ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে যুবতীর দেহের টুকরো। মূল ছবি: সারমিন বেগম। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত এলাকা থেকে যুবতীর দেহাংশ উদ্ধারের ঘটনায় ক্রমে রহস্য জট পাকছে। যুবতীর গোটা দেহ পাওয়া যায়নি। দেহের টুকরো টুকরো কিছু অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেহাংশগুলি তিনটি কালো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে রাখা ছিল। কে বা কারা যুবতীকে খুন করল, কখন, কী ভাবে দেহ ওই এলাকায় ফেলা হল, বাকি দেহাংশই বা কোথায়, প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার কোনও বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেহাংশগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার হওয়া কালো প্লাস্টিকের একটিতে যুবতীর কাটা মাথা রাখা ছিল। সেই মাথায় সিঁদুরও পরা ছিল। কপালে ছিল টিপ। এর থেকে পুলিশের অনুমান, যুবতী বিবাহিত ছিলেন। মাথার অংশ যে প্লাস্টিকে ছিল, তার মধ্যেই একটি ভারী ইটও রাখা ছিল। মনে করা হচ্ছে, ওই প্লাস্টিক নদীর জলে ডুবিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন দুষ্কৃতীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। কালো প্লাস্টিক থেকে যুবতীর হাত পাওয়া যায়নি। বুকের অংশ মিললেও মেলেনি পেট। অন্য একটি প্লাস্টিকে পুলিশ যুবতীর কাটা পা পাওয়া গিয়েছে। তবে পায়ের পাতা পাওয়া যায়নি। পুলিশ মনে করছে, আগে যুবতীকে খুন করা হয়েছে। তার পর তাঁর দেহটি টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে। তবে দেহের যে অংশগুলি পাওয়া গিয়েছে, তাতে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ছিল না কোনও পোশাকও। ময়নাতদন্তের পর অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে আছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, অন্য কোথাও যুবতীকে খুন করা হয়েছে। পরে দেহ আনা হয়েছে ওয়াটগঞ্জের পরিত্যক্ত এলাকায়।
দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হরিকৃষ্ণ পাই। হোমিসাইড শাখা এবং ডগ স্কোয়াডও ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছে। নিখোঁজ সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জমা পড়েছে কি না, সেই তালিকা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁরা কেউ কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখেছেন কি না, খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
পুলিশের তরফে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে তারা খবর পায়, ওয়াটগঞ্জের সত্য ডক্টর রোডে সিআইএসএফের পরিত্যক্ত ব্যারাকে অপরিচিত এক যুবতীর কাটা মাথা পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, তিনটি আলাদা প্লাস্টিকে মুড়ে দেহাংশ রাখা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যুবতীর পরিচয় জানা যায়নি। মাথার টিপ এবং সিঁদুর দেখে মৃতাকে হিন্দু বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুবতীকে খুনের মামলা রুজু করেছে। খুনের পাশাপাশি দেহ বিকৃত করা, প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগও যোগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy