Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
arrest

arrest:  হাজতের সামনে ‘গ্যাং ওয়ার’-এর মূল চক্রী ধৃত কৈখালির ফ্ল্যাটে

৯ সেপ্টেম্বর খাস কলকাতায় ঘটা এই ঘটনার তদন্তে নেমে অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে মূল অভিযুক্ত সোনা পাপ্পুকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:০৫
Share: Save:

খুনের চেষ্টার পুরনো একটি মামলায় সদ্য জামিন পাওয়া দুষ্কৃতীকে শেষ করে দেওয়ার লক্ষ্যে আগ্নেয়াস্ত্র, চপার, লাঠি, ইট, পাথর নিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সামনে তাণ্ডব চালিয়েছিল আর এক দুষ্কৃতী গোষ্ঠী। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে পড়ায় আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে চম্পট দেয় তারা! গত ৯ সেপ্টেম্বর খাস কলকাতায় ঘটা সিনেমার দৃশ্যের মতো এই ঘটনার তদন্তে নেমে অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে মূল অভিযুক্ত সোনা পাপ্পুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতকে শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, পুরনো একটি খুনের চেষ্টার মামলায় শিয়ালদহ আদালত জামিন দিয়েছিল কসবার দুষ্কৃতী মুন্না পান্ডেকে। গত ৯ সেপ্টেম্বর তার হাজত থেকে বেরোনোর কথা ছিল। সেই দিন দুপুরে জনা ষাটেক ছেলে নিয়ে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সামনে পৌঁছে যায় মুন্নার বহু দিনের ‘শত্রু’ বিশ্বজিৎ পোদ্দার ওরফে সোনা পাপ্পু। মুন্না বেরিয়ে আসতেই তার উপরে আগ্নেয়াস্ত্র, চপার, লাঠি, ইট, পাথর নিয়ে হামলা শুরু করে তারা। এমন কিছু ঘটতে পারে বলে আগাম খবর ছিল লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার কাছে। তাদের পাশাপাশি কসবা থানার বিশাল পুলিশবাহিনীও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকা ঘিরে ফেলে। এর পরে পাপ্পুর বাহিনীর সঙ্গে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় পুলিশের। দ্রুত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সংশোধনাগারের পাশের ডি এল খান রোড। পাপ্পুর দলের প্রায় ২৫ জনকে ঘটনাস্থলেই ধরে পুলিশ। তবে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে আখতার আলি নামে এক সহযোগীকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে পালায় পাপ্পু।

ওই ঘটনার পর থেকেই ফেরার ছিল সে। ধৃত ২৫ জনকে আদালত ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এর পরে পাপ্পুর খোঁজে একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে কৈখালি এলাকার একটি ফ্ল্যাটে সে রয়েছে বলে নিশ্চিত খোঁজ মেলে। রাতেই গুন্ডাদমন শাখার বিশেষ দল ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে পাপ্পুকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার পাশাপাশি অস্ত্র আইনেও মামলা রুজু করা হয়েছে। তার কাছ থেকে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার হয়েছে বলে খবর।

পুলিশ সূত্রের খবর, কসবার সুইনহো লেনের জাহাজবাড়ি এলাকা থেকে উঠে এসেছে পাপ্পু। বছর দশেক আগেও বাবার পিকনিক গার্ডেনের সোনার দোকানে সে কাজ করত। সেই থেকেই তার নাম সোনা পাপ্পু। কিন্তু কয়েক জনকে নিয়ে এর পরে কসবা এলাকায় সিন্ডিকেটের ব্যবসায় নামে সে। দ্রুত ওই এলাকা তার দখলে চলে আসে। এক পুর কোঅর্ডিনেটরের ছায়াসঙ্গী হিসেবেও দেখা যেত তাকে। অভিযোগ, পাপ্পু স্পষ্টই বলত, পুর কোঅর্ডিনেটরকে জেতাতে সে-ই টাকা ঢেলেছে। সেই টাকা তুলতে বেআইনি নির্মাণে হাত পাকাতে হচ্ছে। ওই সিন্ডিকেটের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই মুন্নার সঙ্গে তার বিবাদের শুরু। এর মধ্যেই ২০১৭ সালে সুইনহো লেনে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে পলাশ জানা নামে এক যুবক খুন হন। সেই খুনের ঘটনায় সরাসরি নাম জড়ায় পাপ্পুর। বেশ কিছু দিন ফেরার থাকলেও অবশেষে জলপাইগুড়ির এক হোটেল থেকে পাপ্পুকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের গুন্ডাদমন শাখা। পরে সে জামিনে মুক্তি পেলেও খুনের চেষ্টা, ধর্ষণ এবং অস্ত্র আইনের একাধিক ধারায় তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। একাধিক মামলায় জেল খেটেছে মুন্নাও। কিন্তু বছরের পর বছর কাটলেও মুন্না আর সোনা পাপ্পুর শত্রুতা যে কমেনি, তা এই ঘটনাতেই স্পষ্ট।

অন্য বিষয়গুলি:

arrest Kolkta Police Presidency Jail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy