বহাল তবিয়তে: বিজয়ার শুভেচ্ছা-সহ তোরণ রয়েছে আমহার্স্ট স্ট্রিটে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
দুর্গাপুজো মিটে গিয়েছে অক্টোবরের গোড়ার দিকে। এখন ডিসেম্বর মাস। তবু কলকাতার রাস্তায় রয়ে গিয়েছে পুজোর হোর্ডিং। উত্তর থেকে দক্ষিণ, শহরের বিভিন্ন রাস্তায় সেই সমস্ত হোর্ডিং এখন চক্ষুপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু হোর্ডিংই নয়, রাস্তা দখল করে রয়েছে তোরণও। যা দৃশ্যদূষণের পাশাপাশি দুর্ঘটনারও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কালীপুজো হয়ে গিয়েছে দেড় মাসেরও বেশি আগে। কিন্তু রাজা রামমোহন রায় সরণিতে এখনও রয়ে গিয়েছে একটি বিখ্যাত কালীপুজোর হোর্ডিং। শুধু হোর্ডিং নয়, রয়ে গিয়েছে তোরণও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা জুড়ে থাকা ওই তোরণের জন্য যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ওই তোরণে তৃণমূলের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীর পাশাপাশি স্থানীয় ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী ও ওয়ার্ড সভাপতি পিয়াল চৌধুরীর ছবিও রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পিয়াল বলেন, ‘‘বড়দিন মিটলেই তোরণ খুলে ফেলা হবে।’’ যা শুনে এলাকাবাসীর প্রশ্ন, পুজোর তোরণ বড়দিন পর্যন্ত রেখে দেওয়া হবে কেন?
উত্তর কলকাতার চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে পুজোর অধিকাংশ হোর্ডিং সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগ দাবি করলেও এখনও বেশ কিছু জায়গায় হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। মহাত্মা গান্ধী রোড মেট্রো স্টেশনের কাছে, গিরিশ পার্ক মোড়ে, যোগাযোগ ভবনের সামনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ছবি-সহ হোর্ডিং এখনও জ্বলজ্বল করছে। বিবেকানন্দ রোডেও একাধিক জায়গায় পুজোর হোর্ডিং দৃশ্যদূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে এ ভাবেই রয়ে গিয়েছে প্রচুর বেআইনি হোর্ডিং।
ধর্মতলায় টিপু সুলতান মসজিদের উল্টো দিকে, একটি মিষ্টির দোকানের সামনেই ঝুলছে পুজোর হোর্ডিং। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে এখনও রয়ে গিয়েছে তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের হোর্ডিং। দক্ষিণ কলকাতার একাধিক জায়গা ঘুরেও একই ছবি চোখে পড়ল। এ জে সি বসু রোড ও রডন স্ট্রিটের মোড়ের কাছে তিন জায়গায় শারদীয়া, দীপাবলি ও ছটপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশাল তিনটি হোর্ডিং এলাকার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘তিনটি হোর্ডিং এখনও রয়ে গিয়েছে। কোনও কারণে হোর্ডিং ভেঙে পড়লে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’ গুরুসদয় দত্ত রোডে আবার চোখে পড়ল বিশাল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের হোর্ডিং। পুরসভা সূত্রের খবর, তাদের অনুমতি ছাড়াই এই সমস্ত হোর্ডিং বসানো হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, রবীন্দ্র সরোবরের আশপাশে কোনও হোর্ডিং লাগানো নিষিদ্ধ। কিন্তু সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের পাশে, রবীন্দ্র সরোবরের রেলিংয়ের গায়েই কালীপুজোর হোর্ডিং এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের একাধিক জায়গায় অবৈধ হোর্ডিং দেখা গিয়েছে। শরৎ বসু রোড ও সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের মোড়ে দেখা গেল, স্থানীয় বিধায়ক তথা মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমারের বিশাল ছবি-সহ কাটআউট। তাতে লেখা, ‘দেবাদা দিচ্ছে সবুজ বাজি, বন্ধ হচ্ছে শব্দবাজি’। ওই ছবির দু’পাশে এখনও রয়ে গিয়েছে পুজোর হোর্ডিং। সেখান থেকে কিছুটা এগিয়ে সাদার্ন অ্যাভিনিউ ও লেক প্লেস রোডের মোড়ে স্থানীয় কাউন্সিলরের বিশাল হোর্ডিংয়ে নাগরিকদের পুজোর শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ওই এলাকাতেই দেখা গেল, সাদার্ন অ্যাভিনিউয়ের দু’পাশে বিশাল দু’টি হোর্ডিং। নজরুল মঞ্চে গত ১৮ অক্টোবর রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রের বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে ওই হোর্ডিং টাঙানো হয়েছিল। যা এখনও রয়ে গিয়েছে।
ভবানীপুরের রূপচাঁদ মুখার্জি লেনে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তার নামফলক ঢেকেই টাঙানো হয়েছে উৎসবের শুভেচ্ছা বিনিময়ের হোর্ডিং। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। রয়েছে তাঁর ছবিও। হাজরা মোড়েও দৃশ্যদূষণের ছবি বাদ যায়নি।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, পুজোর পরেই পুজোর সমস্ত হোর্ডিং সরিয়ে ফেলা হবে। তা হলে তা করা হল না কেন? মেয়র পারিষদ (বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘শহরের মূল রাস্তাগুলিতে কোনও হোর্ডিং নেই। যেগুলি রয়েছে, সেগুলির সংখ্যা খুবই নগণ্য। সেগুলিও শীঘ্রই সরিয়ে ফেলা হবে পুরসভার তরফে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy