ি ভেঙে ওঠানামা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার অবস্থা হচ্ছে। জল জমে মিটারঘরেও। বাড়িতে বয়স্ক লোকজন রয়েছেন। তাঁদের শরীর খারাপ হলে ডাক্তার ডাকলেও তিনি সিঁড়ি ভেঙে অত উপরে উঠতে চাইবেন না।’’

বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানে ৬৪টি টাওয়ারের সব ক’টিতেই লিফট বন্ধ। এলাকার দোকান-বাজার বন্ধ। অনলাইনে খাবারের অর্ডার দিলেও মুশকিল। সরবরাহকর্মীরা সিঁড়ি ভেঙে অতটা উপরে উঠতে রাজি হন না। বাড়িতে আসছেন না পরিচারিকারাও। সিলিন্ডার ঘাড়ে নিয়ে উপরের তলায় উঠতে রাজি হচ্ছেন না গ্যাস সরবরাহের কর্মীরাও।

‘সুখবৃষ্টি’র বাসিন্দাদের ক্লাবের সভাপতি সুব্রতকুমার সাহা জানালেন, ওই আবাসনের বহু ফ্ল্যাটেই বাইরে থেকে পানীয় জলের জার কিনে আনা হয়। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমত, জল ভেঙে পানীয় জলের জার পৌঁছতে অনেক বেশি দাম চাওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া, যাঁরা জল দিতে আসছেন, তাঁরা দু’-একটি ফ্ল্যাটে জল পৌঁছেই হাঁফিয়ে পড়ছেন। আর উপরে উঠতে চাইছেন না।’’ বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার সংস্কারের কাজ এ পর্যন্ত এক বারও হয়নি। তাই এ ভাবে জল জমছে নিউ টাউনে।

‘সুখবৃষ্টি’র লিফট এবং মিটারঘরের জল কেন বার করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে আবাসনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সাপুরজি গোষ্ঠীর এক আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইমেল করতে বলেন। ইমেল করা হলেও উত্তর মেলেনি।

এনকেডিএ জানিয়েছে, ‘সুখবৃষ্টি’র পাশে আকন্দকেশরী গ্রামে খালের উপরে স্থানীয় বাসিন্দারা পারাপারের কালভার্ট তৈরি করায় জায়গাটি সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। তাই ওই জায়গায় জল বার করতে একটির বেশি পাম্প বসানো যাচ্ছে না। আপাতত ওই কালভার্ট ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এ দিন জলমগ্ন নিউ টাউনের রাস্তায় আবাসিকদের মাছ ধরার একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। তবে তার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Stagnant Water New Town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE