বাস কম। রাস্তায় দুর্ভোগ যাত্রীদের। ফাইল চিত্র।
আশঙ্কাই সত্যি হল। সোমবার সপ্তাহের প্রথম দিনেই চরম দুর্ভোগে পড়লেন যাত্রীরা। বাস পেতে নাকাল হলেন অফিস যাত্রীরাও। এ দিন সকাল থেকে প্রায় নামেইনি বেসরকারি বাস-মিনিবাস। বেহালা থেকে বেলঘড়িয়া, হাওড়া থেকে গাড়িয়া— সর্বত্রই ভোগান্তির ছবি ধরা পড়ছে। নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে বৃহত্তর কলকাতায় হাজার দেড়েক সরকারি বাস চলছে। বেসরকারি বাস-মিনিবাসও রাস্তায় বেশি সংখ্যায় নামছিল না। সাকুল্যে দু’হাজার। এ দিন তা-ও উধাও! সরকারি বাসে বাদুড়ঝোলা ভিড়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়েও দেখা মেনেনি বেসরকারি বাসের। ফলে এ দিন দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি কবে? প্রশ্ন যাত্রীদের।
ভাড়া জট তো ছিলই, তার উপর গত তিন সপ্তাহ ধরে লাগাতার ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির জেরে আরও সমস্যা বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে যত আসন, তত যাত্রী নিয়ে বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি বাস মালিকদের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার ৬ হাজার বাস-মিনিবাসকে ১ জুলাই থেকে তিন মাস ১৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু এই অনুদানকে বিভাজনের তকমা দিয়ে আরও বেঁকে বসেছেন বাস-মিনিবাস মালিকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কলকাতার ৬ হাজার গাড়ির মালিক এই অনুদান পেলে, বাকিরা কেন পাবেন না? জেলায় যাঁরা বাস চালান তাঁদের কি হবে?
এ দিন দুর্ভোগের ছবিটা কেমন? উল্টেডাঙ্গা মোড়ে প্রচুর মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও বাস পাননি। সরকারি যে বাস রাস্তায় দেখা গিয়েছে, তাতে ঠাসা ভিড়। বিধিনিষেধ কার্যত শিকেয়। করোনা আতঙ্ক ভুলে গন্তব্যে পৌঁছতে বাসা ওঠার চেষ্টা করে করেও, অনেকেই ব্যর্থ হয়েছেন। মৌলালি যাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন এক যাত্রী। তাঁর অভিযোগ, “এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও কোনও বাস পাইনি। যে বাস আসছে তাতে প্রচণ্ড ভিড়। এমন পরিস্থিতি কত দিন চলবে?”
ডানলপের চিত্রটাও অনেকটাই একই রকম। এমনিতেই সেখানে সরকারি বাস পেতে নাকাল হতে হয়। তার উপর এ দিন বাস উধাও হয়ে যাওয়ায় আরও সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরা। অফিসের ব্যস্ত সময় ৯এ বাস স্ট্যান্ডে লম্বা লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেত দেখা যায় যাত্রীদের। ওই এলাকায় দু’একটি বেসরকারি বাসের দেখা মিলেছে। তবে সেই বাসগুলির দরজা বন্ধ থাকায়, তাতে উঠতে পারেননি অনেকেই।
আনলক-১ ঘোষণার পর কর্মক্ষেত্রে খুলে গিয়েছে। বহু মানুষ কাজে বেরিয়ে পড়ছেন। কিন্তু রাস্তায় ভোগান্তি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে এ দিন একই ছবি। রুবি থেকে হাইল্যান্ড পার্কে, বেহালা, সল্টলেক, খিদিরপপুর, যাদবপুর-সহ সহ জায়গাতেই বাস-মিনিবাসের দেখা মেলেনি। দুর্ভোগের আশঙ্কা থেকে অনেককে সাইকেল নিয়েও বেরিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে। বারাসাতে বাসমালিকরা বিক্ষোভও দেখান। রাস্তায় বসে প্রতিবাদে সামিল হন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ট্যাক্সির ভাড়া বাড়লে কি মান বাড়বে পরিষেবার
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই. মালিকরা তো আর লোকসান নিয়ে বাস চালাবে না। ডিজেলির দাম ৭৫ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাসে যাত্রী হচ্ছে না। ভাড়া বাড়ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মাত্র ৬ হাজার বাস মালিককে অনুদানের কথা বলেছেন, বাকিরা কী করল? এই পরিস্থিতিতে বাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না।”
রাজ্যে এখনও লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা চালু হয়নি। অটো, ট্যাক্সি চললেও নিত্যদিন বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে এক মাত্র ভরসা বাস। তা-ও এ দিন না মেলায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: রাস্তা সারাই সেই বর্ষাতেই, ফের প্রশ্নের মুখে পুরসভা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy