Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bike

পুলিশের নজর এড়িয়েই দিনভর বাইকের দৌরাত্ম্য শহরের রাস্তায়

মাঝেমধ্যে বাইক আটকে জিজ্ঞাসাবাদও চলে। কিন্তু তার পাশাপাশি নিয়ম ভাঙার একাধিক ছবিও ধরা পড়েছে।

বেপরোয়া: কোনও কোনও বাইকে সওয়ারি তিন জন, হেলমেট নেই কারও। এ ভাবেই দোলের দিন দাপিয়ে বেড়াল বাইকবাহিনী। রবিবার, বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে।

বেপরোয়া: কোনও কোনও বাইকে সওয়ারি তিন জন, হেলমেট নেই কারও। এ ভাবেই দোলের দিন দাপিয়ে বেড়াল বাইকবাহিনী। রবিবার, বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে।

চন্দন বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২১ ০৪:৪৯
Share: Save:

কোথাও একটি মোটরবাইকে তিন জন, কোথাও আবার চার জন। কারও মাথাতেই অবশ্য হেলমেট নেই। সিগন্যাল মানারও কোনও বালাই নেই। বেপরোয়া গতিতে চলছে বাইক। দিনভর এ ভাবেই শহরের রাস্তায় বিপজ্জনক ভাবে মোটরবাইক ছুটিয়ে চলল হুল্লোড়। রবিবার, দোলের দিন শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, সর্বত্রই দেখা গেল এই ছবি। বেলা যত বেড়েছে, শহরে ততই বেড়েছে বাইক-বাহিনীর দৌরাত্ম্য। শহরের বেশ কিছু জায়গায় পুলিশি নজরদারি থাকলেও অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ছিল ঢিলেঢালা। তবে রাস্তায় মত্ত বাইকচালকদের আটকাতে পুলিশি সক্রিয়তাও দেখা গিয়েছে। এ দিন শহরে বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ মোট ৩০৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৭.৬ লিটার মদ।

দোলের দিন কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আগেই লালবাজারের তরফে নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, মহিলাদের নিরাপত্তার দিকেও বিশেষ নজর রাখতে বলা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। বিভিন্ন ডিভিশনকে সেই বার্তা পাঠানো হয়। কিন্তু তার পরেও পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে শহর জুড়ে চলল বাইক-বাহিনীর দৌরাত্ম্য।

এ দিন শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বেপরোয়া বাইকচালকদের আটকাতে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল পুলিশের তরফে। মাঝেমধ্যে বাইক আটকে জিজ্ঞাসাবাদও চলে। কিন্তু তার পাশাপাশি নিয়ম ভাঙার একাধিক ছবিও ধরা পড়েছে।

এ দিন উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার, গিরিশ পার্ক ও কলেজ স্ট্রিটের পাশাপাশি দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর, রাসবিহারী মোড়, রুবি মোড়-সহ একাধিক জায়গায় পুলিশের নজরদারি চোখে পড়ে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছিল অতিরিক্ত বাহিনীও। কিছু জায়গায় নিয়ম ভাঙতে দেখলেই পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গিয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা যায়, পুলিশ সব দেখেও যেন কিছু দেখছে না। শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ, ‘‘উৎসবের দিনগুলিতে পুলিশের এই গা-ছাড়া মনোভাবের জেরেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বাইকচালকেরা। অনেক জায়গাতেই কোনও নিয়ম মানা হয় না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’’

একে দোল, তার উপরে রবিবার হওয়ায় রাস্তাঘাট এ দিন ফাঁকাই ছিল। কিন্তু বেলা বাড়তেই পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় দৌরাত্ম্য শুরু হয় হেলমেটহীন বাইকচালকদের। কোথাও কোথাও এক বাইকে তিন-চার জনকে বসিয়ে সিগন্যাল মা মেনেই চলে বিপজ্জনক দৌড়। অধিকাংশের মাথাতেই ছিল না কোনও হেলমেট। মত্ত অবস্থাতেও বাইক চালাতে দেখা দেয় দেদার। তবে মত্ত চালকদের আটকাতে ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি। বেসামাল অবস্থায় দেখলেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আটকও করা হয় বেশ কয়েক জন বাইকচালককে।

ধর্মতলা চত্বরে এক বাইকে চেপেই যাচ্ছিলেন তিন জন। প্রত্যেকেই রং মেখেছেন। হেলমেট না পরার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই উত্তর এল, ‘‘দোলের দিন আবার হেলমেট কিসের? এ সব দিনে পুলিশ তেমন কিছু বলে না। আর হেলমেট পরে কেউ রং খেলে নাকি!’’ বলেই বেপরোয়া গতিতে বাইক ছুটিয়ে চলে গেলেন তাঁরা।

উৎসবের দিনে শহরের একাংশের এই বেপরোয়া মনোভাব নতুন নয়। আগেও এই ছবি দেখা গিয়েছে। এ বছরের দোল উৎসবও তাঁর ব্যতিক্রম হল না। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘দোল উপলক্ষে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করার পাশাপাশি ঘাটেও নজরদারি চালানো হয়। কালও এই ব্যবস্থা থাকবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bike Rash Driving
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy