ছ’মাস আগে এক পড়শির শেষকৃত্যের সময়ে শ্মশানে শেষ বার দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ছ’মাস বাদে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে সেই বৃদ্ধকে অনেক দূরের কলকাতার ফুটপাথে খুঁজে পেলেন পরিজনেরা। মঙ্গলবার দুপুরে এই পুনর্মিলনের সাক্ষী থাকল চিংড়িঘাটা মোড়। বৃদ্ধকে দেখতে পেয়ে যাঁরা ছলছল চোখে প্রায় ছুটে গেলেন, তাঁরা সম্পর্কে ভাই ও ভ্রাতৃবধূ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোদাখালি গ্রামে তাঁদের হতদরিদ্র সংসারে থাকতেন বিপদভঞ্জন হালদার নামে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই বৃদ্ধ।
গত ৮ মার্চ রাতে বৃদ্ধ নিখোঁজ হওয়ার পরে পরেও পুলিশে খবর দেওয়া থেকে শুরু করে, নানা ভাবে খোঁজাখুঁজি চালিয়ে গিয়েছেন ভাই বরুণ ও ভ্রাতৃবধূ ঝর্না। বরুণবাবু জানান, সোমবার পাড়ার এক যুবক জানান, কলকাতার চিংড়িঘাটায় বিপদভঞ্জনবাবুর মতো কাউকে দেখতে পেয়েছেন তিনি। তাঁর খোঁজে মঙ্গলবার সকালেই বেরিয়ে পড়েন ওই দম্পতি। চিংড়িঘাটায় ঘুরে ঘুরে সকলকে দাদার ছবি দেখাতে থাকেন তাঁরা। শেষমেশ ওই রাস্তায় কতর্ব্যরত বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট শেখ নাজমুল হোসেন জানান, ওই ব্যক্তি কয়েক দিন ধরে চিংড়িঘাটার ফুটপাথে রয়েছেন। তিনিই ওই দম্পতিকে নিয়ে যান বৃদ্ধের কাছে। পরে পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরি, ছবি-সহ সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁদের হাতে তুলে দেন বিপদভঞ্জনবাবুকে।
কী করে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি? বিপদভঞ্জনবাবু বলেন, “শ্মশান থেকে বাড়ির পথ খুঁজেই পাচ্ছিলাম না। কী ভাবে যেন হাঁটতে হাঁটতে এখানে চলে এসেছি।” বাড়ি ফেরার জন্য তখন আর তর সইছিল না বৃদ্ধের। তাঁকে নিয়ে বাসে ওঠার আগে নাজমুলের হাত ধরে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়ে যান বরুণ ও ঝর্না। বললেন, “আপনাদের মতো পুলিশেরা আছেন বলেই আমরা এখনও বেঁচে আছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy