প্রতীকী ছবি।
সাত বছরের মামলা। সব মিলিয়ে শুনানি হয়েছে ৪১ বার। জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। কিন্তু তার পরেও বায়ুদূষণ রোধে প্রস্তাবিত ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ কত দূর বাস্তবায়িত হয়েছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়ে উঠতে পারেনি রাজ্য। যার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, ভোটব্যাঙ্কে পরিবেশের কোনও কদর নেই। তাই রিপোর্টেরও দেখা নেই!
অথচ ঘটনাপ্রবাহ বলছে, সাত বছর আগে ২০১৪ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালতে বায়ুদূষণের মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার প্রাথমিক নিষ্পত্তি হয় ২০১৬-র অগস্ট মাসে। নিষ্পত্তির সময়ে পরিবেশ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, পরের ছ’মাস অর্থাৎ ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে বায়ুদূষণ রোধে রাজ্যের পদক্ষেপ-সহ একটি ‘কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট’ জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার তা জমা না-দেওয়ায় ফের বিষয়টি উত্থাপিত হয় পরিবেশ আদালতে। শেষ পর্যন্ত গত বছরের অক্টোবরে পরিবেশ আদালত মামলার নিষ্পত্তি করে রাজ্যকে নির্দেশ দেয়, তার পরের ছ’মাসের মধ্যে দূষণ রোধে কী করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত সবিস্তার রিপোর্ট জমা দিতে। কিন্তু তার পরেও ওই রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়নি বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত। তাঁর কথায়, ‘‘আসলে ভোট-রাজনীতিতে পরিবেশ সংরক্ষণ, দূষণ রোধ— এ সবের কোনও দাম নেই। তাই ঠিক সময়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ারও বাধ্যবাধকতা নেই রাজ্যের। সে কারণেই পরিবেশ আদালতে ফের বায়ুদূষণের মামলা করেছি।’’ এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে রাজ্য পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘এটি আইনি বিষয়। ফলে এ ভাবে বলা সম্ভব নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’
পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, বায়ুদূষণ রোধে কী করণীয়, সে ব্যাপারে নানা সময়ে একাধিক বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ মতো দূষণের উৎস সন্ধানে ‘ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট’-কে (নিরি) নিয়োগও করা হয়েছিল রাজ্যের তরফে। গত বছরই নিরি তার চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। যার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে অ্যাকশন প্ল্যানও। এক পরিবেশকর্মীর কথায়, ‘‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হল, সেই পরিকল্পনার বেশির ভাগই বাস্তবায়িত হয়নি। অনেক কিছু আবার খাতায়কলমেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ফলে, দূষণ বেড়েছে নিজস্ব নিয়মে।’’
তবে এখানে একটি কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন অনেকে। তা হল, করোনা অতিমারির কারণে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকায় শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, সমগ্র বিশ্বেই বায়ুদূষণের হার কমেছে। কিন্তু সেই তথ্যের ভিত্তিতে সামগ্রিক বায়ুদূষণের পরিস্থিতি বিচার করাটা ভুল হবে। এক পরিবেশ-বিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘পরিবেশ কী রকম হওয়া উচিত, সেটা করোনা সংক্রমণের সময়ে বোঝা গিয়েছে। কিন্তু সেটা তো আর আদর্শ পরিস্থিতির উদাহরণ হতে পারে না। কারণ, জনজীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে চলা সম্ভব নয়। ফলে, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে দূষণের মোকাবিলা কী ভাবে করা সম্ভব, সেটা ঠিক করা জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy