Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Murder

রিজেন্ট পার্কে বাড়ি ঢুকে ঘুমন্ত কলেজছাত্রীকে গুলি করে খুন, গ্রেফতার প্রাক্তন প্রেমিক

আততায়ী যাওয়ার সময় তাকে চিনতে পারেন নিহত তরুণীর বৃদ্ধা পিসি।

বাঁ দিকে অভিযুক্ত জয়ন্ত হালদার ও ডান দিকে নিহত প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েত।

বাঁ দিকে অভিযুক্ত জয়ন্ত হালদার ও ডান দিকে নিহত প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ১১:১৭
Share: Save:

রিজেন্ট পার্ক এ তরুণী হত্যার প্রধান অভিযুক্ত রাকেশ হালদার জয়ন্ত কে চন্ডিগড় মাদার ডেয়ারি বুথের সামনে থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এক মিনিট শনিবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। ডিসি দক্ষিণ-পূর্ব শহরতলি প্রদীপ যাদব জানিয়েছেন, জীত জয়ন্তর কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। ওই ওই দেশি বন্দুকটি দিয়েই প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েত কে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে জয়ন্ত।

ঘুমের মধ্যে বিছানাতেই গুলি করে খুন কার হয় প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েতকে। রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকার আনন্দপল্লিতে ঘটনাটি ঘটে। গুলির আওয়াজে ঘুম ভাঙে বাড়ির বাকি সদস্যদের। আততায়ী যখন পালিয়ে যাচ্ছে, তখন তাকে চিনতে পারেন তরুণীর বৃদ্ধা পিসি। মৃতা তরুণীর সঙ্গে আগে সম্পর্ক ছিল আততায়ী যুবকের। কিন্তু সম্প্রতি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন ওই তরুণী। সেই আক্রোশ থেকেই খুন বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা পুলিশের।

রিজেন্ট পার্ক থানার আনন্দপল্লির বাসিন্দা ২০ বছরের প্রিয়ঙ্কা পুরকায়েত। স্থানীয় ওমেনস ক্রিশ্চিয়ান কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। দুই পিসি এবং মায়ের সঙ্গে থাকতেন প্রিয়ঙ্কা। বাবা বছর দেড়েক আগে মারা গিয়েছেন। প্রিয়ঙ্কার মা রত্না বলেন, ‘‘আমি এবং আমার ছোট ননদ ভোর বেলা সবে কাজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। তখনই জানতে পারি মেয়েকে গুলি করেছে।” রত্না এবং তাঁর ছোট ননদ শশীবালা পরিচারিকার কাজ করেন। বাড়িতে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে ছিলেন তাঁর বড় পিসি, যিনি প্রায় চলচ্ছক্তিহীন।

গুলির আওয়াজ পান প্রতিবেশীরাও। তাঁরাও ছুটে আসেন। ঘরের মধ্যে বিছানাতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় প্রিয়ঙ্কার দেহ। তাঁর পিসির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন আততায়ী জয়ন্ত হালদার। পাশের পাড়ার বাসিন্দা জয়ন্তর সঙ্গে দীর্ঘ চার বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রিয়ঙ্কার। পুলিশকে প্রিয়ঙ্কার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, পেশায় গাড়িচালক জয়ন্ত বেশ কয়েক বার বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল প্রিয়ঙ্কাকে। কিন্তু পড়া শেষ না করে বিয়েতে রাজি হচ্ছিলেন না প্রিয়ঙ্কা। বিয়েতে রাজি না হওয়ার কারণে সম্পর্কের অবনতি ঘটে দু’জনের। বছর খানেক আগে বিয়েও করেন নেন জয়ন্ত। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পরও প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে একটা ক্ষীণ যোগাযোগ থেকে গিয়েছিল জয়ন্তের। স্ত্রীকে ছেড়ে প্রিয়ঙ্কাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও দেন জয়ন্ত। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি হননি প্রিয়ঙ্কা। তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই মনোমালিন্য চলছিল দু’জনের। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতি দিন ভোরে বাড়ির পিছনের দিকের দরজা খুলে কাজে চলে যেতেন রত্না এবং শশীবালা। বাইরে থেকে ভেজিয়ে রাখা হত পিছনের দিকের দরজা। সেই দরজা দিয়েই এ দিন ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ প্রিয়ঙ্কার ঘরে ঢোকে জয়ন্ত। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে প্রিয়ঙ্কার মাথায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় প্রিয়ঙ্কার। তাঁর পিসি অক্ষম হওয়ায় বাধা দিতে পারেননি আততায়ীকে।

আরও পড়ুন: আমপানে স্বজনহারার যন্ত্রণা নিয়েই চলছে একার লড়াই​

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, আগে থেকেই প্রিয়ঙ্কার বাড়ির উপর নজর রাখত জয়ন্ত। আততায়ী জানত যে বাড়ির পিছনের দিকের দরজা এই সময় খোলা থাকে। এটাও জানত যে, প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে থাকেন চলচ্ছক্তিহীন বৃদ্ধা পিসি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই এ দিন ঘরে ঢুকে গুলি চালায় জয়ন্ত।

আরও পড়ুন: কাশ্মীরে জঙ্গিদের অস্ত্র দিতে আসা পাকিস্তানি ড্রোন গুলি করে নামাল বিএসএফ

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Kolkata Regent Park
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy