বাজেয়াপ্ত: উদ্ধার হওয়া অস্ত্র।
ফের একই এলাকায় অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল। মাস ছয় আগেও দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগর এলাকায় দু’টি কারখানার খোঁজ মিলেছিল। সিআইডি গোয়েন্দাদের হানায় সোমবার রাতে রবীন্দ্রনগর থানা এলাকারই বিধানগড়ে খোঁজ মিলল আরও একটি অস্ত্র কারখানার।
সোমবারের পুলিশি তল্লাশিতে সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে ম্যাগাজিন ভর্তি ৩৮টি সেভেন পয়েন্ট সিক্স পিস্তল, অতিরিক্ত ৩৮টি ম্যাগাজিন এবং গ্যাস কাটার ও লেদ মেশিন-সহ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই দিনই গ্রেফতার করা হয়েছে মনিরুল আলম ও মহম্মদ নজরুল নামে দুই ব্যক্তি এবং ওই বাড়ির মালিক গৌতম রায়কে। গোয়েন্দা কর্তাদের কথায়, মনিরুল ও নজরুল মূলত অস্ত্র কারখানার তদারকি করতেন।
জেরায় ধৃতেরা জানায়, বিধানগড়ে তৈরি প্রতিটি পিস্তল ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি হতো। একটি কিনলে একটি ফ্রি-র মতোই পিস্তল পিছু দেওয়া হতো একটি ম্যাগাজিন। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এই কারখানা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া ও মালদহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পিস্তল বিক্রি করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, ধৃতদের জেরা করে স্থানীয় এজেন্টদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
সিআইডি সূত্রের খবর, মাস সাতেক আগে গৌতম রায়ের ওই দোতলা বাড়ির একতলা মাসিক ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া অস্ত্র ব্যবসায়ীকে ইমাদুল শেখকে জেরা করে রবীন্দ্রনগরের এই কারখানার খোঁজ মেলে বলে দাবি করছেন তদন্তকারীরা।
এক তদন্তকারীর কথায়, প্রায় চার মাস আগেই এই কারখানার হদিস মিলেছিল। তখন বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুঙ্গের থেকে অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম নিয়ে আসা হচ্ছিল। গত জানুয়ারিতে ভিকি ওরফে মহমম্দ জামিরুল গ্রেফতারের পরেই নড়েচড়ে বসেন তদন্তকারীরা। ইনস্পেক্টর কৃষ্ণেন্দু ঘোষের নেতৃত্বে একটি দল কারখানার উপর নজরদারি চালাতে শুরু করে।
ছ’মাস আগেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ হদিস পেয়েছিল রবীন্দ্রনগরের দু’টি অস্ত্র কারখানার। তার পরেও কী ভাবে একই এলাকায় খোলা হল অস্ত্র কারখানা? তদন্তকারীদের দাবি, মুঙ্গেরের প্রায় ৫০ জন অস্ত্র ব্যবসায়ী দক্ষিণ শহরতলির রবীন্দ্রনগর, মেটিয়াবুরুজ মহেশতলা এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছেন। যাতে কোনও সন্দেহ না হয়, আপাতদৃষ্টিতে শান্ত জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে অস্ত্র কারখানা খুলেছে তারা। মুঙ্গের অস্ত্র কারখানার জাল এখানে কতটা ছড়িয়েছে তা ধৃতদের জেরা করে খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
গোয়েন্দা কর্তাদের বক্তব্য, জাল অনেক দূর ছড়িয়ে রয়েছে। একাধিক অস্ত্র ব্যবসায়ী জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের অস্ত্র পাচারে যুক্ত হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy