ফাইল চিত্র
জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের যাতায়াত নিয়ে অল্প-বিস্তর সমস্যা আগেই চোখে পড়ছিল। কিন্তু বুধবার সীমিত সংখ্যক কর্মী নিয়ে বেসরকারি অফিস চালু হওয়ার প্রথম দিনেই যাতায়াত নিয়ে দুর্ভোগের ছবি ফুটে উঠল পথেঘাটে। ব্যক্তিগত গাড়ি যাঁদের নেই, সেই সব যাত্রীরা কর্মস্থলে পৌঁছতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়লেন। অধিকাংশকেই প্রচুর টাকা খরচ করে পৌঁছতে হল। বেসরকারি অফিস, শপিং মলের কর্মী, রেস্তরাঁর ম্যানেজার থেকে শুরু করে সাধারণ দোকানিরাও রইলেন সেই তালিকায়। জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা ট্রেন বা মেট্রোয় ওঠার সুযোগ পাওয়ায় তাঁদের সমস্যা কিছুটা কম। যদিও ট্রেন বা মেট্রো স্টেশনে পৌঁছতে কিছু ক্ষেত্রে তাঁদেরও সমস্যা হয়েছে।
বাস, ট্রেন, মেট্রো এবং অটোর অনুপস্থিতিতে এ দিন বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের যাতায়াতের ভরসা ছিল মূলত শাটল ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাব এবং বাইক-ট্যাক্সি। সব ক্ষেত্রেই ভাড়ার হার চড়া থেকেছে। রসিকতা করে অনেকে সমাজমাধ্যমে ভূতের রাজার দেওয়া জুতোরও খোঁজ করেছেন! বারুইপুরের বাসিন্দা তন্ময় ভৌমিক শেক্সপিয়র সরণিতে একটি পর্যটন সংস্থায় কাজ করেন। এত দিন বাড়ি থেকে অফিস করলেও এখন ট্রেন এবং বিমানের টিকিটের চাহিদা বাড়তে থাকায় তাঁকে অফিসে আসতে হচ্ছে। কিন্তু ট্রেন এবং মেট্রোয় যাতায়াতের সুবিধা পাচ্ছেন না তন্ময়। তাঁর কথায়, ‘‘শাটল ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব মিলিয়ে শুধু অফিস আসতেই ৩৭০ টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। ফেরার সময়ে কত খরচ হবে, জানি না। সপ্তাহে দু’দিন এ ভাবে অফিস করতে হলে সারা মাসের যাতায়াতের খরচ বেরিয়ে যাবে।’’
বেহালার বাসিন্দা আঁখি রায় গড়িয়াহাট এলাকার একটি শপিং মলের কর্মী। এ দিন থেকে কাজে যোগ দিতে হয়েছে তাঁকেও। আঁখির কথায়, ‘‘বাইক-ট্যাক্সিতে ১৬০ টাকা দিয়ে এসেছি। ফেরার সময়ে কী হবে, জানি না।’’ সিঁথি থেকে ধর্মতলা আসার সময়ে প্রায় একই অভিজ্ঞতা হয়েছে একটি পোশাক বিপণির কর্মী সুজয় বসাকের। শাটল ট্যাক্সিতে প্রায় ২০০ টাকা ভাড়া গুনতে হয়েছে তাঁকে। মুজিব আখতার ইএম বাইপাস সংলগ্ন একটি রেস্তরাঁর কর্মী। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে কাজের জায়গায় পৌঁছতে তাঁকেও খরচ করতে হয়েছে ১৪০ টাকা। মুজিবের কথায়, ‘‘অফিস আসতেই এত খরচ হলে বাড়িতে কতটুকু টাকা নিয়ে যাব? এমনিতেই গত তিন মাস ব্যবসা বন্ধ।’’
যাত্রী-দুর্ভোগের এমন ছবি এ দিন দেখা গিয়েছে কামালগাজি, রবীন্দ্র সদন, সাঁতরাগাছি, ডানলপ, উল্টোডাঙা, বাগুইআটি, বিমানবন্দর-সহ বিভিন্ন জায়গায়। ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছেন বেসরকারি গাড়ি এবং হলুদ ট্যাক্সির চালকেরাও। প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুণ পর্যন্ত ভাড়া হেঁকেছেন তাঁরা।
অনেকেই মনে করছেন, আগামী দু’সপ্তাহে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। এই অবস্থায় গণপরিবহণ না থাকলে তাঁরা কাজের জায়গায় পৌঁছতে নাকাল হবেন। শীঘ্রই দূরপাল্লার একাধিক এক্সপ্রেস চালু করছে রেল। ফলে ধীরে ধীরে হাওড়া, শিয়ালদহ, কলকাতা, সাঁতরাগাছি, শালিমারের মতো স্টেশন থেকেও যাত্রীদের চাপ বাড়বে। এই অবস্থায় অনেকেরই মত, যাত্রীদের চাপ সামলাতে সমানুপাতিক হারে গণপরিবহণও চালু করা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy