যদি আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করে তাহলে প্রথমে কোথায় যাবেন পার্থ? — ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেলে প্রথম কোথায় যেতে চান? বৃহস্পতিবার মামলার শুনানির সময় আদালতে এসেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ। তখনই তাঁকে কিছু ঘনিষ্ঠ ওই প্রশ্ন করেছিলেন। প্রসঙ্গত, আগামী ২৩ মার্চ পার্থের জামিনের শুনানি রয়েছে। সে দিন পার্থ আদালতে কথা বলার জন্য দরবার করেছেন বিচারকের কাছে। যদি সেদিন বা তার পরে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়, তা হলে তিনি কি প্রথমেই তাঁর নাকতলার বাড়িতে যাবেন?
তৃণমূল বিধায়ক পার্থ জানিয়েছেন, নাকতলার বাড়িতে নয়। তিনি প্রথমেই যেতে চান তাঁর কেন্দ্র বেহালা পশ্চিমে, এমনই তাঁর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর। গত জুলাই মাসে নিয়োগ মামলায় পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তার পর থেকে জেলই ঠিকানা একদা তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিবের। নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র তো দূরঅস্ত, জেল থেকে আদালত, আবার আদালত থেকে জেল— এতেই সীমাবদ্ধ থাকছে পার্থের গতিবিধি। কখনও সখনও অসুস্থ হয়ে পড়লে সরকারি হাসপাতালে। নিরাপত্তার কথা ভেবে ইদানীং পার্থকে ভার্চুয়াল মাধ্যমেও আদালতে হাজির করানো হচ্ছে। ফলে জেলচত্বরের বাইরের আকাশ দেখার সুযোগও কম।
অন্য দিকে, তৃণমূলও ক্রমশ পার্থের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়েছে। দলের সমস্ত পদ কেড়ে নেওয়া হয়েছে একদা ‘হেভিওয়েট’ এই নেতার। যদিও তিনি বরাবরই তৃণমূলে প্রকাশ্য আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। বার বার বুঝিয়েছেন, দল তাঁকে দূরে ঠেললেও তিনি দলের পাশেই আছেন। বৃহস্পতিবারেও ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, তৃণমূলে ছিলেন, আছেন, থাকবেন।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার পার্থকে আদালত চত্বরে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা জানতে চেয়েছিলেন, জামিন পেলে সবচেয়ে আগে কোথায় যাবেন? প্রশ্নের মুখে প্রথমে খানিকক্ষণ থমকে যান পার্থ। তখন প্রশ্ন আসে, বাড়ি যেতে চাইবেন? এ বার মুখ খোলেন পার্থ। বলেন, ‘‘নিজের কেন্দ্রে যাব।’’ ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় ৫১ হাজার ভোটে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের পার্থ। কিন্তু জুলাইয়ের পর থেকে নিজের কেন্দ্রের সঙ্গে আর যোগাযোগ নেই এই বিধায়কের। তবে যে ভাবে বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে পড়েছেন তৃণমূলের অপসারিত মহাসচিব, তাতে তিনি কবে জামিন পাবেন, তা স্পষ্ট নয়।
বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের সঙ্গে পার্থের যোগ বেশ পুরনো। ২০০১ সালে প্রথম বার বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে তৃণমূলের ঘাসফুল প্রতীকে ভোটে জেতেন পার্থ। তার পর থেকে সেই কেন্দ্র থেকেই একটানা জিতে চলেছেন তিনি। ২০০৬-য়ে এই কেন্দ্র থেকেই জিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হন পার্থ। বিপুল জয় পান ২০১১-র পরিবর্তনের ভোটেও। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও এই বেহালা পশ্চিম থেকেই অনায়াস জয় পান পার্থ। শুধুমাত্র নিজের কেন্দ্রই নয়, বেহালা এলাকায় তৃণমূলের অন্যতম বড় সংগঠক হিসাবে কাজ করতেন তিনি। কিন্তু গত বছর ২৩ জুলাই নাকতলার বাড়িতে ইডির হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বেহালা পশ্চিমের সঙ্গেও সম্পর্কে ইতি পড়েছে পার্থের। সম্প্রতি তৃণমূলের জনসংযোগ কর্মসূচি ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’-য়েও বাদ পড়েন পার্থ। তাঁর কেন্দ্রে সেই দায়িত্ব কাউন্সিলরদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে পালন করেন দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার। যদিও বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে ঘনিষ্ঠদের কাছে সেই বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রেই সর্বপ্রথম যাওয়ার কথা জানালেন পার্থ। কিন্তু জামিন মিলবে কি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy