অব্যবহৃত: বিমানবন্দরের পুরনো টার্মিনাল ভেঙে ফেলার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
কলকাতা থেকে সরাসরি দুবাই এবং দোহায় উড়ান চালাতে আগ্রহী একটি বেসরকারি বিমান সংস্থা। মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্সেও কলকাতা থেকে উড়ান চালাতে চায় তারা। শহর থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালাতে চায় আরও বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা। কিন্তু ভিড়ে হাসফাঁস কলকাতা বিমানবন্দর থেকে নতুন আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোর অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না।
এই সমস্যার সমাধানে টার্মিনাল বিল্ডিংয়ের পরিধি বাড়াতে চাইছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সে কারণে অব্যবহৃত পড়ে থাকা পুরনো অন্তর্দেশীয় টার্মিনাল বিল্ডিং ভেঙে সেই পর্যন্ত বর্তমান টার্মিনাল বাড়াতে চান তাঁরা। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘এটি প্রথম পরিকল্পনা। দ্বিতীয় পর্যায়ে বর্তমান এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ভবনকে ভেঙে সেই পর্যন্ত সম্প্রসারণ হবে টার্মিনাল। তৃতীয় পর্যায়ে পুরনো আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভেঙে ফেলা হবে।’’
এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক উড়ান বাড়ানোর পথে আরও একটি বড় অন্তরায় হল লোকাভাব। কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রে অভিবাসন দফতরকে প্রয়োজন। তাদের কাছে লোকবল বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তা ছাড়া, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ-কেও লোকবল বাড়াতে হবে বলে অধিকর্তা জানিয়েছেন।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, উড়ান বাড়ানোর জন্য দরকার আরও বেশি পার্কিং বে। আপাতত এরোব্রিজ নিয়ে কলকাতায় পার্কিং বে-র সংখ্যা ৬৫। তার মধ্যে অনেকগুলিই রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বন্ধ আছে। কলকাতা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালাতে গেলে রাতে কলকাতায় বিমান রাখতে হবে উড়ান সংস্থাকে। তার জন্য যে অতিরিক্ত বে দরকার, তা হাতে নেই। কৌশিকবাবু জানিয়েছেন, পুরনো অন্তর্দেশীয় টার্মিনাল ভেঙে যে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত ১০টি এরোব্রিজ লাগানো হবে। এই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ানো হবে পার্কিং বে-র সংখ্যাও।
এখন দিনে গড়ে ৩৬ হাজার যাত্রী কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করছেন। ছুটির মরসুমে কোনও কোনও দিন সেই সংখ্যা ৩৭ হাজার ছুঁয়েছে। তার মধ্যে ছ’-সাত হাজার আন্তর্জাতিক যাত্রী। যাতায়াত মিলিয়ে উড়ান সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৮০।
অভ্যন্তরীণ (ডোমেস্টিক) যাত্রীদের জন্য এরোব্রিজ রয়েছে ১০টি। ফলে সব বিমানকে এরোব্রিজের সুবিধা দেওয়া যায় না। পার্কিং বে-তে বিমান দাঁড় করিয়ে সেখান থেকে যাত্রীদের ওঠানো-নামানো করা হয়। সেই পার্কিং বে-তে যেতে গেলে টার্মিনালের একতলায় বাস-গেট দিয়ে যাত্রীরা বাসে ওঠেন। এখন কলকাতায় ৬টি এমন বাস-গেট রয়েছে।
উড়ান সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘ভোরে যখন কলকাতা থেকে একের পর এক উড়ান ছেড়ে যায়, তখন ওই বাস-গেটের কাছে গেলে দেখতে পাবেন, এক-একটি গেট দিয়ে কখনও দু’টি, কখনও তিনটি উড়ানের যাত্রীদের বাসে তোলা হচ্ছে। ছোট পরিসরের মধ্যে কয়েকশো যাত্রী ঠেলাঠেলি করছেন। বসার পর্যাপ্ত জায়গা নেই।’’ বিমানবন্দর অধিকর্তা জানিয়েছেন, সামনের মাসের মধ্যে দু’টি বাস-গেট বাড়ানো হচ্ছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কর্তাদের মতে, কলকাতায় উড়ান ও যাত্রী সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, আগামী দিনে সমস্যা আরও বাড়বে। তাই পরিকাঠামো না-বাড়িয়ে নতুন উড়ানের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমান বিমানবন্দরের কাছেই আরও একটি বিকল্প বিমানবন্দর তৈরির জন্য আর্জি জানিয়েছে দিল্লি। কিন্তু, এখনও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সে রকম কোনও জমি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy