Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

টাকার প্রশ্নে ‘বিভ্রান্তি’ গোরাবাজার সংস্কার নিয়ে

২২ জানুয়ারি বিধ্বংসী আগুনে ছাই হয়ে যায় পুর-বাজারের সব দোকান। পুরসভা সূত্রের খবর, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির স্বাস্থ্য যাচাইয়ের ভার কেএমডিএ-র (কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) ইঞ্জিনিয়ারদের দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

গোরাবাজারে চলছে সাফাইয়ের কাজ। ফাইল চিত্র।

গোরাবাজারে চলছে সাফাইয়ের কাজ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১৪
Share: Save:

কী করতে হবে জানা। কী ভাবে হবে, তার সদুত্তর নেই। গোরাবাজারের সংস্কার নিয়ে আপাতত এমনই ‘দোলাচলে’র সম্মুখীন দমদম পুরসভা।

২২ জানুয়ারি বিধ্বংসী আগুনে ছাই হয়ে যায় পুর-বাজারের সব দোকান। পুরসভা সূত্রের খবর, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির স্বাস্থ্য যাচাইয়ের ভার কেএমডিএ-র (কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি) ইঞ্জিনিয়ারদের দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা বাড়িগুলিকে ‘বিপজ্জনক’ চিহ্নিত করেছেন। পুর কর্তৃপক্ষকে সেই পর্যবেক্ষণের কথা জানানোও হয়েছে।

কেএমডিএ সূত্রের খবর, বাজারে কতখানি জায়গা আছে তা মেপে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট পুর কর্তৃপক্ষকে জমা করতে বলা হয়েছে। তার ভিত্তিতে বহুতল গড়তে কত টাকা খরচ হবে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হবে। পুরনো বাড়ি ভেঙে নতুন নির্মাণে আনুমানিক ৪০ কোটি টাকা খরচ হবে। টাকা কোথা থেকে আসবে তা নিয়ে ‘আতান্তরে’ পুরসভা। কেএমডিএ সূত্রের খবর, পুরসভার কাছে তিনটি পথ খোলা। প্রথমত খরচের অর্থ নগরোন্নয়ন দফতর এবং পুরসভা ভাগ করে নিতে পারে। দ্বিতীয়ত খরচের অর্থ ঋণ হিসাবে নিতে পারেন পুর কর্তৃপক্ষ। তৃতীয় বিকল্প হল পিপিপি মডেল (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ)।

পুরসভা সূত্রের খবর, ৪০ কোটি টাকার কিছুটাও বহন করতে অক্ষম দমদম পুরসভা। দ্বিতীয় পথ বাছলে, বিশাল সুদ দেওয়ারও সামর্থ্যও নেই। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুর হাসপাতালের জন্য দু’কোটি টাকা ঋণ করেছিল দমদম পুরসভা। তা শোধ দিতে গিয়েই নাস্তানাবুদ দশা।’’ আর পিপিপি মডেলের পথে হাঁটলে ব্যবসায়ীদের সমর্থন মিলবে কি না, তা ভাবাচ্ছে। কারণ, এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ কার হাত ধরে হবে তা দেখে নিতে চান ব্যবসায়ীদের একাংশ।

শনিবার বাজারের চারটি ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক ছিল পুর কর্তৃপক্ষের। পুরসভা সূত্রের খবর, কেএমডিএ’র পর্যবেক্ষণ জানিয়ে ব্যবসায়ীদের মতামত চাওয়া হয়েছে। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘পুরসভার বক্তব্য, বাজার পুরো না ভেঙে মেরামতির কথা বললে আমাদের লিখিত দিতে হবে। পুরসভা কোনও দায় নেবে না। নতুন করে বাজার তৈরি করতে অন্তত দেড় বছর সময় লাগবে। তত দিন বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে, তা-ও ভাবতে হবে।’’ ব্যবসায়ীদের একাংশের প্রশ্ন, ‘‘আগুনের কারণ খুঁজে বার করার কথা বলেছিলেন মন্ত্রীরা। তার কী হল?’’

পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ড বলে নয়। পুর বাজারের বাড়িগুলির অবস্থা খুব খারাপ। ভাঙা ছাড়া রাস্তা নেই। একাধিক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত নেবে পুরসভা। চাইলে কেএমডিএ-কে বাদ দিয়ে অন্য কোনও সংস্থাকে দিয়েও পুরসভা সংস্কার করতে পারে! তবে আয়ের সংস্থান যাতে হয়, সেটা দেখতে বলেছি।’’ পুরপ্রধান হরীন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘পুরসভার একার উদ্যোগে কিছু করা অসম্ভব। কেএমডিএ বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরির জন্য একটা সমীক্ষা করতে বলেছে। এই কাজটিকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছি। অর্থের সংস্থান, ব্যবসায়ীদের বিকল্প বসার জায়গা তার পরের বিষয়। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আরও একাধিকবার বসতে হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE