Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Medical College And Hospital Incident

সিআইএসএফ স্থায়ী সমাধান নয়, মত চিকিৎসকদের 

আর জি করের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সেই মামলার শুনানির সরাসরি সম্প্রচার দেখার জন্য ওই হাসপাতালের আন্দোলন মঞ্চে পর্দা টাঙানো হয়েছিল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:২০
Share: Save:

রাজ্য বা কলকাতা পুলিশ নয়। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে সিআইএসএফ। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ সামনে আসার পরেই নিরাপত্তার প্রশ্নে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার দিকটি ফুটে উঠেছে বলে দাবি করলেন চিকিৎসক মহলের বড় অংশ। তবে, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টিকে মান্যতা দিয়ে আর জি করে আন্দোলনকারী আবাসিক চিকিৎসকদের প্রশ্ন, ‘‘কত দিন এই নিরাপত্তা থাকবে? তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে যা ঘটেছে, তার নেপথ্যের কারণ স্পষ্ট না হলে এই নিরাপত্তা দিয়েও কি কোনও লাভ হবে?’’ আগামী ২২ অগস্ট তদন্তের গতিপ্রকৃতি জানাতে সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আপাতত, তত দিন পর্যন্ত কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হচ্ছে না বলেও জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।

আর জি করের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন সেই মামলার শুনানির সরাসরি সম্প্রচার দেখার জন্য ওই হাসপাতালের আন্দোলন মঞ্চে পর্দা টাঙানো হয়েছিল। সেই সম্প্রচার থেকেই জানা যায়, আর জি করের নিরাপত্তা দেবে সিআইএসএফ। মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র, পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, বিমানবন্দর থেকে কেন্দ্রীয় শিল্পাঞ্চলগুলিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে যে সশস্ত্র বাহিনী থাকে, তারা এলে কি সুরক্ষার বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত হবেন? আন্দোলনকারী আবাসিক চিকিৎসকদের দাবি, তরুণী চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলেই অনেকের সন্দেহ। তা-ই যদি হয়ে থাকে, তা হলেও এখনও পর্যন্ত মাত্র এক জন অপরাধী গ্রেফতার হয়েছে। বাকিরা আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে এবং বাইরেও ঘুরে বেড়াচ্ছে। আন্দোলনকারীদের তরফে অনিকেত মাহাতো বলেন, ‘‘কর্মবিরতি তুলে নিয়ে কাজে যোগ দিলে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কী জবাব দেব? সিআইএসএফ মোতায়েন হলেও দোষীরা সকলে গ্রেফতার না হলে নিরাপত্তা কী ভাবে সম্ভব?’’

সুপ্রিম কোর্টে মামলায় এ দিন অংশ নিয়েছিল ‘প্রোটেক্ট দ্য ওয়ারিয়র্স’। চিকিৎসকদের ওই সংগঠনের আইনি সেলের চেয়ারম্যান অধীশ বসু বলেন, ‘‘১৪ অগস্ট রাতে হামলার পরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে যে সংশয় তৈরি হয়েছে, তা আদালতের গোচরে আনতেই প্রধান বিচারপতি আর জি করে সিআইএসএফ মোতায়েনের নির্দেশ দেন।’’ ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্‌থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘শহরতলির ওই হাসপাতালকে নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষমতা যে নেই রাজ্যের, সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল। তা হলে প্রান্তিক হাসপাতালে কী হবে? গত তিন বছরে প্রায় ৩৫০ চিকিৎসক বিভিন্ন হাসপাতালে নিগৃহীত হন।’’

‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস ও ‘মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার’-এর রাজ্য সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, ‘‘সিআইএসএফ মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত। কিন্তু দেশ তথা রাজ্যের কয়েক কোটি স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপত্তা সারা বছর ধরে কি কেন্দ্রীয় বাহিনী দেবে?’’ এই সমস্ত প্রশ্ন থেকেই বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে অস্থায়ী
ভাবে আর জি করের উত্তেজনাকে প্রশমিত করা যাবে। কিন্তু এটা স্থায়ী ব্যবস্থা হতে পারে না। সরকারকে ভাবতে হবে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়টি এবং হামলা থেকে হাসপাতালকে কী ভাবে সুরক্ষিত
রাখা যায়।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy