প্রতীকী ছবি।
‘বন্ধু’র উপরে অভিমান করে মঙ্গলবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ঘোষণা করেছিলেন, আত্মহত্যা করবেন। পুলিশি তৎপরতায় সেই আত্মহত্যা আটকানো সম্ভব হয়। বুধবার বিকেলেই ওই তরুণী স্বীকার করলেন, ‘বন্ধু’র ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তিনি লজ্জিত।
আগের রাতে ‘ফেসবুক লাইভ’ করে তাঁর আত্মহননের ঘোষণা নিয়ে তত ক্ষণে নেটপাড়া সরগরম। খবর পেয়ে তাঁকে বাঁচাতে যায় পুলিশ। তাতে আবার বিতর্কও দানা বাঁধে। তরুণীর অভিযোগ, পুলিশ তাঁকে মারধর ও অশালীন ভাবে স্পর্শ করেছে। ফেসবুকেও সে কথা লেখেন তিনি। তাঁর ফেসবুক-বন্ধুদের ফোন পেয়েই হস্তক্ষেপ করেছিল লালবাজার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা তরুণীর বাড়িতে উদ্ধারকারীদের পাঠায়। পুলিশের দাবি, ওই তরুণীর বাবা-মা তখন বাড়িতেই ছিলেন। তিনি চিকিৎসকের কাছে যেতে রাজি হচ্ছেন না দেখে মহিলা পুলিশকর্মীদের আনা হয়। তরুণীর দাবি, তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়িতে তোলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘জিপের পা রাখার জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছিল। আমার গায়ে পা দিয়ে ওঁরা বসেন।’’ পুলিশের বক্তব্য, রাতেই মহিলা কমিশনকে ঘটনার কথা জানানো হয়। স্থানীয় হাসপাতাল তরুণীকে এসএসকেএমের মনোরোগ বিভাগে দেখাতে বলেছে।
অল্প কিছু ঘুমের ওষুধ খেলেও ওই তরুণী ভাল আছেন বলেই হাসপাতালের দাবি। তরুণীর বক্তব্য, তিনি এক ধরনের দ্বৈত সত্তার শিকার। আগে ওষুধও খেতেন। এমনিতে ভাল মেজাজে থাকলেও কারও মনোযোগ না-পেলে বা ফোনে কারও সাড়া না-মিললে হঠাৎ রেগে গিয়ে কারও গায়ে হাত তুলতে পারেন বা ভাঙচুরও করতে পারেন। এ দিন বিকেলে তিনি বলেন, ‘‘আমার বন্ধু, জনৈক রেডিয়ো জকি-র ভাবমূর্তি নষ্ট করায় আমি অনুতপ্ত।’’
সম্প্রতি কসবার এক যুবক ফেসবুক পোস্টে ‘আমি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছি’ বলার পরে ফেসবুক কর্তৃপক্ষই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে রেললাইন থেকে উদ্ধার করে। সাইবার-বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ফেসবুক ও গুগ্ল ইদানীং আত্মহত্যা রুখতে সক্রিয়। কৃত্রিম মেধা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ও তথ্য বিশ্লেষণ করে কয়েকটি নির্দিষ্ট অ্যালগোরিদ্ম এবং হিসেব-নিকেশের সঙ্কেতকে চিহ্নিত করা হচ্ছে, যাতে কেউ আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক এমন আভাস পেলেই পদক্ষেপ করা যায়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার তরুণীর ক্ষেত্রে মঙ্গলবার রাত থেকে যা ঘটেছে, তাতে ইতিবাচক সঙ্কেতই পাচ্ছেন মনোরোগ চিকিৎসকেরা। মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রামের মতে, ‘‘আগে যৌথ পরিবারে আত্মীয় বা পড়শিদের যে কষ্টের কথাগুলো বলা যেত, এখন তা অনেকেই ফেসবুক বা অন্য নেটমাধ্যমে লেখেন। সবারই এমন একটা মন খুলে কথা বলার জায়গা পাওয়া জরুরি। এটা ভাল দিক।’’ তরুণীর বিষয়ে ফেসবুক থেকে জেনে পুলিশে খবর দেওয়ার মধ্যে ইতিবাচক দিকই দেখছেন জয়রঞ্জনবাবু। তরুণীর মানসিক অবস্থাকে সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখা উচিত বলে তিনি মনে করেন। তাঁর মতে, ‘‘এক ধরনের অসহায়তা থেকেই মেয়েটি মনোযোগ কাড়ার চেষ্টা করেছেন। ডাক্তারি পরামর্শে তাঁকে সারিয়ে তোলা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy