Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

বেহালায় ১৫ ঘণ্টা পর করোনায় মৃতের দেহ সরাতে উদ্যোগী প্রশাসন

রবিবার রাত ১২টা নাগাদ তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৬২ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির। রাতেই তিনি মারা যান।

বেহালার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

বেহালার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে মৃতের দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ১৪:৫৩
Share: Save:

রবিবার মধ্যরাত থেকে করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ পড়ে ছিল বাড়িতেই। প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর অবশেষে মৃতদেহ সরাতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। পৌঁছল শববাহী গাড়িও। তার আগে স্থানীয় থানা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দফতর, এমনকি প্রাক্তন কাউন্সিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, কোনও সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। দীর্ঘক্ষণ ঘরে করোনা আক্রান্তের দেহ পড়ে থাকায় বেহালার সাহাপুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

রবিবার রাত ১২টা নাগাদ তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৬২ বছর বয়সি ওই ব্যক্তির। রাতেই তিনি মারা যান। অভিযোগ, রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলা হয়েছিল। রবিবার রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কিন্তু সেই সময় প্রাক্তন কাউন্সিলরকে বলেও কোনও কাজ হয়নি। ফোন করা হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরেও।

রাতে তিনি মারা গেলেও, এখনও দেহ সরানো হয়নি। বাকি তিন সদস্য বাড়িতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন। ১২ ঘণ্টা পরও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য না মেলায় ক্ষোভ উগরে দেন পরিবারের সদস্যরা। ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর জানিয়েছেন, দেহ সৎকারের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

যদিও পরিবারের এক সদস্য প্রশাসনিক কোনও সাহায্য না পাওয়ায়, তিনি কোয়রান্টিনের নিয়ম ভেঙেই দেহ কী ভাবে সৎকার করা যায়, তারই চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। মৃতদেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে পড়ে থাকার বিষয়টি জানতে পেরে, রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় পুলিশ এবং পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দ্রুত দেহ সরানোর বিষয়ে নির্দেশ দেন। এর পাশাপাশি দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়ও এ বিষয়ে উদ্যোগী হন। পুরসভার তরফে যাতে সসম্মানে সৎকার করা হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

ওই ব্যক্তির মৃতদেহ নিয়ে যেতে বেহালা থানার পুলিশ পৌঁছয় বেলা এটা নাগাদ। এর পর পুরসভার গাড়ি এ দিন পৌঁছয় বেলা তিনটে নাগাদ। পিপিই কিট পরে আসেন শববাহী গাড়ি নিয়ে। আইসিএমআর-এর নিয়ম মেনেই দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বাড়িতে আরও দু’ সদস্য করোনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বহুতলের নীচে বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ, অবসাদে আত্মঘাতী, বলছেন পরিজনেরা

আরও পড়ুন: হৃদ্‌রোগে মৃত্যু, তবু ভয়ে দূরেই পরিজনেরা

করোনা আক্রান্ত বা সন্দেহে চিহ্নিত হলেও তাঁদের অনেকের প্রতি আমানবিক আচরণের ছবি ছবি ফুটে উঠছে। অনেক সময় প্রশাসনিক গাফিলতিরও অভিযোগ করছেন পরিবারের সদস্যরা। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে এক বৃদ্ধকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে নিয়ে যাওয়ার লোক মেলেনি। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের ওয়ার্ডের দরজার ঠিক বাইরেই দাঁড়িয়ে ছিল তাঁর অ্যাম্বুল্যান্স। অবশেষে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কলকাতার শ্যামপুকুর থানা এলাকাতেও একই রকম ঘটনা ঘটে। ওই এলাকার বৃন্দাবন পাল লেনের ঘটনায় বছর সত্তরের এক বৃদ্ধার বাড়িতেই মারা যান। করোনা সন্দেহে কেউ সাহায্য করতে আসেনি। এমনকি পরিজনেরাও নয়। ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর পুলিশের সাহায্যে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy