সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৭২ ঘণ্টা। যদিও পেরিয়ে গিয়েছে ২১৬ ঘণ্টা। কিন্তু শোকজ়ের উত্তর দেননি আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এর পরেও সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়নি। কিন্তু কেন? রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে এ বার এমনই প্রশ্ন তুলল চিকিৎসক মহলের বড় অংশ।
আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে সন্দীপকে শোকজ় করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিতে হবে। যদি তা দেওয়া না হয়, কিংবা সন্তোষজনক উত্তর না মেলে, তা হলে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। প্রশ্ন উঠেছে, দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর রেজিস্ট্রেশন সরাসরি বাতিল করা হচ্ছে না? তাতে মেডিক্যাল কাউন্সিলের ব্যাখ্যা ছিল, কোনও চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাতিল করতে হলে দু’টি কারণে তা করা সম্ভব। এক, কেউ যদি কোনও অপরাধমূলক কাজের চক্রান্ত কিংবা তাতে সরাসরি যুক্ত থাকার অপরাধে আদালতে দোষী প্রমাণিত হন এবং দুই, কোনও অপরাধমূলক কাজে নাম জড়ানোর ফলে জনসমাজে যদি বদনাম হয়ে থাকে। তবে দু’টি ক্ষেত্রেই শোকজ় না করে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা নিয়মবিরুদ্ধ। তাই সন্দীপকে শোকজ় করা হয়েছিল।
কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরেও তো সন্দীপ শোকজ়ের জবাব দেননি। উপরন্তু তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়া খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে সিবিআই গ্রেফতার করেছে সন্দীপকে। তার পরেও কেন প্রাক্তন অধ্যক্ষের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে গড়িমসি করছে কাউন্সিল? এই প্রশ্নই তুলতে শুরু করেছে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনও। সূত্রের খবর, দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই সন্দীপকে গ্রেফতারের পরে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার জন্য কাউন্সিলের সদস্য চিকিৎসক কৌশিক বিশ্বাস-সহ আরও কয়েক জন সরব হয়েছিলেন। দু’জন সদস্য চিঠি পাঠিয়ে দাবি করেছিলেন, সন্দীপ-সহ অন্যান্য অভিযুক্ত, যাঁরা কাউন্সিলের সদস্য পদে আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে ওই চিঠিকে তাঁদের পদত্যাগপত্র হিসাবে গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছিল।
কাউন্সিল সূত্রের খবর, শোকজ়ের কোনও জবাব সন্দীপ দেননি। এ বার কাউন্সিলের সভাপতি তথা বিধায়ক-চিকিৎসক সুদীপ্ত রায় বৈঠক ডাকবেন। সেখানে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেই খবর। অন্য দিকে, ইতিমধ্যেই কাউন্সিলের মূল কমিটি থেকে অভীক দে-কে বরখাস্ত করা হয়েছে। শাখা কমিটিগুলির মনোনীত সদস্য সন্দীপ, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, সেই সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে এত সময় লাগছে কেন? এ দিন সুদীপ্ত শুধু বলেন, ‘‘কাল (মঙ্গলবার) কিংবা বুধবার কাউন্সিলে যাব। গিয়ে ঠিক করা হবে, কবে কাউন্সিল-মিটিং হবে। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy