এই বারান্দা থেকেই নীচে নামার চেষ্টা করেছিলেন বৃদ্ধ। নিজস্ব চিত্র।
কাপড়, ধুতিতে গিঁট দিয়ে লম্বা দড়ির মতো বানিয়ে তার সাহায্যেই বহুতলের চারতলার বারান্দা থেকে নীচে নামার চেষ্টা করেছিলেন এক বৃদ্ধ। বারান্দা থেকে তাঁকে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে দেখে চিৎকার শুরু করেন স্থানীয়েরা। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টাও করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। তার আগেই হাত পিছলে নীচে পড়ে যান তিনি। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই বৃদ্ধকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
বুধবার সকালে, রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার হাজরা রোডের একটি বহুতলে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধের নাম নাগিনদাস মোহনলাল জাভেরি (৮৭)। তিনি ওই আবাসনের চারতলার একটি ফ্ল্যাটে ছেলে এবং পুত্রবধূর সঙ্গে থাকতেন। তাঁর তিন মেয়ের এক জন আমেরিকা বাকি দু’জন আমদাবাদে থাকেন।
পুলিশ জানায়, ওই বৃদ্ধের ছেলে-পুত্রবধূ দু’জনেই বর্তমানে সংক্রমিত হয়ে বাড়িতেই কোয়রান্টিনে রয়েছেন। কিন্তু বৃদ্ধ কোনও ভাবেই বাড়িতে থাকতে চাইতেন না। এ দিকে তাঁদের মাধ্যমে যাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, তাই ওই বৃদ্ধকে বাইরে বেরোতে দিতে চাইতেন না তাঁর ছেলে। পুলিশের দাবি, ঘটনার পরে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ওই কথাই জানান।
জানা গিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটের একটি ঘরে স্বামী-স্ত্রী থাকতেন এবং অন্য দিকের ঘরে থাকতেন বৃদ্ধ। এ দিন ঘটনার সময়ে ফ্ল্যাটের মূল দরজা বন্ধ ছিল। তাই ওই বৃদ্ধ নিজের ঘরের দিকের বারান্দা দিয়ে নীচে নামার চেষ্টা করছিলেন বলে অনুমান পুলিশের। আর সেই চেষ্টা করতে গিয়েই পড়ে যান তিনি। পড়ে যাওয়ার সময়ে বারান্দার নীচে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গাড়িতে ওই বৃদ্ধের মাথায় আঘাত লাগে।
যে শাড়ি-ধুতিতে গিঁট দিয়ে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে ওই বৃদ্ধ নামার চেষ্টা করেছিলেন, তা উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পরে বৃদ্ধকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিকটবর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
ওই আবাসনের নীচে একটি গাড়ির দোকান রয়েছে। সেখানকার কয়েক জন কর্মী জানান, তাঁরা সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ওই বৃদ্ধকে বারান্দা থেকে নামার চেষ্টা করতে দেখেন। স্থানীয়েরা তা দেখে চিৎকার শুরু করেন। কেউ কেউ একতলায় গিয়ে তাঁকে ধরার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। বৃদ্ধ নিজেও বার বার বলছিলেন যে, তাঁকে যেন নীচে নামতে দেওয়া হয়।
ওই বৃদ্ধের ছেলে পুলিশকে জানিয়েছেন যে, এ দিন সকালে তাঁর বাবা এক বার বাইরে বেরিয়েছিলেন। তিনি ফিরে আসার পরে ফ্ল্যাটের মূল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরাও পুলিশকে জানিয়েছেন,
এ দিন সকালে ওই বৃদ্ধ একাই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ল্যান্সডাউন গিয়েছিলেন। ফিরে আসার কিছু ক্ষণ পরেই ওই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, মৃত বৃদ্ধের ছেলে করোনা-আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর মেয়েদের খবর দেওয়া হয়েছে। তবে এ দিন রাত পর্যন্ত পরিবারের তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। এক পুলিশকর্তা জানান,
ওই বৃদ্ধ ঘরবন্দি থাকতে চাইতেন না বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া বাইরে বেরোলেও তিনি মাস্ক ব্যবহার করতেন না। অবস্থা স্বাভাবিক হলে ওই বৃদ্ধের ছেলের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy