ফাঁকা: রবিবার, মানিকতলা বাজারে। নিজস্ব চিত্র
পালংশাক কিনতে মানিকতলা বাজারে রবিবার সাত-সকালে হাজির হয়েছিলেন রমেন নাগ। সারা বাজার ঘুরেও তিনি মনের মতো পালংশাক পাননি। আবার লেক মার্কেটে বেগুন কিনতে গিয়ে ক্রেতারা দেখলেন পোকা ধরা বেগুন বিকোচ্ছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়।
বাজার সংগঠনের প্রতিনিধিদের দাবি, সবের পিছনেই রয়েছে বুলবুল। ওই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আনাজের দর আচমকা বেড়ে গিয়েছে। কারণ গত দু’দিন খারাপ আবহাওয়ার কারণে শহরের বিভিন্ন বাজারে প্রয়োজনের তুলনায় আনাজ আসেনি। শিয়ালদহের কোলে মার্কেটের সদস্য তথা রাজ্য সরকারের দ্রব্য মূল্য সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সদস্য কমল দে-র কথায়, ‘‘শনি ও রবিবার চল্লিশ শতাংশ করে আনাজ কম এসেছে বাজারে। এত কম আনাজ ঢুকলে শহরে বিভিন্ন বাজারে তার একটা প্রভাব তো পড়বেই।’’
ফেডারেশন অব ট্রেডার্স অর্গানাইজেশন অব ওয়েস্টবেঙ্গল-এর সাধারণ সম্পাদক তারকনাথ ত্রিবেদীর আবার বক্তব্য, ‘‘বুলবুলের প্রভাবে বিভিন্ন জেলায় প্রচুর আনাজ নষ্ট হয়েছে। আগামী দিনে আনাজের দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
বাগমারি বাজারে এক ক্রেতা শ্যামল জানা বিরক্ত হয়েই রবিবার বললেন, ‘‘পরে দাম কী হবে তার চেয়েও বেশি চিন্তার, আজ কী খাব? প্রতিদিন বাজারের বাইরে যত জন আনাজ নিয়ে বসেন, তাঁদের অর্ধেকই তো আজ আসেননি।’’ যদুবাবুর বাজারের বাজার করতে আসা রেশমী সামন্তের কথায়, ‘‘বাজারে কয়েক জন আনাজ বিক্রেতা এলেও মনের মতো কিছুই পেলাম না।’’
কোলে মার্কেটে গিয়ে দেখা গেল এক ব্যবসায়ী পাখা চালিয়ে বৃষ্টির পরে পেঁয়াজ শুকোনোর চেষ্টা করছেন। বাজারে আনাজের অভাবের কথা স্বীকার করে ফোরাম অব ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘দুর্যোগের জন্য মাঠ থেকে আনাজই তুলতে পারেননি কৃষকেরা। ফলে শনিবার থেকে আনাজের একটা বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে। শহরের অনেক বাজারে ভাল বেগুন নেই।’’
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা, পূর্ব মেদিনীপুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগের জেরে প্রচুর আনাজ নষ্ট হয়েছে বলে রাজ্য কৃষি দফতর সূত্রের খবর। ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজেশন-এর সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথবাবুও বলেন, ‘‘এই মরসুমে আনাজের দাম কমার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বুলবুলের জেরে বিভিন্ন জেলায় ফসলের যা ক্ষতি হয়েছে তাতে ফের আনাজের দাম বেড়ে যাবে।’’
বুলবুলের প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারেও। ডায়মন্ড হারবারের আড়তদার বিজয় সিংহের কথায়, ‘‘নামখানা, কাকদ্বীপ থেকে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ প্রতিদিন ধরা পড়ে। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে জেলেরা গত তিন দিন সমুদ্রে যেতে পারেননি। আড়তে মাছই নেই। ব্যবসাও মার খাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy