Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

গ্রামে গ্রামে ঘুরে মহিলাকে বাড়ি ফিরিয়ে দিল পুলিশ

কী ভাবে রাবিয়ার বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেল পুলিশ?

প্রত্যাবর্তন: তাঁর গ্রামের খোঁজ পাওয়ার পরে থানায় দুই আত্মীয়ের সঙ্গে রাবিয়া। নিজস্ব চিত্র

প্রত্যাবর্তন: তাঁর গ্রামের খোঁজ পাওয়ার পরে থানায় দুই আত্মীয়ের সঙ্গে রাবিয়া। নিজস্ব চিত্র

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০২:১৭
Share: Save:

ব্যস্ত রাস্তার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক মহিলা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মহিলা অফিসার-সহ পুলিশবাহিনী। কথা বলে তাঁরা বুঝতে পারেন, মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। কোনও কথাই ঠিক করে বলতে পারছিলেন না তিনি। উদ্ধার করে থানায় শুশ্রূষার পরে মহিলা কোথায় থাকেন জানতে চাইলে তিনি শুধু ‘শিমুলে’ শব্দটি বলেছিলেন। পরিবারের কারও নাম দূরে থাক, নিজের নামটাও তিনি বলতে পারছিলেন না। ওই ‘শিমুলে’ শব্দটি ধরেই সারা রাত বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলাকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিল ময়দান থানার পুলিশ।

লালবাজার সূত্রের খবর, ওই মহিলার নাম রাবিয়া বিবি (৪২)। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা থানা এলাকার শিমুলিয়া গ্রামে। সোমবার বিকেলে ময়দান থানা এলাকার রেড রোড এবং মেয়ো রোডের সংযোগস্থল থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। সোমবার রাতেই দেগঙ্গা থানায় গিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুঁজে বার করে তাঁদের হাতে রাবিয়াকে তুলে দিয়েছেন ময়দান থানার দুই সাব-ইনস্পেক্টর শ্রাবন্তী ঘোষ এবং উত্তম হালদার। সোমবারই দেগঙ্গা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন রাবিয়া। পরিবারের সদস্যেরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রাবিয়া মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর চিকিৎসা চলছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরা।

কী ভাবে রাবিয়ার বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পেল পুলিশ?

তদন্তকারীরা জানান, সোমবার বিকেলে তাঁরা খবর পান যে রেড রোড এবং মেয়ো রোডের সংযোগস্থলের কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক মহিলা। কখনও কখনও রাস্তার মধ্যে চলে যাচ্ছেন তিনি। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ভেবে ময়দান থানার ওই দুই সাব-ইনস্পেক্টর বাহিনী নিয়ে সেখানে যান। মহিলার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে লাভ হয়নি। এর মধ্যেই মহিলার অসংলগ্ন কথা শুনে জনৈক পথচারী পুলিশকে জানান, মহিলা উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট-দেগঙ্গা এলাকার স্থানীয় ভাষার টানে কথা বলছেন। এর পরেই পুলিশ মহিলাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে সন্ধ্যা নাগাদ মহিলা শুধু বলেন, ‘শিমুলে’।

পুলিশ জানায়, ‘শিমুলে’ শব্দটি শোনার পরে তদন্তকারীরা ইন্টারনেটে সার্চ শুরু করেন। একই সঙ্গে ওই পথচারীর কথা মাথায় রাখা হয়। দেখা যায়, মধ্যমগ্রাম, বেড়াচাঁপা, শাসনে ওই নামে গ্রাম রয়েছে। কিন্তু ওই সব থানায় যোগাযোগ করে রাবিয়ার পরিবারের খোঁজ মেলেনি। এক পুলিশকর্তা জানান, এর পরেই ঠিক হয় স্থানীয় ভাবে ওই সব গ্রামে গিয়ে রাবিয়ার পরিবারের খোঁজ করা হবে। সেই মতো রাতে প্রথমে যাওয়া হয় শাসন এবং মধ্যমগ্রামের শিমুলি গ্রামে। রাত বারোটা নাগাদ মধ্যমগ্রামের শিমুলি গ্রামে পুলিশ পৌঁছলেও গ্রামবাসীরা রাবিয়ার পরিবারের খোঁজ দিতে পারেননি। তবে সেখানকার লোকজন জানান, কিছুটা দূরে দেগঙ্গায় ওই নামে একটি গ্রাম রয়েছে। রাবিয়াকে নিয়ে পুলিশের দলটি রাত একটা নাগাদ ওই গ্রামে পৌঁছয়। স্থানীয় থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে ময়দান থানার পুলিশের দলটি। তাতেই জানা যায়, রাবিয়ার বাড়ি ওই গ্রামেই। এর পরেই রাবিয়ার দাদা আবদ্দুল্লা মণ্ডল দেগঙ্গা থানায় এসে পৌঁছন রাত দেড়টা নাগাদ। তাঁর হাতে বোনকে তুলে দেয় পুলিশের দলটি।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy