Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Accident

কেউ যদি ছেলের পাশে থাকতেন, আক্ষেপ বাবার

বুধবার মাঝরাতে কাজ থেকে ফেরার পথে যশোর রোডের রথতলায় বাইক দুর্ঘটনায় পড়েন রাহুল।

শোকস্তব্ধ: বারাসতের বাড়িতে রাহুল দাসের মা-বোন। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

শোকস্তব্ধ: বারাসতের বাড়িতে রাহুল দাসের মা-বোন। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩৭
Share: Save:

‘কেউ কি একটু মানবিক হতে পারতেন না?’

বারাসতের যশোর রোডে একাধিক গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত রাহুল দাসের পরিবার থেকে প্রতিবেশী, সকলের কাছে এটাই এখন একমাত্র আক্ষেপের বিষয়। শুক্রবার সকালে একমাত্র ছেলের কথা উঠতেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন রাহুলের বাবা-মা, বৃদ্ধ তারক দাস ও দীপা দাস। মেয়ে তৃষাকে বুকে জড়িয়ে ধরে সদ্য পুত্রহারা বাবা বললেন, ‘‘কেউ যদি গাড়ি থামিয়ে আমার ছেলেটাকে অন্তত হাসপাতালে পৌঁছে দিতেন, তা হলে হাত-পা ভাঙা অবস্থাতেও ও বেঁচে থাকত।’’

বুধবার মাঝরাতে কাজ থেকে ফেরার পথে যশোর রোডের রথতলায় বাইক দুর্ঘটনায় পড়েন রাহুল। রাস্তায় ছিটকে পড়েন বছর চব্বিশের ওই যুবক। তাঁর উপর দিয়ে প্রায় ৫০টি গাড়ি চলে যাওয়ায় ওই যুবকের শরীর রাস্তার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল বলে দাবি করেছিল পুলিশ। বৃহস্পতিবার ওই ছিন্নভিন্ন দেহের ময়না-তদন্ত হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, তার প্রাথমিক রিপোর্টেও বলা হয়েছে, একাধিক গাড়ি ওই যুবকের শরীর পিষে দিয়েছিল। বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘একাধিক ভারী গাড়ির চাকায় পিষেই যুবকের শরীরের এমন অবস্থা হয়েছিল।’’

তবে কোন গাড়ির সঙ্গে প্রথমে রাহুলের বাইকের ধাক্কা লেগেছিল ও তার পরে আধ ঘণ্টার মধ্যে কোন কোন গাড়ি তাঁকে পিষে দিয়েছিল, তা জানতে পারেনি পুলিশ। বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে গাড়িগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশের একাংশের দাবি, এমন হতে পারে, যে গাড়িটির সঙ্গে বাইকটির মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছিল সেটি লরি বা ট্রেলার ছিল। বাইক নিয়ে ছিটকে পড়লে রাহুলের শরীর প্রথমেই সেই ভারী গাড়ির চাকায় পিষে যায়। পরে অন্য গাড়ির চাকায় আরও পিষে যাওয়ায় শরীর কার্যত রাস্তায় মিশে গিয়েছিল।

রথতলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মধ্যমগ্রাম সিগন্যাল পার করার পরে বারাসত ডাকবাংলো মোড় পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পুরো ফাঁকা থাকে। ওই দূরত্বে কোথাও দাঁড়াতে হয় না বলে দ্বিগুণ গতিতে গাড়ি যাতায়াত করে। রাহুলের মৃত্যুতে শুক্রবারও শোকস্তব্ধ বামনগাছির কুলবেড়িয়া। বৃদ্ধ তারকবাবু এখন আর তেমন ভাবে অটো চালাতে পারেন না। রাহুলই ছিলেন একমাত্র রোজগেরে। তাঁর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী বোন তৃষার আক্ষেপ, ‘‘দাদা কথা দিয়েছিল, পরীক্ষায় ভাল ফল করলে ঘুরতে নিয়ে যাবে। কিন্তু ও নিজেই তো অনেক দূরে চলে গেল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Accident Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy