অনলাইনে নার্সারিতে ভর্তি নির্বিঘ্নেই, মত অভিভাবকদের
কোভিড আবহে অনলাইনে ক্লাসের মতো এ বার খুদে পড়ুয়াদের স্কুলে ভর্তির প্রক্রিয়াও হল অনলাইনে। নার্সারিতে ভর্তির জন্য ফর্ম দেওয়া থেকে খুদেদের ইন্টারভিউ, তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা,— সব কাজ অনলাইনেই সেরেছেন শহরের বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ। করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছু বাড়ি থেকে হয়ে যাওয়ায় খুশি অভিভাবকেরাও।
শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, তাঁদের নার্সারির ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোটাই অনলাইনে হয়েছে। আবেদনপত্র দেওয়া থেকে শুরু করে ওই স্কুলে ভর্তি করতে ইচ্ছুক অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা, খুদেদের সঙ্গে পরিচয় পুরোটাই হয়েছে অনলাইনে। ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘এ বার কর্মসূত্রে বাইরে থেকে বদলি হয়ে আসা অভিভাবকেরা অনেকেই তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভর্তির আবেদনটুকু অন্তত করতে পেরেছেন। এমনকি, অনলাইনে তাঁরা ইন্টারভিউও দিয়েছেন। ব্রততীদেবীর মতে, করোনার কারণে ভর্তি প্রক্রিয়া অনলাইনে করায় অনেকেই উপকৃত হয়েছেন। তাই ভবিষ্যতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলেও ভর্তির প্রক্রিয়া যাতে অনলাইনেও চালু রাখা যায়, সেই চিন্তাভাবনা করছেন তাঁরা।
তবে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া হলেও নার্সারির খুদেদের জন্য এটি কতটা সফল হবে, তা নিয়ে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানি বলেন, “অনলাইন ভর্তি খুবই সফল ভাবে হয়েছে। ইতিমধ্যেই নার্সারি ওয়ান এবং নার্সারি টু মিলিয়ে ৮৫০টি শিশুকে ভর্তি নিয়েছি। আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়া এক মাস আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। অনলাইন ভর্তিতে বরং সুবিধাই হয়েছে। যে সব অভিভাবক শহরের বাইরে আছেন তাঁরাও ইন্টারভিউ দিতে পেরেছেন।”
অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে পার্ক সার্কাসের ডন বস্কো স্কুলেও। স্কুলের প্রিন্সিপাল ফাদার বিকাশ মণ্ডল জানান, অনলাইনে তাঁরা অবশ্য অভিভাবক বা খুদেদের ইন্টারভিউ নেননি। শুধু আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে এবং সেখানে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লটারির মাধ্যমে পড়ুয়াদের বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রিন্সিপাল বলেন, ‘‘অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়ার জন্য হয়তো অভিভাবকেরা স্কুলে আসতে পারলেন না। স্কুল ঘুরে দেখতে পারলেন না। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তো ছোটদের স্কুলে ডাকাও যায় না।”
খুদে পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে না চেয়ে অনলাইনেই ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করেছেন রামমোহন মিশন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রিন্সিপাল সুজয় বিশ্বাস জানান, শুধু যে সব অভিভাবক অনলাইনে ইন্টারভিউ দিতে ইচ্ছুক নন বা স্বচ্ছন্দ ছিলেন না, তাঁদেরই শুধু স্কুলে ডাকা হয়েছে। তবে তাঁদের সন্তানকে সঙ্গে করে স্কুলে আনতে হয়নি। মর্ডান হাই স্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী কর বলেন, “নার্সারিতে ভর্তির জন্য খুদেদের মা-বাবার সঙ্গে স্কুলে আসার কথা বলা যাবে না। তাই অনলাইনেই ভর্তি প্রক্রিয়া হবে।” তবে অভিভাবকদের সঙ্গে অনলাইনে কথা বলার তুলনায় মুখোমুখি বসে কথা বলাটা অনেকটাই সুবিধাজনক বলে তিনি মনে করছেন।
ভর্তি প্রক্রিয়া বাড়ি থেকে হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছেন অভিভাবকেরা। তবে কোভিডের কারণে মন্তেসরি স্কুলগুলি বন্ধ থাকায় ভর্তির জন্য সন্তানদের ভাল ভাবে তৈরি করাতে পারেননি বলে জানাচ্ছেন বেশ কিছু অভিভাবক। টালিগঞ্জ এলাকার এক অভিভাবক সুপ্রতিম দাস বলেন, “অনেক স্কুলে অনলাইনে ভর্তির ফর্ম তুলেছি। কিন্তু মন্তেসরি বন্ধ থাকায় ওর নতুন স্কুলে ভর্তির প্রস্তুতি সে ভাবে কিছুই হয়নি।” আর এক অভিভাবক অর্চনা রায় বলেন, “কোথায় কোন স্কুলে ভর্তির ফর্ম কবে থেকে দিচ্ছে, সেই সব খবর মন্তেসরি স্কুলের মাধ্যমেই জানা যেত। এ বার করোনার জন্য সেই সব খবর ভাল ভাবে জানতে পারছি না। কাজের ফাঁকে নিজেদেরই খোঁজখবরকরতে হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy