Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পঞ্চসায়র-কাণ্ডে ধৃত এক অভিযুক্ত, নতুন তথ্যে রহস্য

এ দিকে, ঘটনার পাঁচ দিন পরে পুলিশ জানিয়েছে, গণধর্ষণের অভিযোগ করার আগের দিনই ওই মহিলাকে ঘিরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল নরেন্দ্রপুর থানায়।

পঞ্চসায়র হোমের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চসায়র হোমের ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:১৩
Share: Save:

পঞ্চসায়রে এক মহিলাকে গণধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে। তার নাম উত্তম রাম। শনিবার রাতে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার গঙ্গাজোয়ারা থেকে তাকে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, সে পেশায় ট্যাক্সিচালক।

এ দিকে, ঘটনার পাঁচ দিন পরে পুলিশ জানিয়েছে, গণধর্ষণের অভিযোগ করার আগের দিনই ওই মহিলাকে ঘিরে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল নরেন্দ্রপুর থানায়। এমনকি পুলিশের দাবি, তারা তাঁকে একটি হোমে রাখার ব্যবস্থাও করেছিল। তবে সেই হোম থেকে কী ভাবে মহিলা বেরিয়ে গেলেন, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি পুলিশের কাছে। সব মিলিয়ে এই নতুন তথ্য ঘিরেই তৈরি হয়েছে রহস্য।

বারুইপুর জেলা পুলিশের সুপার রশিদ মুনির খান জানান, পঞ্চসায়রের ‘সেবা ওল্ড এজ হোম’ থেকে সোমবার বেরিয়ে যাওয়ার পরে পাঁচপোতা এলাকা থেকে নরেন্দ্রপুর থানায় খবর আসে, এক মহিলা শ্লীলতাহানির অভিযোগ করছেন। দ্রুত পুলিশের গাড়ি গিয়ে মহিলাকে নরেন্দ্রপুর থানায় নিয়ে আসে। সেখানে মহিলা দাবি করেন, দু’জন যুবক তাঁর গায়ে হাত দিয়েছে। পুলিশ সুপারের কথায়, “থানা থেকে তখনই মহিলাকে সুভাষগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। নরেন্দ্রপুর থানা থেকেই তাঁকে একটি হোমে পাঠানো হয়।” তবে মহিলা সেখান থেকেও কোনও ভাবে বেরিয়ে যান। সোনারপুরের কয়েক জন তাঁকে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার টিকিট কেটে দেন। পরে পঞ্চসায়র থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হয়।

নরেন্দ্রপুর থানার নতুন তথ্য ঘিরে স্বভাবতই রহস্য তৈরি হয়েছে। এর আগে হোমের মালিক ও মহিলার দিদির বয়ানে নানা অসঙ্গতি থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, সব চেয়ে বেশি বিভ্রান্তি হয়েছে মহিলা কী পোশাক পরেছিলেন তা নিয়ে। যা তৈরি করে দিয়েছেন খোদ অভিযোগকারিণীর দিদি। মহিলার দিদি পুলিশকে একটি রক্তমাখা নাইটি দিয়ে জানান, সেটি পরেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গড়িয়াহাটে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছে তাঁর বোন ধর্ষিতা হয়েছেন বলে দাবি করেন। পুলিশ ওই নাইটিটি সিজ়ার তালিকায় রাখলেও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, তিনি একটি লাল রঙের গাউন পরে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই হোম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। তা হলে হলুদ নাইটি এল কোথা থেকে?

মহিলার দিদি এর পরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের মুখে জানান, তাঁর বোন জোর করছিলেন বলেই লাল রঙের ওই গাউন তিনি পুলিশকে দিতে পারেননি। আদতে বোন লাল রঙের গাউন পরেই তাঁদের আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন। তাঁর হাতে থাকা একটি প্লাস্টিকের মধ্যে হলুদ রঙের রক্তমাখা ওই নাইটিটি ছিল।

শনিবার মহিলার দিদি বলেন, ‘‘বোন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। ও যখন আমাদের আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছয়, তখন লাল গাউনই পরে ছিল। তবে পুলিশ যখন সেটা নিতে আসে, ও দিতে চাইছিল না। জোর করে আঁকড়ে ধরেছিল। তাই বাধ্য হয়েই ওই হলুদ পোশাকটা পুলিশকে দিয়ে দিই আমি। রক্ত থাকায় বোন সেটা রাখতে চায়নি।’’

লালবাজারের এক শীর্ষ কর্তা অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘সমস্ত সামগ্রীরই ফরেন্সিক পরীক্ষা করানো হচ্ছে। সন্দেহের বাইরে কেউ নেই। এ যাবৎকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা হতে চলেছে এটি। গ্রেফতারি হলেই গল্প নিশ্চিত হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Panchasayar Gang Rape Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy